গর্জে উঠেছে তিস্তা,নদী ভাঙনে বাড়ি





নির্ণয়,নীলফামারী-তিস্তা নদী গর্জে উঠেছে। এতে নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার ২২টি চরগ্রাম গুলো ভাসতে শুরু করেছে। ফলে চরম দূর্ভোগে পড়েছে ১০ হাজার পরিবারে ৪০ হাজার মানুষ। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিন দফায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে আজ বৃহস্পতিবার(১৯ আগষ্ট/২০২১) সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এই ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃস্টি হয়। এ ছাড়া তিস্তা ফুঁসে উঠায় বিভিন্ন এলাকায় ভাঙ্গনে ফসলি জমি ও বসতভিটা সরিয়ে নিতে বাধ্য হচেছ পরিবারগুলো। এই পরিবারগুলোর মাঝে দেখা দিয়েছে আহাজারী। এদিকে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়ে উজানের ঢল সামাল দেয়া হচ্ছে।

নীলফামারীর ডালিয়ার খালিশাচাঁপানী তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে তিন দফায় পানি বৃদ্ধি পায় সকাল ৬টা থেকে নদীর পানি দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিপৎসীমার (৫২.৬০) ১৬ সেন্টেমিটার উপর দিয়ে যাচ্ছিল। বেলা ৩টায় সেই পানি আরও দুই সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পায়। সন্ধ্যা ৬টায় উজানের ঢলের পানি আরেক দফা বৃদ্ধি পেলে তা বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার দিয়ে  প্রবাহিত হওয়ায় তিস্তা অববাহিকা হয়ে উঠে ভয়ালরূপ।  ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি,খালিশাচাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি,শৌলমারী ও কৈমারী সহ ১০টি ইউনিয়ন এলাকার ২২টি চর গ্রাম বন্যার পানিতে ভাসতে থাকে। পানিবন্দী এসব বাড়িঘরে হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি উঠেছে। পানির নিচে তলিয়ে গেছে এসব এলাকার ফসল ও রাস্তা -ঘাট। এ ছাড়া এই সকল এলাকার বিভিন্ন স্থানে তিস্তা নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি। কেউ কেউ ভাঙ্গনের কবলে পড়ার আগেই বাধ্য হয়ে বসতঘর সরিয়ে নিতে দেখা যায়। তিস্তার বন্যায় ডিমলা উপজেলার ছাতুনামা কেল্লাবাড়ি, ভেন্ডাবাড়ি এলাকাটির ৬৮০ পরিবার সব থেকে বেশী দুর্ভোগে পড়েছে। এই গ্রামটি তিস্তা ব্যারাজের ভাটির অংশে।জীবন বাঁচার তাগিদে  উঁচু স্থানে অবস্থান নিয়েছে মানুষেরা।  পানিবন্দী এলিজা, বানাছা, আব্দুল মান্নান,আলাউদ্দিন, সাইদুল ইসলাম, নজরুল ইসলামসহ আরও অনেকে বলেন, তাদের এলাকার রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে থাকায় চলাচল কষ্টে পড়েছেন পানিবন্দি মানুষ। এসব এলাকার আমন ধান ও সবজির ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে আছে।বাড়িতে পানি ওঠায় রান্নার অভাবে  এলাকার লোকজন শুকনো খাবার খাচ্ছেন। তারা বিশুদ্ধ পানীয় জলের সঙ্কটে রয়েছেন। এইগ্রামে ইতো মধ্যে ৭ একর ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। বিলিন হওয়া পথে রয়েছে অসংখ্য বাড়ি ভিটা। তাই ভাঙ্গনের মুখে পড়া পরিবারগুলো বসতঘর ভেঙ্গে নিরাপদে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে বলে জানান উক্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম। অপর দিকে টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চরখড়িবাড়ি গ্রামটি হুমকীর মুখে পড়েছে বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান ময়নুল হক। তিনি বলেন চরখড়িবাড়ি মৌজায় ২ হাজার পরিবারের বাস। সেখানে স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত এটি বাঁধ পরিবারগুলোকে রক্ষা করে থাকলেও ওই বাধটি নদীর পানির ধাক্কায় ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে। এতে মানুষজন আতংঙ্কগ্রস্থ হয়ে নিরাপদে সরে যাচ্ছে।

তিস্তার পানি পারিমাপক (গেজ পাঠক) মো. নুরুল ইসলাম জানান, ওপারের (ভারত) দো-মোহনী তিস্তার পয়েন্টের খবর অনুযায়ী নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পাবে। নির্ভরযোগ্য সুত্র মতে গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে তিস্তার উজানের ভারতের ভারী বৃস্টিপাত হচ্ছে। তিস্তার দো-মোহনী পয়েন্টে ২৪ ঘন্টায় ৯৮ মিলিমিটার বৃস্টিপাত রেকর্ড করা হলেও বৃস্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এতে উজানের তিস্তায় পানি বেড়েছে । অপর দিকে উজানের গজলডোবার তিস্তা ব্যারেজের  কিছু লকগেট খুলে দেওয়া হয়েছে। 

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পুর্বাভাস ও সর্তকীকরন কেন্দ্র সুত্র মতে গত ১৩ আগষ্ট তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরপর টাকা ৬দিন কখনও ১০, কখনও ৭ বা ৪ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। বুধবার সকালে তিস্তার পানি  বিপৎসীমার নিচে নামলেও বৃহস্পতিবার পুনরায় তিস্তা গর্জে উঠে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউদ দৌলা জানান, আমরা ২৪ ঘন্টা তিস্তা ব্যারাজে ৪৪ টি জলকপাট খুলে রেখে উজানের পাহাড়ী ঢল সামাল দেয়ার চেস্টা করে যাচ্ছি। #


পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 2946095901101569602

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item