এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু
অনলাইন ডেস্ক
করোনা মহামারির কারণে ১৮ মাস পর শুরু হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এবার সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে শুধু তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রথম দিন নেওয়া হবে পদার্থ বিজ্ঞান পরীক্ষা। এবারে পরীক্ষার সময়ও কমিয়ে আনা হয়েছে দেড় ঘণ্টায়।
আজ রবিবার সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত প্রথম দিনের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সারাদেশের প্রায় সোয়া ২২ লাখ শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা আয়োজনের জন্য এরই মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি বেঞ্চে দুজন করে পরীক্ষার্থী বসানো হবে।
শিক্ষার্থীদের হাত জীবাণুমুক্ত করে এবং তাপমাত্রা মেপে কেন্দ্রে প্রবেশ করানো হবে। কোনো শিক্ষার্থীর শরীরের তাপমাত্রা বেশি হলে এবং করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকলে তাকে আলাদা রুমে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। সেজন্য আইসোলেশন রুমও প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া কেন্দ্র এলাকায় অভিভাবকদের বাড়তি চাপও নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
এবারে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেবে। গতবছর মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৯ জন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ৩ হাজার ৬৭৯টি কেন্দ্রে মোট ২৯ হাজার ৩৫টি স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানের ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন পরীক্ষার্থী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। ৯টি সাধারণ বোর্ড থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন ১৭ হাজার ৬৭৬টি স্কুলের ১৮ লাখ ৯৯৮ জন শিক্ষার্থী।
৯ হাজার ১১০টি মাদরাসার ৩ লাখ ১ হাজার ৮৮৭জন পরীক্ষার্থী ৭১০টি কেন্দ্রে দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষায় অংশ নেবে ২ হাজার ৩৪৯টি কারিগরি প্রতিষ্ঠানের ১ লাখ ২৪ হাজার ২২৮ জন শিক্ষার্থী।
১৪ নভেম্বর থেকে পরীক্ষা চলবে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রথম দিন পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর পর ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা এবং বিকেলে হিসাববিজ্ঞান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
১৬ নভেম্বর সকালে রসায়ন এবং ১৮ নভেম্বর সকালে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ২১ নভেম্বর সকালে ভূগোল ও পরিবেশ এবং বিকেলে ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
২২ নভেম্বর সকালে উচ্চতর গণিত ও জীববিজ্ঞান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ২৩ নভেম্বর সকালে পৌরণীতি ও নাগরিকতা বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আর বিকেলে ব্যবসায় উদ্যোগ বিষয়ের পরীক্ষা হবে।
এবারে পরীক্ষার্থীর সঙ্গে একজনের বেশি অভিভাবক কেন্দ্রে আসতে পারবেন না বলে নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে সব পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করে আসন গ্রহণ করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থী নির্ধারিত সময়ের পর পরীক্ষা কেন্দ্রে আসলে রেজিস্টারে নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময় ও বিলম্বের কারণ উল্লেখ করতে হবে।
এদিকে পরীক্ষার জন্য অতিরিক্ত সময় পাবেন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীরা। দৃষ্টিহীন, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধকতা ও হাত না থাকা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীরা শ্রুতি লেখক সঙ্গে নিয়ে চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এ ধরনের পরীক্ষার্থীদের ও শ্রবণ প্রতিবন্ধকতায় আক্রান্ত বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ১০ মিনিট সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।
কেন্দ্র সচিব ছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রে অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা মোবাইল ফোনের সুবিধাসহ ঘড়ি, কলম বা অননুমোদিত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না।
প্রত্যেক কেন্দ্রের জন্য একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা ট্যাগ অফিসার নিয়োগ দিতে হবে। ট্রেজারি বা থানা বা নিরাপত্তা হেফাজত থেকে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা তাঁর মনোনীত উপযুক্ত প্রতিনিধি ট্যাগ অফিসারসহ প্রশ্নপত্র গ্রহণ করে পুলিশ প্রহরায় কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতি ছাড়া প্রশ্ন বের করা যাবে না বা বহন করা যাবে না।
সাধারণত ফেব্রুয়ারি মাসে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হলেও, করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে এবারে প্রায় দেড় বছর পর নভেম্বরে পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।