পার্বতীপুরে পৌরসভা ও দুই ইউনিয়নে ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়ে ১০ বছর অতিক্রম
এম এ আলম বাবলু, পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
সীমানা নির্ধারনের জটিলতায় দীর্ঘ ১০ বছর ধরে দিনাজপুরের পার্বতীপুর পৌরসভা ও তৎসংলগ্ন দুইটি ইউনিয়নে নির্বাচন বন্ধ রয়েছে। ফলে ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত জন প্রতিনিধিরাই ১০ বছর সময় ধরে দিব্যি দায়িত্ব পালন করছেন। তাই এসব এলাকার বাসিন্দারা তাদের ভোটাধিকার ফেরত পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জানা গেছে, গত ২০১১ সালের জানুয়ারী মাসে পার্বতীপুর পৌরসভার শেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বর্তমান মেয়র এ,জেড,এম মেনহাজুল হক মাত্র ১৪ ভোটের ব্যবধানে প্রতিদ্বন্দি প্রার্থী এম এ ওহাব সরকার কে হারায়ে নির্র্বাচিত হন। নিয়মমতে, ৫ বছর পর দেশের অন্যান্য পৌরসভায় নির্বাচন হলেও সীমানা নির্ধারনী জটিলতায় অজুহাতে পার্বতীপুর পৌরসভায় কোন নির্বাচন হয়নি।
অনুরুপ ভাবে ২০১১ সালের জুন মাসে সারাদেশের সাথে পার্বতীপুরের ১০টি ইউনিয়নেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ৫ বছর পর অর্থাৎ ২০১৬ সালের মে মাসে পার্বতীপুরের ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের দুইদিন আগে শুধুমাত্র সীমানা নির্ধারনী জটিলতায় পৌরসভা সংলগ্ন রামপুর ইউনিয়ন ও পলাশবাড়ী ইউনিয়নের নির্বাচন বন্ধ করে দেয়া হয়।
২০১১ সালে পলাশবাড়ী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মোফাক্ষারুল ইসলাম। তিনি অদ্যাবধি দায়িত্ব পালন করছেন। অন্যদিকে রামপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন শাহাদত হোসেন শাদো। মামলা মোকদ্দমার কারনে তাকে দায়িত্ব পালন থেকে তাকে বিরত রাখা হয়। ওয়ার্ড মেম্বার একরামুল হক কে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয় এবং তিনি দীর্ঘ ৬ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন।
দীর্ঘ ১০ বছর নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়ায় একদিকে যেমন নাগরিকগন তাদের ভোটাধিকারের মাধ্যমে পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারছেন না। অন্যদিকে এক টার্মের জন্য নির্বাচিত হয়ে দুই টার্মে দায়িত্বে থাকা জনপ্রতিনিধিদের কাছে আশানুরুপ সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী। অতিদ্রুত সীমানা নির্ধারনের জটিলতা নিরসন করে নাগরিকদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দেয়ার জোর দাবী জানান সচেতনমহল। তা না হলে প্রতিনিয়ত নাগরিক অধিকার ক্ষুন্ন করা হবে তারা মতামত ব্যক্ত করেন।
এ ব্যাপারে রামপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান একরামুল হক জানান, মহামান্য হাইকোর্টের মামলার জন্য ভোট বন্ধ রয়েছে। ভোট হলে আমি চেয়ারম্যান প্রার্থী হবো।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ও পার্বতীপুর পৌরসভার বিজিত চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন জানান, সর্বত্র নির্বাচন হচ্ছে। শুধু এই তিন এলাকায় নির্বাচন বন্ধ রয়েছে। এসব এলাকায় জরুরী ভিত্তিতে নির্বাচন হওয়া দরকার।
এ ব্যাপারে পৌর মেয়র এ,জেড,এম মেনহাজুল হক জানান, সীমানা নির্ধারনী বিষয়ে মামলা হওয়ায় মহামান্য হাইকোর্টের স্টে অর্ডারে নির্বাচন বন্ধ রয়েছে। মামলা শেষ হলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাচন অফিসার রেজাউল করিম জানান, সীমানা নির্ধারনী বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্টের স্টে অর্ডারে পার্বতীপুর পৌরসভা ও তৎসংলগ্ন দুইটি ইউনিয়নে (রামপুর ও পলাশবাড়ী ইউনিয়ন) নির্বাচনী কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
পার্বতীপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হাফিজুল ইসলাম প্রামানিকের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভোট হচ্ছে নাগরিক অধিকার। ভোট না হওয়ায় নাগরিকদের ভোটাধিকার ক্ষুন্ন হচ্ছে। আমার মনে হয়, এই তিন চেয়ারম্যান আন্তরিক হলে দ্রুত নির্বাচন হতে পারে।