কিশোরগঞ্জে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে কিটনাশকের পরিবর্তে ব্যবহার হচ্ছে মেহগনির তেল
মোঃ শামীম হোসেন বাবু,কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী)সংবাদদাতাঃ বাড়ির আঙ্গিনায় বসে কয়েকজন কয়েকজন নারী পুরুষ মিলে মেহগনির ফল থেকে তেল তৈরীর কাজে ব্যাস্ত সময় পার করছেন। কেউ ফল থেকে বিচি সংগ্রহ করছেন, আবার কেউ কেউ সেই বিচি গুরো করছেন। বেশ কিছুক্ষন ধরে এমন কর্মষঙ্গ চলার পর তেল প্রস্তুত হলে কাঁধে স্প্রে মেশিন নিয়ে ধানক্ষেতে ছুটে যাচ্ছেন কৃষকেরা। পরে সেই তেল পানির সঙ্গে মিশিয়ে ধানক্ষেতে স্প্রে করছেন কিটনাশকের বিকল্প হিসাবে।
এমনচিত্র নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন কৃষকের ঘরে ঘরে। প্রাকৃতিভাবে এমন পদ্ধতিতে কিটনাশক তৈরীতে কৃষকদের সহযোগিতা করছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায়। তুষার কান্তি রায় জানান, এষানকার কৃষকদের তিনি ফসলের পোকা দমনে মেহগনির বীজের তেল ব্যাবহার করার পরামর্শ দিচ্ছেন। তিনি বলেন, দেশে খাদ্য স্বয়ংসম্পুন্ন হয়েছে ঠিকই কিন্তু নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে ঘাটতি রয়েছে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হলে জৈব কিটনাশক ছাড়া উপায় নেই। এ সরকারের প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে এ উপজেলার কৃষকদের কীটনাশকের বিকল্প ব্যবহার করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। পরামর্শ অনুযায়ী তারা কাজও করছেন। ফলে ক্ষেতের পোকা দমনে একদিকে যেমন খরচ কমছে অপর দিকে অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হচ্ছে কৃষক। পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করছে কৃষক।
পুটিমারী ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের কৃষক আবদুল কাইয়ুম জানান, পোকা মাকড়ের পাশাপাশি ইদুর ধানের ব্যাপক ক্ষতি করে। তাই এবার প্রথমবারের মতো জমিতে মেহগনির তেল ছিটানোর পর জমিতে ইদুর আক্রমন করতে পারেনি। জমিতে কিটনাশক ছিটানোর সময় অনেক সর্তকতা অবলম্বন করতে হয়। ছিটানোর সময় নাক মুখ ঢাকতে হয়। এতে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। মেহগনির তেল ব্যাবহারে এসব সমস্যা হয়না।
উত্তর দুরাকুটি গ্রামের কৃষক ময়নুল ইসলাম বলেন, বোরো ধানের জমিতে কমপক্ষে তিনবার কিটনাশক স্প্রে করতে হয়। এতে বিঘা প্রতি এক থেকে দেড় হাজার টাকা খরচ হয়। মেহগনির তেল ব্যাবহারের কারনে এই খরচ কমে গেছে। ধানক্ষেতও ভাল হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ণতা অর্জনের পর এখন নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। ধীরে ধীরে ফসলে কিভাবে কিটনাশকের বিকল্প ওষুধ ব্যবহার করা যায় সেজন্য আমাদের কৃষি দপ্তর বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহন করছে। সে ক্ষেত্রে এ ধরনের জৈব পদ্ধতি নিঃসন্দেহে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের একটি অনুষঙ্গ। ধীরে ধেির কৃষকদের ওই পদ্ধতিতে অভ্যস্ত করানোর চেষ্টা করা হবে।