সৈয়দপুরে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের কম্বল বিতরনে হট্টগোল
https://www.obolokon24.com/2018/01/saidpur_26.html
বিশেষ প্রতিনিধি ২৬ জানুয়ারী॥
আজ শুক্রবার সকালে নীলফামারীর সৈয়দপুরে জিয়া ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে কম্বল বিতরন অনুষ্ঠান ঘিরে হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। এতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আর্ন্তজাতিক সহ সম্পাদক সংগীত শিল্পী বেবী নাজনীন অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। এ ঘটনার জন্য সৈয়দপুর বিএনপির নেতাকর্মীরা সৈয়দপুর বিএনপির সাধারন সম্পাদক আমজাদ হোসেন সরকারকে দায়ি করেছে।
বিএনপির একটি সূত্র অভিযোগ করে জানায়, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ৬শত ব্যক্তিকে কম্বল বিতরনের জন্য প্রথমে সৈয়দপুর বাংলা হাই স্কুল মাঠে মঞ্চ তৈরী করা হয়। কিন্তু কম্বল বিতরনের স্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে সৈয়দপুর বিএনপির সাধারন সম্পাদক বর্তমানে সৈয়দপুর পৌর মেয়র আমজাদ হোসেন সরকার বাংলাস্কুলে মঞ্চ ভেঙ্গে দিয়ে সৈয়দপুর শহরের পাটোয়ারী পাড়ায় অবস্থিত তার বাবার নামের প্রতিষ্ঠিত মকবুল হোসেন বিএমআই কলেজ মাঠে মঞ্চ তৈরী করেন। সেখানে শীর্তাত মানুষদের কথা চিন্তা করে শুক্রবার সকাল ১১ টার দিকে জিয়া ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক ডা: ফরহাদ হালীম ডোনার ও বিএনপির কেন্দ্রীয় আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক সংগীত শিল্পী বেবী নাজনীন সহ তাদের সফরসঙ্গীরা কম্বল বিতরনের মকবুল হোসেন বিএমআই কলেজ মাঠে উপস্থিত হন। সে সময় সেখানে আমজাদ হোসেন সরকার নিজেই মাইক নিয়ে যাতা কথাবার্তা বলতে থাকনে। অভিযোগ উঠেছে এক পর্যায়ে বেবী নাজনীনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আমজাদ হোসেন সরকারের পক্ষের লোকজন হট্টগোল শুরু করে। এসময় তারা বেবী নাজনীন থাকলে আমরা অনুষ্ঠান বর্জন করবো এবং ৯০ টাকার কম্বল বিতরন চলবেনা বলে শ্লোগান দিতে থাকে। ফলে দেখা দেয় চরম উত্তেজনা। এমন কি বেবী নাজনীনকে লাঞ্চিত করার চেষ্টা করা হয়। এক পর্যায়ে বেবী নাজনীন অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করে সৈয়দপুর বিএনপির কার্যালয়ে এসে তাৎক্ষনিকভাবে দলীয় ও দলের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে বৈঠক বসেন।
এসময় তিনি বলেন, যারা আমাকে প্রতিহত করতে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের কম্বল বিতরনে বাধা দিয়ে হট্টগোল করেছে তারা প্রকৃত জিয়ার আর্দশের সৈনিক নয়। তারা যদি প্রকৃত জিয়ার আদর্শকে মনে প্রাণে ধারন করতো তাহলে নোংরামী করতে পারেনা। প্রকৃত যারা বিএনপি করে তারা সবাই আমার সাথে আছে ও থাকবে।
তিনি উল্লেখ করে বলেন, সৈয়দপুরে বিএনপি ও দলের অঙ্গসংগঠনের সকল নেতাকর্মী হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে আমজাদ হোসেন সরকার। তাই তিনি তাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী ও লাঞ্ছিত করার চেস্টা করছে। এমনকি জিয়া ফাউন্ডেশনের মূল্যবান কম্বল গুলোকে ৯০ টাকা আখ্যায়িত করে দলের ও জিয়া ফাউন্ডেশনকে জনগনের কাছে হেয় করার চেষ্টা করে।
তিনি আরও বলেন, আমি এলাকায় এলে সকলেই আমাকে গ্রহণ করেছে। আমি নিজে দেখেছি এখানকার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও আমাকে সম্মান দেখিয়েছেন। বিএনপি অফিসের সভায় নেতাকর্মীরা জানায় সৈয়দপুরে কোন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী আমজাদ হোসেন সরকারের সঙ্গে নেই। তিনি দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে বেবী নাজনীনকে লাঞ্চিত করার চেষ্টা করেছে। এ ঘটনার বিরুদ্ধে তারা প্রতিবাদ জানায়।
এসময় বিএনপি কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন, সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাডঃ ওবায়দুর রহমান, প্রচার সম্পাদক আব্দুল খালেক, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সফিকুল ইসলাম জনি, জেলা যুবদলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন প্রামনিক, পৌর বিএনপির সভাপতি সামসুল আলম, পৌর যুবদলের সভাপতি তারিক আজিজ, ছাত্রদলের সভাপতি রেজওয়ার আক্তার পাপ্পু ও সাধারন সম্পাদক শফিকুল ইসলাম প্রমূখ।
সভা শেষে দুপুর দেড়টার বিমানে বেবী জরুরী কাজে নাজনীন সৈয়দপুর হতে ঢাকা ফিরে যান। তবে তিনি ঢাকা ফিরে যাওয়ার প্রাককালে সাংবাদিকদের বলেন আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দল যদি অংশ নেয় তাহলে তিনি দলের কাছে নীলফামারী ৪ আসনে মনোনয়ন চাইবেন। তাই সম্ভাব প্রার্থী হিসাবে তিনি এই এলাকায় গণসংযোগ চালিয়ে যেতে আবার দুই একদিন পর এলাকা ফিরে আসবেন।
এদিকে গতকাল বৃহ¯পতিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে নীলফামারীর সৈয়দপুরের লক্ষণপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বেবী নাজনীন।
এসময় বেবী নাজনীন এসএসসি পরীক্ষায় সকল শিক্ষার্থীদের সাফল্য কামনা করেন। আর এ সাফল্য পেতে শিক্ষার্থীদের সময়কে কাজে লাগানোর তাগিদ দেন তিনি।
উপজেলার বাঙালিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি প্রণোবেশ বাগচীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজ, সহকারী প্রধান শিক্ষক রেজাউর রহমান রেজা প্রমুখ।