বিজয়ের চেতনায় লাল-সবুজের ফেরিওয়ালা সাইফুল
https://www.obolokon24.com/2017/12/thakurgaon_22.html
বিজয়ের
মাস ডিসেম্বর। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী
যুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের এই মাসে তাজা প্রাণের বিনিময়ে আমরা বিজয় ছিনিয়ে
এনেছিলাম। মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারীদের রক্তের প্রতীক বহন করে
লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা। বিজয়ের মাসে সরকারি, বেসরকারি অফিস ও শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান, বাড়ির ছাদে, বড় গাড়ির সামনে, মোটর সাইকেলের সামনে এমনকি গ্রাম
অঞ্চলে বাইসাইকেলের সামনেও জাতীয় পতাকা ওড়ান অনেকেই। এ জন্যই বিজয়ের মাস
এলেই জাতীয় পতাকার চাহিদা বেড়ে যায়। ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর, রাণীশংকৈল,
বালিয়াডাঙ্গী, সদর উপজেলা ও রুহিয়া থানাসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় ঘুরে
ঘুরে জাতীয় পতাকা বিক্রি করছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। তবে ব্যবসায়ী হিসাবে নয়।
ঠাকুরগাঁও জেলার প্রতিটি মানুষের মাঝে বিজয়ের চেতনা জাগাতে বিজয়ের এ মাসে
নিজের পেশা মিস্ত্রি কাজ ছেড়ে দিয়ে পথে পথে পতাকা বিক্রি করতে নেমেছেন
সাইফুল। তার ধারণা অন্তত: একটি মাসজুড়ে সারা জেলার মধ্যে দুটি মানুষকে মহান
বিজয় দিবসের চেতনা জাগাতে পারলেও নিজেকে স্বার্থক মনে হবে। বালিয়াডাঙ্গী
বাজারে পতাকা বিক্রির সময় সাইফুল জানায়, পেশার সে একজন রংমিস্ত্রি।
ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলায় তার বাড়ি। গত ৫ বছর ধরে বিজয়ের মাস এলেই সে
নিজের পেশা ছেড়ে দিয়ে লম্বা বাঁশের ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত বড় থেকে ছোট
আকারের পতাকা সাজিয়ে পতাকা বিক্রি করতে বের হয়। সাইফুল আরও বলেন, শুধুমাত্র
অল্প লাভেই বিক্রি করছে সে ছোট ও বড় পাতাকা। সেই সাথে বিক্রি করলে হাতে ও
মাথায় বাধার মতো লাল সবুজ ব্যাচ। মূল্য কম থাকায় তার নিকট থেকে বিভিন্ন
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ সব শ্রেণির মানুষই পতাকা কিনতে
দেখা গেছে।
পতাকা ক্রেতা
সমির উদ্দীন স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী লাবনী আক্তার
জানান, সে তার ছোট ভাই ও বোনের মাথায় বাধার জন্য দুটি ব্যাচ কিনেছেন।
বালিয়াডাঙ্গী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র সুমন আলী জানায়,
ডিসেম্বরের সারা মাসে বাইসাইকেলের সামনে বেধে রাখার জন্য ১টি ছোট পতাকা
কিনেছি। বন্ধুদের সাথে স্কুলে যাওয়ার সময় বিজয়ের মাসের সৌন্দর্য হিসাবে এ
পতাকা সাইকেলে লাগাবে বলে সে মত প্রকাশ করে।