সৈয়দপুরে বীরাঙ্গনাদের মাঝে চাল ও নগদ অর্থ বিতরণ
তোফাজ্জল হোসেন লুতু,সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা ফাউন্ডেশনের বীরাঙ্গনা সহায়তা কার্যক্রমের আওতায় নীলফামারীর সৈয়দপুরে বীরাঙ্গনাদের মাঝে চাল ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) ১০ টায় উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের আইসঢাল কাছারিপাড়া বীরাঙ্গনা বেগম আরাকে সরকারীভাবে দেয়া বীরনিবাস চত্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে ওই চাল ও অর্থ বিতরণ করা হয়।
অপারেজয় বাংলা ফাউন্ডেশনের নীলফামারী জেলা সমন্বয়কারী এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড নীলফামারীর ডোমার উপজেলা শাখার সভাপতি লেখক ও গবেষক মো. আল-আমিন রহমান উপস্থিত থেকে বীরাঙ্গনাদের হাতে ওই চাল ও নগদ টাকা তুলে দেন।
এ সময় সৈয়দপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. ইউনুছ আলী, সৈয়দপুর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন লুতু ও সাংবাদিক মো. সাখাওয়াত হোসেন সৈকতসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা ফাউন্ডেশনের বীরাঙ্গনা সহায়তা কার্যক্রমের আওতায় কামারপুকুর ইউনিয়নের ১২ জন বীরাঙ্গনার মাঝে ১০ কেজি চাল ও নগদ পাঁচ শত টাকা করে বিতরণ করা হয়েছে।
অপারেজয় বাংলা ফাউন্ডেশনের নীলফামারী জেলা সমন্বয়কারী মো. আল-আমিন রহমান জানান, সংগঠনটির উদ্যোগে বীরাঙ্গনা সহায়তা কার্যক্রমের আওতায় গত শীতে নীলফামারী জেলার বিভিন্ন উপজেলার বীরাঙ্গনাদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সৈয়দপুর উপজেলার ১২ জন বীরাঙ্গনার মধ্যে চাল ও নগদ টাকা বিতরণের মধ্যদিয়ে নীলফামারী জেলার ৩৬ জন বীরঙ্গনার মাঝে চাল ও নগদ অর্থ বিতরণ কার্যক্রম শেষ হলো।
চাল ও অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠানে সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের আইসঢাল হিন্দুপাড়ার বীরাঙ্গনা কিরণ বালা শীল আক্ষেপ করে বলেন, ’৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে আমার মতো দুই লাখ মা- বোন (নারী) তাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ সম্ভ্রম হারিয়েছেন। অথচ আজ দেশ স্বাধীনতার সূর্বণজয়ন্তীতে বীরাঙ্গনাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে কোন মূল্যায়ন করা হয়নি। অদ্যাবধি দেয়া হয়নি বীরাঙ্গনাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি । বীরাঙ্গনাদের নামে প্রকাশ করা হয়নি কোন রকম গেজেট। আজ আমরা বীরাঙ্গনারা সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে চরম অবহেলিত ও উপেক্ষিত। সমাজের সবাই আমাদের বাঁকা চোখে দেখেন। আমরা সরকারি কোন রকম সাহায্য সহায়তা পাই না। তিনি অবিলম্বে মুক্তিযোদ্ধাদের ন্যায় বীরাঙ্গনাদেরও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা দেয়ার দাবি জানান তিনি।