নীলফামারীতে টিউবয়েল চুরি নিয়ে আইনশৃংঙ্খলা সভায় অভিযোগ
নীলফামারী প্রতিনিধি॥ নীলফামারীতে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে টিউবয়েলের হেড (হাতল সহ মাথা) চুরি হচ্ছে। মাদকাসক্তদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। থানায় অভিযোগ দিতে গেলে ওসি মামলা নেন না। মাদকাসক্তরা ওই সকল চুরির সাথে জড়িত। আজ রবিবার(১০ এপ্রিল) সকাল সারে ১০টার দিকে নীলফামারী জেলা প্রশাসককের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলার আইনশৃংঙ্খলা মাসিক সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে এভাবে অভিযোগ তুলে ধরেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা কান্তিভুষণ কুন্ডু। এর জবাবে সভায় উপস্থিত পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো. সাইফুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, দেশের মানুষের মানষিকতা কোথায় গিয়ে পৌছেছে, আজ তারা কপালের টিপ নিয়ে হৈ চৈ করে। আর চুরি তো বাড়তেই পারে। দিন দিন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্যের উর্ধ্বগতির কারনে টিউবয়েলের হেড চুরি হতেই পারে।
তাৎক্ষনিক ভাবে এই কথার প্রতিবাদ করে ওঠেন ওই বীরমুক্তিযোদ্ধাসহ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ, সৈয়দপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. শাহিন আলম। ধীরে ধীরে সভায় উপস্থিত অন্যান্য সদস্যরাও প্রতিবাদী হয়ে উঠেন। তারা ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্যেশ্য করে বলেন, আপনি সরকারের পুলিশ বাহিনীর একজন দায়িত্বপূর্ণ কর্মকর্তা হিসেবে এমন ব্যাখ্যা দিতে পারেন না। যা বললেন তা সঠিক না। আমরা আপনার এমন ব্যাখ্যা মেনে নিতে পারি না। এক পর্যায়ে তিনি তার ওই বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চান।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীনের সভাপতিত্বে ওই সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মীর্জা মুরাদ হাসান বেগ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ, জলঢাকা পৌর মেয়র ইলিয়াছ হোসেন, ডিমলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা তবিবুল ইসলাম, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ, সাবেক যুগ্মসচিব বীরমুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম, রেলওয়ে পুলিশের সার্কেল কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন নাহার, ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা শবনম, ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন কিশোরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর ই আলম সিদ্দিকী প্রমুখ।
সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ বলেন, একজন দ্বায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে তিনি এ ধরনের বক্তব্য দিতে পারেন না। দ্রব্য মুল্য বৃদ্ধির বিষয়ে উনি বলতে পারেন না, মাদকের সঙ্গে দ্রব্য মুল্য বৃদ্ধির সম্পর্ক নেই। তিনি নিজের দায় এড়াতে সরকারের ঘারে দোষ চাপাচ্ছেন। ওই কর্মকর্তাকে নিয়ে আমাদের সন্দেহ তিনি সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করছেন, না কি অন্য কারো এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ও রকম কোনো কথা হয় নাই, মানুষের নৈতিকতার স্খলনের কথা হয়েছে। দ্রব্য মুল্যের বিষয়ে কোনো কথা বলিনি। আমি বলেছি রডের দাম বৃদ্ধির কথা। রডের দাম বৃদ্ধির কারনে টিউবয়েলের হেড চুরি যাওয়ার কথা বলেছি।
এ বিষয়ে কথা বললে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান বলেন, আমি ওই সভায় উপস্থিত ছিলাম না। এ কারনে এই মুহুর্তে না জেনে কিছু বলতে পারবো না। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, সব জিনিস পত্রের দাম বেশি এটা ঠিক না, বিতর্ক সৃস্টি করে এমন কোনো কথা সরকারি পর্যায়ে থেকে অফিসিয়ালী না বলাই ভালো। যদিও পরে উনি তার ওই বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। #