নীলফামারীতে গরম ছ্যাকা ও মারপিটে স্ত্রী হত্যার রায়ে স্বামীর মৃত্যুদন্ড
নির্ণয়,নীলফামারী॥ নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাঁপানী ইউনিয়নের দক্ষিন সোনাখুলী গ্রামে ৫০ হাজার যৌতুকের জন্য স্ত্রী সুমী আক্তারকে মারপিট, আগুনের গরম ছ্যাকা ও শ্বাস রোধ করে হত্যার দায়ে স্বামী আলমগীর হোসেনকে(২৮) ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া দন্ডিত আসামির ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ডও করেছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার(২১ সেপ্টেম্বর/২০২১) দুপুরে দিকে নীলফামারীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-২এর বিচারক মোঃ মাহবুবুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামীর পরিবারের অপর ৬ সদস্য যথাক্রমে বাবা সিরাজুল ইসলাম, মা আনোয়ারা বেগম, বোন শিল্পি বেগম, চাচা ওবায়দুর রহমান, জিয়াউর রহমান জিয়া ও ফুফু রোকসানা বেগমকে খালাস দেওয়া হয়েছে। রায়ের সময় সকল আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
ফাঁসির রায় ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উক্ত আদালতের সরকারি কৌশলী এ্যাডঃ রমেন্দ্র বর্ধন বাপী বলেন বাদীপক্ষ এই রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে।
মামলার বাদী সুমীর বাবা এজাহারে উল্লেখ করে, ২০১৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর প্রেমের সর্ম্পকে ইজিবাইক চালক আলমগীর হোসেন নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে করে একই ইউনিয়নের উত্তর সোনাখুলী গ্রামের খতিবর রহমানের মেয়ে সুমী আক্তারকে। এর পরদিন উভয় পরিবার ঘটনাটি মিমাংসা করে পারিবারিক সিদ্ধান্তে আনুষ্ঠানিকভাবে পুনরায় বিয়ের আয়োজন করেছিল। ওই সময় সুমীর বাবা জামাতা আলমগীরকে নগদ এক লাখ টাকা প্রদান করে। মামলায় আরও বলা হয়, বিয়ের দুই বছর পর জামাতা আলমগীর ইজিবাইকের ব্যাটারী ক্রয় করার জন্য আরও ৫০ হাজার টাকা যৌতুক হিসাবে দাবি করলে ওই টাকা প্রদানে সুমী ও সুমীর বাবা অপারগত প্রকাশ করে। ওই টাকা না দেওয়ার কারনে ক্ষিপ্ত হয়ে ২০১৬ সালের ৬ নবেম্বর রাতে ঘরের ভেতর স্ত্রী সুমী আক্তারকে দঁড়ি দিয়ে বেঁধে বেধরক মারপিট ও আগুনের ছ্যাকা দেয়া হয়। এতে ঘটনাস্থলে মুত্যুবরন করে সুমী। এরপর গলায় দড়ি দিয়ে লাশ ঝুলিয়ে রেখে প্রথমে ঘটনাটি আত্নহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু লাশের সুরতহালে শরীরে আঘাত ও আগুনের গরম ছ্যাকার চিহৃ পাওয়া যাওয়ায় ঘটনার পর দিন (৭ নবেম্বর/২০১৬) সুমীর বাবা বাদী হয়ে ডিমলা থানায় জামাতা আলমগীর সহ উক্ত ৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদনে হত্যার বিষয়টি উঠে আসলে পুলিশ ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল আসামীদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এরপর সাক্ষ্য প্রমান শেষে আদালত উক্ত রায় ঘোষনা করেন।
আসামী পক্ষের আইনজীবী আল-বরকত হোসেন বলেন, আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো। #