সৈয়দপুর থেকে তৃতীয় দফায় ২৬ কৃষি শ্রমিককে ধান কাটতে বগুড়ায় প্রেরণ
তোফাজ্জল হোসেন লুতু.সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলা থেকে তৃতীয় দফা ২৬ জন কৃষি শ্রমিককে ধান কাটার জন্য জরুরীভিত্তিতে বগুড়ার নন্দীগ্রামে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) সকালে সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ কার্যালয় চত্বর থেকে একটি মিনিবাসযোগে তাদের সেখানে পাঠানো হয়।
গতকাল বগুড়ার নন্দীগ্রামে পাঠানো ২৬ জন কৃষি শ্রমিককে সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিনের ব্যক্তিগত উদ্যোগে শ্রমিকদের প্রত্যেককে শুকনা খাবার ও সাবান তুলে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও সৈয়দপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাস্ক প্রদান করা হয়। সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাসিম আহমেদ উপস্থিত থেকে শ্রমিকদের হাতে ওই মাস্ক, শুকনা খাদ্যসামগ্রী ও সাবান তুলে দেন।
এ সময় সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শাহিনা বেগম, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মমতা সাহাসহ কৃষি বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশের বগুড়া, নাটোর, নওগাঁ, জয়পুরহাট, রাজশাহী প্রভৃতি জেলাগুলোতে চলতি ইরি- বোরো ধান কাটা-মাড়াই পুরোদমে শুরু হয়েছে। আর প্রতি বছরই উত্তরের জেলা নীলফামারীসহ অন্যান্য জেলা ও উপজেলা থেকে কৃষি শ্রমিকরা জেলাগুলোতে গিয়ে ওই সব এলাকার কৃষকদের ইরি-বোরো ধান কাটা মাড়াইয়ের কাজ করে থাকেন। কিন্তু এবারে চলমান বৈশ্বিক মহামারি প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশব্যাপী কঠোর লকডাউন চলছে এখন। এতে ট্রেন,বাস-মিনিবাসসহ সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে মাঠে আবাদকৃত ইরি-বোরা পাকা ধান নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের চলমান কঠোর লকডাউনের মধ্যেও কৃষি শ্রমিকদের দক্ষিণের বিভিন্ন জেলায় ধান কাটার জন্য জরুরীভিত্তিতে প্রেরণের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা- উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগকে নির্দেশনা দিয়েছেন। আর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে সৈয়দপুর উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ এখানকার কৃষি শ্রমিকদের দক্ষিণের জেলাগুলোতে প্রেরণ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৮ এপ্রিল থেকে শ্রমিক পাঠানো শুরু হয়। প্রথম দিন ১৮ এপ্রিল একটি মাইক্রোযোগে নাটোরের সিংড়ায় ১৪ জন, পরদিন ১৯ এপ্রিল দুইটি মাইক্রোবাসে করে নাটোরের সিংড়া ১৫ জন ও নওগাঁর আত্রাইয়ে ১৫ জন এবং ২০ এপ্রিল ২৬জন কৃষি শ্রমিক পাঠনো হয়েছে।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শাহিনা বেগম জানান, কৃষি শ্রমিকরা যাতে কোন রকম বাঁধা-বিপত্তি ছাড়াই জেলাগুলো গিয়ে ধান কাটার কাজ করতে পারেন সে ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। কৃষি শ্রমিকদের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে উপজেলা ও কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে যৌথভাবে প্রত্যায়ণপত্র প্রদান করা হচ্ছে। দক্ষিণের কৃষকদের চাহিদা মতো কৃষি শ্রমিক প্রেরণ অব্যাহতভাবে চলবে বলে জানান তিনি।