রফতানি পণ্যের উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর


অনলাইন ডেস্ক







রফতানি বাড়াতে নতুন নতুন পণ্য উৎপাদনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

তিনি বলেন, ‘নতুন নতুন আরও কী কী পণ্য আমরা উৎপাদন করতে পারি এবং রফতানি করতে পারি সে বিষয়ে গবেষণা করে বের করতে হবে। কোন কোন দেশে কী কী পণ্যের চাহিদা রয়েছে সেটা অনুধাবন করে সেই পণ্য যেন আমরা উৎপাদন করতে পারি সেটাও বিবেচনা করতে হবে।’


 আজ মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ ‘ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট’ এর উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। 

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এই সামিটে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন।

তিনি বলেন, আমি আশা করি এ সম্মেলনের মাধ্যমে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্যে দেশি-বিদেশি শিল্পোক্তাতা, ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে এসব খাতের সম্ভাবনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন এবং বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের নব নব দ্বার উন্মোচিত হবে, রফতানি বৃদ্ধি পাবে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার প্রণীত ব্যবসা-বাণিজ্যবান্ধব বিভিন্ন আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে উৎপাদন বেড়েছে। কর্মী-শ্রমিকদের স্বার্থ সুরক্ষিত হচ্ছে। করোনাতে যেখানে অনেক কিছু বন্ধ ছিল, সেখানে ডিজিটাল বাংলাদেশের কারণেই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল ছিল। নতুন নতুন আর কী পণ্য আমরা উৎপাদন করতে পারি এবং আমরা রফতানি করতে পারি সেটাও গবেষণা করে বের করতে হবে। সেদিকেও আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে এবং কোন কোন দেশে কী কী পণ্যের চাহিদা রয়েছে, সেটা অনুধাবন করে সেই পণ্য আমরা বাংলাদেশে উৎপাদন করতে পারি কিনা তাও বিবেচনা করতে হবে। 

শেখ হাসিনা বলেন, দেশে পিপিপির আওতায় এখন সাড়ে ৩ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের ৭৯টি প্রকল্পের কাজ চলছে। পাশাপাশি ব্যবসার সহজ পরিবেশ নিশ্চিত করাসহ, ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করার কাজও অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের যাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে বিশেষ করে বেসরকারি খাত, আমি তাদের অনুরোধ করব, এই বিষয়টার দিকে আপনারা বিশেষভাবে দৃষ্টি দেবেন। কারণ আমাদের রফতানি পণ্যের সংখ্যা আরও বাড়ানো প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। কারণ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের চাহিদা থাকে। বাংলাদেশ এমন একটা দেশ আমরা ইচ্ছা করলে পারি, সব কিছুই করতে পারি। এই আত্মবিশ্বাস আমার আছে, যেটা জাতির পিতা বলে গেছেন।

সরকারপ্রধান বলেন, আবহাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তনে বিশ্বব্যাপী আজকে যে ক্ষতি হচ্ছে বাংলাদেশ যাতে তার থেকে মুক্তি পায় সেদিকে লক্ষ্য রেখেও আমরা আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি, সেই শুরু থেকেই। কাজেই আমরা বিশ্বে প্রথম শতবর্ষের বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ বাস্তবায়ন শুরু করেছি। কারণ বাংলাদেশ একটা ব-দ্বীপ আমাদের আগামী প্রজন্ম তারা যেন অর্থাৎ প্রজন্মের পর প্রজন্ম তারা যেন একটা সুন্দর জীবন পায়। নিরাপদ জীবন পায়, সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে, উন্নত জীবন পায় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা এই ব-দ্বীপটাকে উন্নত করার পরিকল্পনা নিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আগামী প্রজন্ম পাবে জাতির পিতার স্বপ্নের আত্মমর্যাদাশীল, উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অনেক পণ্য রয়েছে আমরা ইতোমধ্যে রফতানি করছি। সাত দিনব্যাপী এই সম্মেলনে আমাদের দেশের নয়টি খাত, যেমন- অবকাঠামো, তথ্য-প্রযুক্তি, চামড়া, ওষুধ, স্বয়ংক্রিয় ক্ষুদ্র প্রকৌশল, কৃষি পণ্য, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত, পাট বস্ত্র ও শিল্পসহ অতিচাহিদা সম্পন্ন ভোগ্য পণ্যসহ ক্ষুদ্র ব্যবসাকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে। যা আমি মনে করি অত্যন্ত সময় উপযোগী।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বিভিন্নভাবে সুযোগ সৃষ্টি করছি। কারণ বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থানটা কিন্তু বিবেচনা করলে যারা বিনিয়োগ করতে আসবেন তারা শুধু বাংলাদেশ পাবেন না, দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে তাদের একটা সুযোগ থাকবে; এই বাজারগুলো ধরার এবং রফতানি করার। বাংলাদেশ থেকে সারা প্রাচ্য-পাশ্চাত্য একটা ব্রিজ হিসেবে গড়ে উঠবে ভবিষ্যতে। যেটা আমাদের দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের আরও প্রসার ঘটতে আরও সহায়তা করবে।

তিনি বলেন, আমরা কাজ করে যাচ্ছি দেশের উন্নয়নের জন্য। যদিও আমাদের অগ্রগতিটা থেমে গেল। যদি মহামারিটা না হতো করোনা যদি না হতো তাহলে হয়তো আমরা আরো অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারতাম। করোনা মহামারি মোকাবিলার জন্য, আমার দেশের মানুষের যাতে কষ্ট না হয় বা আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য যাতে থমকে না যায়, সেজন্য আমরা প্রায় এক লাখ সাতাশি হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা দিয়েছি। এমনকি যাতে তারা ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে রাখতে পারেন আবার মানুষও যেন না খেয়ে কষ্ট না পায় সেদিকে আমরা লক্ষ্য রেখেছি। এখন আমরা টিকা দেওয়াও শুরু করেছি। কাজেই মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া এটা আমাদের কর্তব্য।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি, শুধু তাৎক্ষণিক কী করা সেটা না। কারণ সরকার গঠনের পর থেকেই আমাদের ছিল যে আমাদের আশু করণীয় কী, মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। সেভাবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি বলেই আজকে আমাদের এ সাফল্য আসতে সক্ষম হয়েছে। আমরা প্রেক্ষিত পরিকল্পনা রূপকল্প-২০২১ প্রণয়ন করেছিলাম ২০১০ থেকে ২০২১। আর এখন আমরা করেছি রূপকল্প-২০৪১ অর্থাৎ ২০২১ থেকে ২০৪১ সালের বাংলাদেশ কেমন হবে? কীভাবে আমরা উন্নত করব। এরই ভিত্তিতে আমরা পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ন করে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি আমাদের দেশকে।

তিনি বলেন, সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আমরা একটা আঞ্চলিক বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তুলছি। যাতে আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোও সেটা ব্যবহারে সক্ষম হয়। আমাদের চট্টগ্রাম পোর্টকে আমরা উন্নত করছি, মোংলা পোর্ট এবং নতুন একটা পোর্ট করেছি পায়রা পোর্ট। সেটাও গভীর সমুদ্র বন্দর হিসেবে ভবিষ্যতে গড়ে উঠবে।

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 8890112704658811895

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item