এলাকাবাসীর বাধায় রক্ষা পেলো নীলফামারীর পুরাকীর্তি নীলকুটি ভবন
https://www.obolokon24.com/2019/12/nilkutee.html
ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, নীলফামারী প্রতিনিধি ॥ নীল চাষের নৃশংস অত্যাচারের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে নীলকরদের প্রাচীন নীলকুঠি ভবনটি।
প্রায় ২২০ বছর আগে নির্মিত ভবনটি ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে আছে নীলফামারীর মানুষের কাছে। কথিত আছে, বিট্রিশ শাসনামলে লর্ডরা জেলা সদরের পলাশবাড়ি ইউনিয়নের নটখানায় সেই কুঠির তৈরী করে তার ভেতরে অবাধ্য চাষিদের নীল চাষে বাধ্য করতো ব্রিটিশ শাসকরা। বর্তমান সরকারের গত মেয়াদে সেই ভবনটিকে পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষনের উদ্যোগ নেয় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার(২৪ ডিসেম্বর) আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে সেই ভবনটি ভাঙ্গতে শুরু করে জেলা পুলিশ। বিষয়টি স্থানীয়রা টের পেয়ে সেখানে গিয়ে প্রতিবাদ করে। পরে তাদের প্রতিরোধে ভাঙ্গার কাজ বন্ধ করে পুলিশ প্রশাসন।
ওই পুরাকীর্তি ভাঙার খবরে দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চুন,শুরকি আর ইট দিয়ে নির্মিত স্থাপনাটির পূর্বের অংশের প্রায় আড়াই শতাধিক ইট খুলে ফেলা হয়েছে। খবর পেয়ে সেটি রক্ষার দাবিতে ছুটে এসেছেন জমতায়েত হয়েছেন এলাকার লোকজন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ব্রিটিশ শাসনামলের ১৮০০ শতকে নীলচাষের নিদর্শণটি চুন,শুরকি আর ইট দিয়ে নির্মিত নটখানার ওই নীল কুঠিটি। ওই নীল চাষের সঙ্গে নীলফামারীর নামকরণ জড়িত আছে। কুঠিটি দুই বছর আগে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয় পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষণের কাজ হাতে নেয়। সেটি হঠাৎ করে মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে শ্রমিক লাগিয়ে ভাঙতে শুরু করে জেলা পুলিশ। পরে বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী বাধা দিলে সেটি ভাঙা বন্ধ হয়।
সেটি ভাঙার কাজ করা শ্রমিক টুপামারী ইউনিয়নের দোগাছি গ্রামের আমিনুর রহমান(৩৪) ও আক্কাছ আলী(২৯) বলেন, আমরা কয়েকদিন ধরে পুলিশ লাইনে নির্মান শ্রমিকের কাজ করছিলাম। মঙ্গলবার কাজে এলে মোট চার জন শ্রমিককে পুরাতন আমলের ওই ভবনটি ভাঙার কাজে পাঠায়। সেখানে এসে কাজ শুরু করলে বাধা দেয় এলাকাবাসী। বাধার মুখে আমরা কাজ বন্ধ করি।
ওই ইউনিয়নের অনিল চন্দ্র রায়(৫৫) বলেন, ব্রিটিশ আমলে নীলচাষে বাধ্য করানো হয়েছিল নীলফামারীর কৃষকদের। নীলকরেরা সে সময়ে ওই স্থাপনাটি নির্মিত করে সেখানে অবস্থান করে নীলচাষের কার্যক্রম চালান। উল্লেখ রয়েছে ওই বিল্ডিংটি ব্যবহার হতো অব্যাধ্য কৃষকদের টর্চার সেল সিসেবে। ওই টর্চার সেলের পাশে একাধিক নীলখামারও ছিল। সেই নীলখামার থেকে নীলখামারী এবং আজকের নীলফামারী নামটির উৎপত্তি।
তিনি বলেন, যে নীলচাষের সঙ্গে নীলফামারীর নামকরণের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তারই অন্যতম নিদর্শন নটখানার ওই বিল্ডিংটি। সেটি জেলা পুলিশ ভাঙতে এসে হতবাক করে আমাদেরকে।
পলাশবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মমতাজ আলী প্রামানিক বলেন, আমার জানামতে বিট্রিশ আমলে নীলচাষের ওই নিদর্শনটি সংস্কৃতি মন্ত্রনালয় সংরক্ষণের কাজ শুরু করেছে। সেটি হঠাৎ করে কে বা কারা ভাঙছে শুনে এলাকার লোকজন বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে এসে ভাঙার কাজ বন্ধ করে দেই।
তিনি বলেন, পুরোনো আমলের ওই স্থাপনাটি সংরক্ষণের দাবি তুলেছে এলাকাবাসী। দাবির প্রেক্ষিতে সংস্কৃতি মন্ত্রনালয় সেটি সংরক্ষণের কাজ শুরু করেছে। ঠিক সে সময়ে সেটি ভাঙার উদ্যোগ হতবাক করছে সকলকে।
এবিষয়ে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন পিপিএম বলেন, ভবনটি যে জমিতে রয়েছে সেই জমিটি জেলা পুলিশের রেকর্ডিয় সম্পত্তি। সেখানে নবঘোষিত নীলফামারী মেডিকেল কলেজ স্থাপনের প্রস্তাবনা থাকায় ওই পুরাতন স্থাপনাসহ জমি স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান আছে। ধারণা ছিল স্বাস্থ্য বিভাগ সেটি ভেঙে ফেলবে। ওই ধারণা থেকে পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) একটি শোরুম নির্মানে ইটের প্রয়োজন হওয়ায় কিছু ইট সংগ্রহ করতে যায় শ্রমিকরা। সেটি পুরাকীর্তি ঘোষনার প্রক্রিয়ার কথা আমার জানা ছিল না। বিষয়টি জানার পর সাথে সাথে ভবনটি ভাঙার কাজ বন্ধ করে দেই। #
