সৈয়দপুরে গোলাহাট গণহত্যা দিবস পালিত
https://www.obolokon24.com/2020/06/blog-post_25.html
নীলফামারীর সৈয়দপুরে গত ১৩ জুন গোলাহাট গণহত্যা তথা ট্রেন ট্রাজেডি দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটিতে ১৯৭১ সালের ১৩ জুন পাক হানাদারবাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের হাতে নির্মমভাবে নিহত শহীদদের স্মরণে নানা কর্মস‚চি পালন করা হয়। এ সব কর্মস‚চির মধ্যে ছিল শহরের গোলাহাট বধ্যভ‚মিতে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, প্রদ্বীপ প্রজ্বালন, বৃক্ষরোপন, প‚জা-অর্চনা ও প্রার্থনা।
এ সব কর্মস‚চিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রাবেয়া আলীম এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন নীলফামারী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জয়নাল আবেদীন ও সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাসিম আহমেদ।
কর্মস‚চির শুরুতেই প্রধান অতিথি জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রাবেয়া আলীমস্মৃতি স্তম্ভে পুষ্পমাল্য অপর্ণ করেন । পরে একে একে শহরের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে গোলাহাট বধ্য‚’মির স্মৃতিস্তম্ভে শহীদবেদীতে পুষ্পার্ঘ্য অপর্ণ করা হয়।
এ সময় নীলফামারী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জয়নাল আবেদীন ও সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাসিম আহমেদ, সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মো. আখতার হোসেন বাদল, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মো. রফিকুল ইসলাম বাবু, আওয়ামী লীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার একেএম রাশেদুজ্জামান রাশেদ, শহীদ পরিবারের সন্তান ও শহীদ দিবস উদ্যাপদন কমিটির আহবায়ক সুমিত কুমার আগরওয়ালা নিক্কি, শহীদ পরিবারের সদস্য সাংবাদিক এম আর আলম ঝন্টুসহ সুধীজন, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী,মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরবিারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এরপর শহীদদের স্মরণে প্রদ্বীপ প্রজ্বালন করা হয়। পরে গোলাহাট বধ্যভ‚মি চত্বরে গাছের চারা রোপন, প‚র্জা -অর্চনা ও বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ১৩ জুন সৈয়দপুর শহরের বসবাসরত মাড়োয়ারি ও হিন্দু পরিবারের সদস্যদের নিরাপদে নীলফামারীর চিলাহাটি - হলদিবাড়ি সীমান্ত দিয়ে ভারতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে জড়ো করা হয়। পরে সেখানে একটি বিশেষ ট্রেনে তোলা হয় তাদের। এরপর সৈয়দপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে দিয়ে রেলওয়ে কারখানায় শেষ প্রান্তে শহরের অদ‚রে গোলাহাট এলাকায় ট্রেনটি গিয়ে থামিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ভোরবেলা সেখানে দরজা জানালা বন্ধ করে দিয়ে ট্রেনের মধ্যে তাদের বিভিন্ন ধাঁরালো অস্ত্রে¿ খুঁচিয়ে খুচিয়েও গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এরপর সৈয়দপুর -চিলাহাটি রেলওয়ে লাইনের পাশে তাদের মাটি চাপা দেওয়া হয়। ওই দিন সেখানে সৈয়দপুর শহরের মাড়োয়ারি ও হিন্দু পরিবারের ৪৪৮ জন নারী -পুরুষ ও শিশুকে নৃসংশভাবে হত্যা করা হয়ছিল। যা দীর্ঘ নয় মাসের মহান মুক্তিযুদ্ধে সৈয়দপুরের সবচেয়ে বৃহৎ গণহত্যা। যাবে বলা হয় সৈয়দপুর গণহত্যা কিংবা গোলাহাট ট্রেন ট্রাজেডি। আর বর্বর হতাযজ্ঞের স্থানটি হচ্ছে সৈয়দপুর শহরের গোলাহাট বধ্যভ‚মি।