ডোমারে ৪ দিনের মাথায় চাঞ্চল্যকর মিজানুর হত্যা মামলার রহস্য উৎঘাটন
আনিছুর রহমান মানিক, ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি>>
নীলফামারীর ডোমারে মাত্র ৪ দিনের মাথায় চাঞ্চল্যকর মাদক সম্রাট মিজানুর হত্যা মামলার রহস্য উৎঘাটন করেছে ডোমার থানা পুলিশ।
ওই মামলায় ২৫ এপ্রিল রবিবার বিকেলে আব্দুস ছালাম ওরফে পিনকোড বাবু (৩৫) কে তার নিজ বাড়ী হতে গ্রেফতার করে পুলিশ। সোমবার আদালতে সোপর্দ করা হলে স্বেচ্ছায় বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারায় মিজানুরকে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করেন।
মাদক কেনা বেচাঁ ও খাওয়াকে কেন্দ্র করে এই হত্যার ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। ২১ এপ্রিল (বুধবার) মাদকসেবী আব্দুস ছালাম (৩৫) ওরফে পিন কোড বাবু ও আবু তালেব (৫৫) দুজন মিলে এহত্যা কান্ডটি সংঘটিত করে। ঘটনার দিন বুধবার রাতেই ডোমার ছোটরাউতা গ্রামের হাকিম উদ্দিনের ছেলে আবু তালেবকে আটকের পর আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এই হত্যার ব্যাপারে নানান কথা চারিদিকে ছড়িয়ে পরে। কিন্তু হত্যার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়ে ডোমার থানা পুলিশ ব্যাপক তৎপরতা চালায়। নিহত মিজানুরের মোবাইলের কললিষ্ট থেকে একাধিকবার জনৈক পিনকোট বাবু মিজানুরের মোবাইলে ফোন দেয়। বিষয়টি পুলিশের সন্দেহ হলে তাকে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে এক সময় হত্যার কথাটি স্বীকার করে সে। পিন কোট বাবু ছোট রাউতা কাজী পাড়া গ্রামের রশিদুল ইসলাম ছানুর ছেলে ও আবু তালেব একই এলাকার গোডাউন পাড়ার মৃত হাকিম উদ্দিনের ছেলে। জেলা পুলিশ সুপার মোখলেছুর রহমান বিপিএম পিপিএম এর নির্দেশ মোতাবেক, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) জয়ব্রত পালের দিক নির্দেশনায়, অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান, ওসি (তদন্ত) বিশ^দেব রায়ের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ৪ দিন নিরলস ভাবে কাজ করে ওই হত্যার রহস্য উৎ্ঘাটন করেন। ডোমার থানা অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান জানান, হত্যার দিন মিজানুরের সাথে তার বাড়ীতে মাদক খাওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় আবু তালেব ও পিন কোট বাবু’র। তারই জের ধরে তালেব মিজানুরের গলায় ফ্যানের তার পেচিয়ে ধরে ও পিন কোট বাবু পা চিপে ধরে থাকে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তারা মিজানকে চেয়ারে বসিয়ে পালিয়ে যায়। মিজানুরের মৃত্যুদেহের পাশেই তালেবের ব্যবহৃত চশমাটি মিজানের লাশের পাশে পরে থাকায় পুলিশের সন্দেহ হলে ওই দিন তালেবকে আটক করে। মামলা সুত্রে জানাযায়, ১৯ এপ্রিল রাত আড়াইটার দিকে মিজানুরের সাথে পাশ^বর্তী এলাকার মাদক সেবী আবু তালেবের ঝগড়া হয়। ২১এপ্রিল মিজানুরকে বাড়ীতে রেখে দুপুর দেড়টায় তার স্ত্রী মাদক স¤্রাজ্ঞী রুপা ও তার মেয়ে মেঘলা মনি ডাক্তার দেখানোর জন্য রংপুরে যায়। পরে রংপুর থেকে ফিরে এসে সন্ধ্যায় বাড়ী ফিরে দেখে মেইন গেট ভিতর থেকে বন্ধ। পিছনের গেটটি খোলা থাকায় বাড়ীতে প্রবেশ করে দেখে রুমের চেয়ারে বসা মিজানুরের মৃতদেহ। তারা বাড়ীতে না থাকায় উক্ত ঘটনার জের ধরে আসামী আবু তালেব অজ্ঞাতনামা আসামীগন দুপুর দেড়টার পর হতে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার আগে যে কোন মুহর্তে গলায় ফাঁস দিয়ে শ^াসরোধে হত্যা করে চেয়ারে বসিয়ে রেখে পালিয়ে যায়। গত ২২এপ্রিল (বৃহষ্পতিবার) মৃত মিজানুরের মেয়ে মেঘলা মনি বাদী হয়ে আবু তালেবের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো কয়েক জনকে আসামী করে ডোমার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ রাতেই তালেবকে গ্রেফতার করেন। পরের দিন আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠান।