দ. এশিয়ায় করোনা মোকাবিলায় সার্কভুক্ত দেশের নেতারা একমত (ভিডিও)
https://www.obolokon24.com/2020/03/corona_16.html
ডেস্ক
বিশ্বজুড়ে প্রাণঘাতী হিসেবে দেখা দেওয়া করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ঐকমত্য পোষণ করেছেন দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) সদস্য দেশগুলোর প্রধানরা। সক্ষম দেশগুলো আশ্বাস দিয়েছে সহযোগিতা করার। প্রকান্তরে অপেক্ষাকৃত দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আজ রোববার (১৫ মার্চ) বিকেলে সার্কভুক্ত দেশের সরকারপ্রধান ও প্রতিনিধিরা টেলি কনফারেন্সে অংশ নেন। এতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম মোহাম্মদ সলিহ, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং৷ পাকিস্তানের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন দেশটির স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাফর মির্জা৷
নরেন্দ্র মোদির সূচনা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ভিডিও কনফারেন্স শুরু হয়। সূচনা বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশগুলো একে অপরের সঙ্গে যুক্ত। তাই এ দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি যেমন অবমূল্যায়ন করা যাবে না, তেমনই অযথা আতঙ্কিতও হওয়া যাবে না।’
নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, চীনের উহান থেকে আমাদের ২৩জন শিক্ষার্থী ফিরেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এখন পর্যন্ত আমাদের দেশে পাঁচজন করোনা সংক্রমিত ব্যক্তি এসেছেন। স্থানীয়ভাবে কোনও সংক্রণের ঘটনা পাওয়া যায়নি।
শেখ হাসিনা প্রস্তাব রাখেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সার্কের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের নিয়েও নিয়মিত ভিডিও কনফারেন্স আয়োজন করা যেতে পারে। এছাড়া এই ধরনের সংকট মোকাবিলায় ভবিষ্যতে বাংলাদেশে একটি সার্ক ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠার ব্যাপারেও আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি।
আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি বলেন, ভারত সাংহাই কো-অপারেশনের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, চীনও এর সদস্য। আমি চীনের অভিজ্ঞতা নেয়ার জন্য তাদের সঙ্গে আমাদের সমন্বয় বাড়ানোর প্রস্তাব করছি। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সার্কভুক্ত দেশগুলোর মাঝে একটি সাধারণ টেলি-মেডিসিন কাঠামো গঠনের প্রস্তাব করছি।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহম্মদ সোলি বলেন, একা কোনো দেশ এটিকে মোকাবিলা করতে পারবে না। মালদ্বীপে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ৩০ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তবে একজনেরও মৃত্যু হয়নি। সবাইকে কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়েছে। অনেক মানুষ মালদ্বীপে বেড়াতে আসে। কেউ এসে অসুস্থ বোধ করলে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। করোনাভাইরাসের সংকট যে কোনো সময়ের চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট গুতাবায়ে রাজাপাকসে বলেন, করোনার কারণে আমাদের অর্থনৈতিক সমস্যা গুরুতর হয়েছে। গত বছর সন্ত্রাসী হামলার পর বিশেষ করে পর্যটন খাতে আমাদের ধস নামে। আমরা সেটা থেকে উত্তোরণের পথে যাচ্ছিলাম। আমি সার্ক নেতাদের অনুরোধ করব যে, আমাদের পারস্পারিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার জন্য একটা ফর্মূলা দাঁড় করানো হোক।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং বলেন, সবসময়ের জন্যই আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া জরুরি। যেখানে সারা বিশ্বই সাধারণ রোগ নিয়ে লড়াই করছে। এখন স্ব স্ব অবস্থান থেকে আরও বেশি গুরুত্ব দিয়ে এ সমস্যা মোকাবেলা করতে হবে।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির এ উদ্যোগ খুবই সময়োপযোগ ও প্রশংসনীয়।
শুক্রবার একাধিক টুইট বার্তায় করোনা মোকাবিলায় যৌথ উদ্যোগ নিতে সার্কের সদস্য দেশগুলোর নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, আফগানিস্তান, মালদ্বীপের রাষ্ট্রপ্রধানরা কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেন।