করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগের নতুন নাম ‘কোভিড-১৯’
https://www.obolokon24.com/2020/02/KOVIT-19.html
অনলাইন ডেস্ক
চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া নতুন করোনাভাইরাসটি যে সংক্রামক রোগের কারণ ঘটাচ্ছে, তার আনুষ্ঠানিক নাম দেওয়া হয়েছে ‘কোভিড-১৯’।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রস আধানম গেব্রেইয়েসাস সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় সাংবাদিকদের এ নতুন নামকরণের বিষয়টি জানান। তিনি বলেন, ‘এ রোগের এখন একটি নাম রয়েছে আমাদের কাছে। এটির নাম Covid-19।’
এই নামের মধ্যে KO দিয়ে করোনা, VI দিয়ে ভাইরাস, D দিয়ে ডিজিজ (রোগ) বোঝানো হচ্ছে।
আর ১৯ থাকছে ভাইরাস ছড়ানোর সময় হিসেবে ২০১৯ সালকে চিহ্নিত করার জন্য।
নতুন এ করোনাভাইরাস ইতোমধ্যে কেড়ে নিয়েছে ১১১৫ জনের প্রাণ, সংক্রমিত হয়েছে ৪৫ হাজার মানুষের দেহে। মৃত্যু ও প্রাণহানির অধিকাংশ ঘটনা চীনে ঘটলেও এ ভাইরাসকে পুরো বিশ্বের জন্যই হুমকি হিসেবে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক।
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনে প্রথম এ ভাইরাসের সংক্রমণ চিহ্নিত করা হয়। বলা হয়, ফ্লু বা নিউমোনিয়ার মতো উপসর্গের এ রোগের কারণ নতুন ধরনের এক করোনাভাইরাস, যা ২০০২ সালে সার্স এবং ২০১২ সালের মার্সের মতো একই পরিবারের সদস্য।
শুরুতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো কেউ ‘চীনা ভাইরাস’, আবার কেউ ‘উহান ভাইরাস’ হিসেবে বর্ণনা করছিল নতুন এ করোনাভাইরাসকে।
কিন্তু ভাইরাসের নামের সঙ্গে দেশ বা এলাকার নাম থাকলে বিদ্বেষ ছড়াতে পারে-এই বিবেচনায় দ্রুত একটি অর্ন্তর্বতীকালীন নাম ঠিক করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। প্রথামকিভাবে বলা শুরু হয় নভেল, অর্থাৎ নতুন করোনাভাইরাস, সংক্ষেপে ২০১৯-এনসিওভি।
আর ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অন ট্যাক্সোনমি অব ভাইরাসেস নতুন এ ভাইরাসকে নথিভুক্ত করে ‘সার্স-সিওভি-২’ নামে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছিল, এ ভাইরাসের কারণে মানুষ যে রোগে আক্রান্ত হচ্ছে, তারও একটি নাম ঠিক করতে কাজ চলছে। এরই মধ্যে চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন ফেব্রুয়ারির শুরুতে জানায়, এ রোগের একটি অর্ন্তর্বতীকালীন নাম ঠিক করেছে তারা।
এ ভাইরাস সংক্রমণের উপসর্গগুলো নিউমোনিয়ার মত বলে এর চীনা নাম দেওয়া হয় নভেল করোনাভাইরাস নিউমোনিয়া, সংক্ষেপে- এনসিপি ।
এরপর মঙ্গলবার ডব্লিউএইচওর পক্ষ থেকে নতুন নাম ঘোষণা করে মহাপরিচালক বলেন, আনুষ্ঠানিক একটি নাম থাকা জরুরি, কারণ তাতে বিভিন্ন নামের বিভ্রান্তি এড়ানো যাবে, কোনো নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকেও বিব্রত করা হবে না।
করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মতো।
নভেল করোনাভাইরাস এর কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন এখনো তৈরি হয়নি। ফলে এমন কোনো চিকিৎসা এখনো মানুষের জানা নেই, যা এ রোগ ঠেকাতে পারে। আপাতত একমাত্র উপায় হলো, যারা ইতোমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন বা এ ভাইরাস বহন করছেন- তাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা।