সৈয়দপুরে ইউপি সদস্য ও ডিলারের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী সেই ৬ সুবিধাভোগীর মাঝে নতুন করে কার্ড ইস্যু ও হস্তান্তর
তোফাজ্জল হোসেন লুতু,সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্য (মেম্বার) এবং সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিক্রির ডিলারের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী সেই ৬ সুবিধাভোগীর মাঝে নতুন করে কার্ড ইস্যু ও হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল সোমবার তাদের হাতে ওই কার্ড হস্তান্তর করা হয়। এদিকে, সুবিধাভোগীর চাল আত্মসাতের ঘটনার সংশ্লিষ্ট ডিলারে ডিলারশীপ বাতিল ও তাঁর জামানতের ২০ হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত করা হলেও ইউপি সদস্য মো. মোতালেব হোসেনের বিরুদ্ধে কোন কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি অদ্যাবধি। এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিযোগকারীসহ সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষ।
অভিযোগে জানা যায়, সারাদেশের মতো নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায়ও গত ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিক্রি শুরু হয়। বছরের মার্চ-এপ্রিল এবং সেপ্টেম্বর-নভেম্বর পাঁচ মাস ডিলার মাধ্যমে কার্ডধারী সুবিধাভোগীদের মাঝে চাল বিক্রি করা হয়। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ডিলার মো. আবু সাঈদ চৌধুরী ওরফে বাবু গেল ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের গত অক্টোবর মাস পর্যন্ত ১৯ মাস চাল বিক্রি করেছেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে কার্ডধারী সুবিধাভোগী মো. জাহেদুল, আব্দুল খালেক, মজিদুল, শ্রী অশ্বিনী চন্দ্র, মো. অলিউল ও শ্রী রনজিৎ চন্দ্র শীল মাত্র দুই- তিন মাসের চাল উত্তোলন করতে পেরেছিলেন।
অভিযোগে বলা হয় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মো. মোতালেব হোসেন সুবিধাভাগেীদের নানা অজুহাত দেখিয়ে এবং বিভিন্ন রকম ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তাদের কাছ থেকে কার্ডগুলো হাতিয়ে নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ডিলার মো. আবু সাঈদ চৌধুরীর সঙ্গে যোগসাজশে তাদের কার্ডের চাল তুলে দুইজন ( সদস্য ও ডিলার) মিলে আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় ৬ কার্ডধারী সুবিধাভোগীরা গত ২০ অক্টোবর সৈয়দপুর উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে পৃথক পৃথক অভিযোগ দায়ের করেন। সুবিধাভোগীদের ওই অভিযোগে পরিপ্রেক্ষিতে সৈয়দপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. তৌহিদুর রহমার ও খাদ্য পরিদর্শক মো. নুরে রাহাদ রিমনকে তদন্ত করার নির্দেশ প্রদান করা হয়। তারা সরেজমিনে তদন্তপূর্বক সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। আর তাদের প্রতিবেদনে অভিযোগে সত্যতা পাওয়ায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রির ডিলার মো. আবু সাঈদ চৌধুরীর ডিলারশীপ গত ২২ অক্টোবর বাতিল করাসহ জামানাতের ২০ হাজার টাকাও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পরবতীতে সেখানে চাল বিক্রির জন্য মো. আলফায়েজ্জামান শাহ্কে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের নতুন ডিলার নিয়োগ প্রদান করা হয়। এ অবস্থায় গত ৩০ নভেম্বর ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডে সদস্য ও সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি দরে চালের ডিলারের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী সেই ৬ কার্ডধারী সুবিধাভোগীর মধ্যে নতুন করে কার্ড ইস্যু ও হস্তান্তর করা হয়েছে।
সৈয়দপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ইউএফও) মো. তৌহিদুর রহমান বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সুবিধাভাগী ৬ জনের মধ্যে নতুন করে কার্ড ইস্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।