প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় কিশোরীকে গলা কেটে হত্যা, একজনের আমৃত্যু কারাদন্ড
হাফিজুর রহমান হৃদয়, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় এক কিশোরীকে গলা কেটে হত্যায় সহায়তার অভিযোগে আনারুল হক(২৪) নামে এক যুবককে আমৃত্যু কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। সোমবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ মো.আব্দুল মান্নান এ রায় দেন।
পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্রাহাম লিংকন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২০১৫ সালের ১৪ জুন সংঘটিত এ হত্যাকান্ডের মূল অভিযুক্ত আইয়ুব আলী (২০) কিশোরীকে গলা কেটে হত্যার পর নিজ শরীরে লেগে থাকা রক্ত ধুতে গিয়ে বেহুশ হয়ে পানিতে পরে মারা যায়। কারাদন্ডপ্রাপ্ত আনারুল হক হত্যাকান্ডে আইয়ুব আলীর সহযোগী ছিল। সে রৌমারী উপজেলার বাতারগ্রামের ছফের আলীর ছেলে। বর্তমানে সে কুড়িগ্রাম কারাগারে রয়েছে।
নিহত কিশোরীর নাম আরজিনা খাতুন(১৬)। সে একই উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের বোয়ালমারী গ্রামের মৃত আব্দুল হাই আকন্দের মেয়ে।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১৪ জুন সকালে আইয়ুব আলী তার সহযোগী আনারুল হকসহ কিশোরী আরজিনা খাতুনের বাড়িতে গিয়ে তাকে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এসময় আরজিনার মা সাজেদা খাতুন পাশের বাড়িতে কোরআন শিখতে ছিলেন। ঘটনার পরপরই তিনি বাড়িতে ফিরে রান্না ঘরে মেয়ের গলাকাটা মরদেহ পরে থাকতে দেখে চিৎকার করতে থাকেন। এ সময় আসামিরা পালিয়ে যাওয়ার সময় কিছু গ্রামবাসী আইয়ুব আলী ও আনারুলকে রক্তমাখা শরীরে পালিয়ে যেতে দেখেন। পরে পানিতে পড়ে আইয়ুব আলীর মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরী আরজিনার মা সাজেদা খাতুন বাদী হয়ে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আনারুল হকসহ অজ্ঞাত দুই তিন জনকে আসামি করে মামলা করেন। পরে আসামি আনারুল হক নিজেসহ আরও দুইজন ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা জানিয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ঘটনার পাঁচ বছর পর সোমবার দুপুরে কুড়িগ্রাম জেলা জজ আব্দুল মান্নান আসামি আনারুল হককে আমৃত্যু কারাদন্ডের আদেশ দেন। মামলায় অভিযুক্ত আপর দুই তরুণকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।
এ মামলায় রাষ্ট্র পক্ষে আইনজীবী ছিলেন পিপি আব্রাহাম লিংকন এবং আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন আফতাব হোসেন।