পীরগঞ্জে ড্রেন নির্মানে অনিয়ম-দুর্নীতি,পানি বের হওয়ার পথ উচু, ড্রেনেই জমা থাকবে পানি!

রাতে ব্রীজের ঢালাই করায় কাজ বন্ধের নির্দেশ!

মামুনুর রশিদ মেরাজুল-

রংপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের অধীনে পীরগঞ্জ উপজেলা সদরে ড্রেন নির্মানে চরম দুর্নীতি, গাফিলতি আর অনিয়ম করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এলাকাবাসী অভিযোগ দিলেও তা আমলে নেয়া হয়নি। ফলে এলাকাবাসী কয়েকদফা ড্রেন নির্মান কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল। ড্রেনটি নির্মানে ‘ওয়াটার লেভেল’ ঠিক না করায় উপজেলা সদরের পশ্চিমের পরিবর্তে পূর্বে পানি জমা হয়ে থাকবে বলে স্থানীয় ঠিকাদারদের সুত্রে জানা গেছে। অপরদিকে ওই সড়কের একটি ব্রীজের সিসি ঢালাই গত বুধবার রাতে দেয়ায় সওজ’র রংপুর কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারকে কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়ে চিঠি দিয়েছে।
রংপুর সওজ সুত্রে জানা গেছে, সাদুল্লাপুর-পীরগঞ্জ-নবাবগঞ্জ সড়কটির উন্নয়নে ৩৯ কোটি টাকায় ২৪ কিমি সড়ক বর্ধিতকরণ, কার্পেটিং ও ৩টি স্থানে ২ হাজার ২’শ মিটার ড্রেন নির্মান করা হচ্ছে। কাজটির শুরু থেকেই কাজ পাওয়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স রানা বিল্ডার্স রংপুর সওজ কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে দুর্নীতি করে আসছে। বর্তমানে ড্রেন নির্মানে গভীরতা কম, নি¤œমানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহারসহ নানান অনিয়ম-দুর্নীতি শুরু করে। এর প্রতিবাদে সড়কটির ফলির বিল বাজার এলাকার লোকজন কাজ বন্ধ করে দেয়। পরে ঠিকাদার কাজ করে। উপজেলা সদরে থানা থেকে পীরগঞ্জ বাসষ্ট্যান্ড পর্যন্ত ড্রেন নির্মান করা হচ্ছে। ড্রেনটি দিয়ে পানিসহ আবর্জনা বাসষ্ট্যান্ড থেকে আখিরা নদীতে পড়ার কথা। সে অনুযায়ী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি সওজ কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে উপজেলা সদরে থানার পশ্চিমে আখিরা নদীর মুখে ড্রেন নির্মানে গভীরতা কম করে সিসি ঢালাইসহ ওয়াল নির্মান করা হয়। এর প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ জনতা সংশ্লিষ্ট পৌর কমিশনারকে সাথে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিলসহ প্রতিবাদ সভা করে। এতে বাধ্য হয়ে সওজ ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি নির্মিত কাজের প্রায় ৫০ মিটার অংশ ভেঙ্গে তুলে ফেলে। সে সময় বিষয়টি বিভিন্ন পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় তোলে। ওই দুর্নীতিতে রংপুর সওজ’র কার্য-সহকারী মোশাররফ হোসেন প্রত্যক্ষভাবে জড়িত বলে থানা মোড়ের প্রতিবাদ সভায় বক্তারা উল্লেখ করেন।
এদিকে উপজেলা সদরে পৌর মেয়রের কার্যালয়ের সামনে বর্তমানে ড্রেনটি ৩৪ ইঞ্চি গভীর করে সিসি ঢালাই করা হয়েছে। অপরদিকে বাসষ্ট্যান্ড থেকে পানি গড়িয়ে আখিরা নদীতে পড়ার কথা থাকলেও বাসষ্ট্যান্ডের পশ্চিমে খাদ্যগুদামের সামনে ৪২ ইঞ্চি গভীর করে ঢালাই দেয়া হয়েছে। এতে পানিসহ আবর্জনা সবসময়ই ড্রেনেই জমা থাকবে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় ঠিকাদার ও এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন। ড্রেনের ‘ওয়াটার লেভেল’ ঠিক না করায় ড্রেন থেকে দুর্গন্ধ ছড়াবে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় জনতা আবারো অভিযোগ তুললে রংপুর সওজ’র উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ফিরোজ আলম গত বুধবার পীরগঞ্জে আসেন। পীরগঞ্জে এলও জনতার অভিযোগের কোন তদন্ত করেননি। এমনকি গাড়ী থেকেও সওজ’র ওই উপবিভাগীয় প্রকৌশলী নামেননি বলে জানা গেছে। অপরদিকে ওই ঠিকাদার সড়কটিতে ওসমানপুর গ্রামে একটি ব্রীজের সিসি ঢালাই গত বুধবার রাতে দেয়ায় জনতা অভিযোগ করলে সে কাজটি রংপুর সওজ কর্তৃপক্ষ তা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে বলে জানা গেছে। স্থানীয়রা জানায়, ঠিকাদারের সাথে সওজ কর্তৃপক্ষের অনৈতিকভাবে আর্থিক সম্পর্ক থাকায় ঠিকাদার বেপরোয়া হয়ে কাজ করছে। এ ব্যাপারে মেসার্স রানা বিল্ডার্সের স্বত্ত্বাধিকারীর ছোট ভাই মামুন মিয়াকে মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। রংপুর সওজ’র উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ফিরোজ আলম বলেন, পীরগঞ্জে ড্রেন নির্মানে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। অপরদিকে সরকারী নিয়ম ভঙ্গ করে রাতে ব্রীজের সিসি ঢালাই দেয়ায় ঠিকাদারকে কাজটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 72699485234908114

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item