কৈমারী স্কুল এ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ
https://www.obolokon24.com/2020/01/jaldhaka_5.html
প্রাথমিক তদন্তে ৭লাখ টাকা আত্নসাতের প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি ,কমিটির নির্দেশে ৪ লাখ ২৪ হাজার কলেজ ফান্ডে জমা
শামীম হোসেন বাবু- নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার কৈমারী স্কুল এ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ খাঁন কোনো নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কলেজের লাখ লাখ টাকা আত্নসাৎ করেছেন মর্মে নীলফামারী জেলা প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্ঠ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ছাত্রছাত্রীর অভিভাবক ও এলাকাবাসী।জলঢাকা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা চঞ্চল কুমার ভৌমিক বলেন, কলেজ অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ খাঁনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত চলছে স্বীকার করে বলেন, কলেজ অধ্যক্ষ কলেজের বিভিন্ন খাত থেকে গত তিন বছরে ৭ লক্ষ টাকা তছরুপ করেছেন যা প্রাথমিক তদন্তে বেড়িয়ে এসেছে। এবং সেই তছরুপকৃত টাকা কলেজ ফান্ডে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিলে তিনি গত ২ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার কৈমারী জনতা ব্যাংক শাখায় ৪ লাখ ৭৪ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন। পুর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষ করে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনার স্যার অবগত আছেন তিনিও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
কৈমারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও কৈমারী স্কুল এ্যান্ড কলেজের গর্ভনিং বডির সাবেক সভাপতি কহিনুর জামান লিটন বলেন, কলেজটিতে বর্তমানে নির্বাচিত কোন কমিটি নেই।
কলেজ অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ গত ২০১৬ সালের পহেলা জানুয়ারী কলেজে অধ্যক্ষ হিসাবে যোগদান করে তাঁর ইচ্ছামতো আহবায়ক কমিটি গঠন করে কলেজ পরিচালনা করে আসছে।
কৈমারী ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এবং শিক্ষার্থীর অভিভাবক রশিদুল ইসলাম বলেন, কলেজ অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ খাঁন কলেজের দোকান ঘর মেরামত বাবদ তিন লক্ষ টাকা ব্যায় দেখিয়ে নামমাত্র কাজ করে সব টাকা আত্নসাৎ করেছেন। এবং কলেজের দুইটি পুরোনো মেহগনী ও বট গাছ কোন প্রকার নিলাম ছাড়াই ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করে সব টাকা আত্নসাৎ করেছেন।
মামুনুর রশিদ নামে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, কলেজ অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ খাঁন কলেজের ১১ টি দোকানদারের কাছে কোন প্রকার রশিদ ছাড়াই ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার পর্যন্ত টাকা সিকিউরুটির নাম করে আদায় করে আত্নসাৎ করেছেন। এছাড়াও শিক্ষার্থী ভর্তি ও ফরম পুরনের নামে অধ্যক্ষ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে আত্নসাৎ করেছেন।
কৈমারী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং কৈমারী স্কুল এ্যান্ড কলেজের সাবেক শিক্ষক সাইদুর রহমান মাষ্টার বলেন, কলেজ অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ খাঁন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তি এবং ফরম পুরনের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করার কারনে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা তাঁর সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে এবং ক্লাস বর্জন করে।
অপর এক তদন্ত কমিটির আহবায়ক এবং ওই প্রতিষ্ঠানের হিসাব বিঞ্জান বিষয়ের প্রভাষক গোলাম মোস্তফা, তদন্ত কমিটির সদস্য এবং প্রতিষ্ঠানটির সহকারী শিক্ষক জেন্নামুল ইসলাম বলেন, কলেজ অধ্যক্ষ কলেজের ফার্নিচার ক্রয় করার নাম করে এক লাখ ২২ হাজার টাকা এবং ২৬ শে মার্চ মহান বিজয় দিবস পালনের জন্য গত তিন বছরে ২ লাখ ৩১ হাজার ১৭৩ টাকা ব্যায় দেখিয়েছেন যা প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত বলে প্রতীয়মান হয়।
কৈমারী স্কুল এ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ খাঁনের সাথে কথা বললে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি ২০১৯ সালের জুন মাসে প্রতিষ্ঠানের একটি পুরাতন ভবন মেরামতের জন্য কলেজের ফান্ড থেকে ৪ লক্ষ ২৪ হাজার ৯শত ৪০ টাকা উত্তোলন করেছিলাম বহিরাগতদের ইন্ধনে সেই কাজ বন্ধ রেখেছি সেই টাকা গত ২ জানুয়ারী কলেজ ফান্ডে জমা করেছি।
কৈমারী স্কুল এ্যান্ড কলেজের গর্ভনিং বর্ডির আহবায়ক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুজাউদ্দৌলা বলেন, কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের ৭ লাখ টাকা তছরুপের রিপোর্ট পাওয়া গেছে এ বিষয়ে অধ্যক্ষকে জবাব দিতে বলা হয়েছে। সন্তোষজনক জবাব না পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।