প্রায় ২২০ বছর আগে নির্মিত ভবনটি ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে আছে নীলফামারীর মানুষের কাছে। কথিত আছে, বিট্রিশ শাসনামলে লর্ডরা জেলা সদরের পলাশবাড়ি ইউনিয়নের নটখানায় সেই কুঠির তৈরী করে তার ভেতরে অবাধ্য চাষিদের নীল চাষে বাধ্য করতো ব্রিটিশ শাসকরা। বর্তমান সরকারের গত মেয়াদে সেই ভবনটিকে পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষনের উদ্যোগ নেয় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার(২৪ ডিসেম্বর) আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে সেই ভবনটি ভাঙ্গতে শুরু করে জেলা পুলিশ। বিষয়টি স্থানীয়রা টের পেয়ে সেখানে গিয়ে প্রতিবাদ করে। পরে তাদের প্রতিরোধে ভাঙ্গার কাজ বন্ধ করে পুলিশ প্রশাসন।
ওই পুরাকীর্তি ভাঙার খবরে দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চুন,শুরকি আর ইট দিয়ে নির্মিত স্থাপনাটির পূর্বের অংশের প্রায় আড়াই শতাধিক ইট খুলে ফেলা হয়েছে। খবর পেয়ে সেটি রক্ষার দাবিতে ছুটে এসেছেন জমতায়েত হয়েছেন এলাকার লোকজন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ব্রিটিশ শাসনামলের ১৮০০ শতকে নীলচাষের নিদর্শণটি চুন,শুরকি আর ইট দিয়ে নির্মিত নটখানার ওই নীল কুঠিটি। ওই নীল চাষের সঙ্গে নীলফামারীর নামকরণ জড়িত আছে। কুঠিটি দুই বছর আগে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয় পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষণের কাজ হাতে নেয়। সেটি হঠাৎ করে মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে শ্রমিক লাগিয়ে ভাঙতে শুরু করে জেলা পুলিশ। পরে বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী বাধা দিলে সেটি ভাঙা বন্ধ হয়।
সেটি ভাঙার কাজ করা শ্রমিক টুপামারী ইউনিয়নের দোগাছি গ্রামের আমিনুর রহমান(৩৪) ও আক্কাছ আলী(২৯) বলেন, আমরা কয়েকদিন ধরে পুলিশ লাইনে নির্মান শ্রমিকের কাজ করছিলাম। মঙ্গলবার কাজে এলে মোট চার জন শ্রমিককে পুরাতন আমলের ওই ভবনটি ভাঙার কাজে পাঠায়। সেখানে এসে কাজ শুরু করলে বাধা দেয় এলাকাবাসী। বাধার মুখে আমরা কাজ বন্ধ করি।
ওই ইউনিয়নের অনিল চন্দ্র রায়(৫৫) বলেন, ব্রিটিশ আমলে নীলচাষে বাধ্য করানো হয়েছিল নীলফামারীর কৃষকদের। নীলকরেরা সে সময়ে ওই স্থাপনাটি নির্মিত করে সেখানে অবস্থান করে নীলচাষের কার্যক্রম চালান। উল্লেখ রয়েছে ওই বিল্ডিংটি ব্যবহার হতো অব্যাধ্য কৃষকদের টর্চার সেল সিসেবে। ওই টর্চার সেলের পাশে একাধিক নীলখামারও ছিল। সেই নীলখামার থেকে নীলখামারী এবং আজকের নীলফামারী নামটির উৎপত্তি।
তিনি বলেন, যে নীলচাষের সঙ্গে নীলফামারীর নামকরণের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তারই অন্যতম নিদর্শন নটখানার ওই বিল্ডিংটি। সেটি জেলা পুলিশ ভাঙতে এসে হতবাক করে আমাদেরকে।
পলাশবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মমতাজ আলী প্রামানিক বলেন, আমার জানামতে বিট্রিশ আমলে নীলচাষের ওই নিদর্শনটি সংস্কৃতি মন্ত্রনালয় সংরক্ষণের কাজ শুরু করেছে। সেটি হঠাৎ করে কে বা কারা ভাঙছে শুনে এলাকার লোকজন বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে এসে ভাঙার কাজ বন্ধ করে দেই।
তিনি বলেন, পুরোনো আমলের ওই স্থাপনাটি সংরক্ষণের দাবি তুলেছে এলাকাবাসী। দাবির প্রেক্ষিতে সংস্কৃতি মন্ত্রনালয় সেটি সংরক্ষণের কাজ শুরু করেছে। ঠিক সে সময়ে সেটি ভাঙার উদ্যোগ হতবাক করছে সকলকে।
এবিষয়ে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন পিপিএম বলেন, ভবনটি যে জমিতে রয়েছে সেই জমিটি জেলা পুলিশের রেকর্ডিয় সম্পত্তি। সেখানে নবঘোষিত নীলফামারী মেডিকেল কলেজ স্থাপনের প্রস্তাবনা থাকায় ওই পুরাতন স্থাপনাসহ জমি স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান আছে। ধারণা ছিল স্বাস্থ্য বিভাগ সেটি ভেঙে ফেলবে। ওই ধারণা থেকে পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) একটি শোরুম নির্মানে ইটের প্রয়োজন হওয়ায় কিছু ইট সংগ্রহ করতে যায় শ্রমিকরা। সেটি পুরাকীর্তি ঘোষনার প্রক্রিয়ার কথা আমার জানা ছিল না। বিষয়টি জানার পর সাথে সাথে ভবনটি ভাঙার কাজ বন্ধ করে দেই। #