পুলিশের মানবিকতায় মানষিক প্রতিবন্ধী মেয়েটি ফিরে পেল তাঁর পরিবারকে
এম এ আলম বাবলু,পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের পার্বতীপুর মডেল থানা পুলিশের মানবিকতায় মানষিক প্রতিবন্ধি একটি মেয়েট ফিরে পেয়েছে তার পরিবারকে৷ ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে৷
জানা গেছে, সোমবার রাত্রী অনুমান ৩ টায় রাত্রী কালীন টহল ডিউটি করার সময় এসআই মোঃ আবুল বাশার দেখতে পান যে, পার্বতীপুরের ভবানীপুর মোড় রেললাইনের পাশে একটি মেয়ে ঘোরাফেরা করছে এবং মেয়েটির কিছু দুরে কয়েকটি ছেলে ঐ মেয়েটিকে অনুসরন করছে। বিষয়টি টহল ডিউটিকারী অফিসারের দৃষ্টিগোচর হলে তিনি কিছুক্ষন দুরে দাড়িয়ে মেয়েটি ও ছেলেদের প্রতি দৃষ্টি রাখলেন। তিনি মেয়েটির কাছে গিয়ে নাম-ঠিকানা ও বাড়ীর ঠিকানা জিজ্ঞাসা করলে সে কিছুই বলতে পারে না। শুধু হাসতে থাকে। বিষয়টি তিনি তাৎক্ষনিক পার্বতীপুর মডেল থানায় কর্মরত ওসি(তদন্ত) মোঃ সোহেল রানাকে অবহিত করলে তাৎক্ষনিক তিনি সিদ্ধান্ত দেন যে, মেয়েটিকে পুলিশ হেফাজতে স্ব-সন্মানে থানায় পৌঁছাইতে। পরবর্তীতে টহলরত দল মেয়েটিকে স্ব-সন্মানে রাত্রী অনুমান ৪টা৩০ মিঃ থানায় পৌঁছে দেয়। রাত্রীবেলা মেয়েটি থানায় নারী পুলিশের সহিত থাকে এবং নারী পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার নাম রোকসানা বলে জানায়। কিন্তু তার বাড়ী কোথায় সে বিষয়ে কিছুই বলতে পারে না। মঙ্গলবার সকাল অনুমান ৯ টার সময় ওসি(তদন্ত) মোঃ সোহেল রানা থানায় এসে মেয়েটির সাথে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে বন্ধুসুলভ আচরণ করে কথার একপর্যায়ে সে দাড়োয়ানী স্কুল, নীলফামারীতে পড়াশুনা করেছে বলে জানায়। কিন্তু বাড়ী ও বাবার নাম বলতে পারে না। শুধুমাত্র স্কুলের ঠিকানার সূত্রে জের ধরে ওসি(তদন্ত) মোঃ সোহেল রানা নীলফামারী তার পরিচিত পুলিশ অফিসারদের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারে উক্ত স্কুলটি নীলফামারী সদর উপজেলায় অবস্থিত। পরবর্তীতে তিনি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে মেয়েটির নাম এবং ঐ স্কুলে থেকে পড়াশুনা করেছেন বলে প্রধান শিক্ষককে জানান এবং প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ করেন যে, টেবুলেশন সীট দেখে মেয়েটির বাড়ী ও বাবার নাম জানাতে। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক জানান যে, মেয়েটির বাবার নাম রফিকুল ইসলাম, বাড়ী শাহাপাড়া গ্রামে এবং তিনি ১১নং সোনারায় ইউনিয়নের বাসিন্দা। পরবর্তীতে ওসি(তদন্ত) মোঃ সোহেল রানা পুলিশের মাধ্যমে মেয়েটির বসবাসকারী ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করেন এবং ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মেয়েটি বসবাসকারী ওয়ার্ড মেম্বর এর মোবাইল ফোন নম্বর দেন। ইউপি সদস্য জানায় তার নাম ঠিকানা সঠিক আছে। ইউপি সদস্য মেয়েটির বাবাকে সংবাদ দেওয়া মাত্র মঙ্গলবার বিকালে মেয়েটির বাবা থানায় আসলে তাহার সাথে আলোচনাকালে ওসি(তদন্ত) জানতে পারেন যে, তার মেয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ ভূল চিকিৎসার কারণে মানষিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হয়েছে এবং তার বয়স ৩০ বছর বলে তার বাবা জানায়। গত সোমবার সকালে বাড়ী হতে বের হয়েছে। অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। হারিয়ে যাওয়া মানষিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়েকে অক্ষত অবস্থায় কাছে পেয়ে তার বাবা অনেক খুশি হয়েছে এবং পুলিশের মানবিকতাকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ রাখবে বলে জানায়। ওসি(তদন্ত) মোঃ সোহেল রানার এই মহতি উদ্দ্যেগের ফলে প্রতিবন্ধী মেয়েটি ফিরে পেল তার পরিবারকে।