নীলফামারীতে বই মেলার উদ্বোধন
https://www.obolokon24.com/2017/12/nilphamari_9.html
ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, নীলফামারী॥
“আলো ছড়াতে, আধার তাড়াতে বই পড়ি, পাঠাগার গড়ি” শ্লোগানকে সামনে রেখে দেশের জেলা পর্যায়ে প্রথমবারের মতো বৃহৎ পরিসরে সাতদিনের বই মেলা শুরু হয়েছে নীলফামারীতে। শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে জেলা শহরের বড়মাঠে আয়োজিত ওই মেলার উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের অর্থায়নে ও জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের উদ্যোগে মেলার আয়োজন করে জেলা প্রশাসন।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘আমরা সন্তানদের হাতে যদি বই কিনে দেই তা হলে তাদের ভবিষ্যৎ উজ্জল হবে। ওই বই পড়ে জ্ঞান বাড়বে, তারা প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা দক্ষতা এবং জ্ঞানের পরিচয় দিতে পারবে, না হলে দেখা যাবে এমএ পাশ করেও চাকুরী মিলছে না।’তিনি বলেন, ‘আগে বই মেলা অনুষ্ঠিত হতো জেলা পর্যায়ে। সেখানে স্থানীয় পুস্তক ব্যবসায়ীরা অংশ নিত। এতে মেলার উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হতো না। একারণে বই মেলার তাৎপর্য ঢাকা থেকে জেলা পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে সরকার জাতীয় পর্যায়ের প্রকাশকদের অংশগ্রহনে প্রথমবারের মতো এমন মেলার আয়োজন করেছে।’জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালেদ রহীমের সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা দেন জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের পরিচালক নজরুল ইসলাম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, পুলিশ সুপার জাকির হোসেন খান, নীলফামারী পৌর সভার মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল হক, সংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের সহকারী পরিচালক ফরিদ উদ্দিন, গোলাম নবী হাওলাদার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের পরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, আগামী চার মাসের মধ্যে দেশের প্রতিটি বিভাগের দুটি করে জেলায় মোট ১৬টি বই মেলা অনুষ্ঠিত হবে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের সহযোগিতায় এসব মেলার আয়োজন করবে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন। নীলফামারী জেলার বই মেলার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এটির সূচনা হলো।
তিনি বলেন, সৃজনশীল প্রকাশনা প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের হাতে তুলে দেওয়াই ওই মেলার মূল লক্ষ্য। নীলফামারীর মেলায় দেশের জাতীয় পর্যায়ের ৫৫টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানসহ অংশ গ্রহন করছে। এছাড়াও বাংলা একাডেমীসহ ছয়টি সরকারী প্রতিষ্ঠানসহ আটটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহন করেছে। প্রতিটি মেলা আয়োজিত হবে সাত দিনের জন্য।
বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম বই পড়ার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিযোগিতায় থালা, বাটি, গ্লাস উপহার দিয়ে থাকি। এসব ঠুনকো জিনিসের পরিবর্তে আপনারা বই উপহার দিন। তাতে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে পড়বে, সেটি মানুষের মধ্যে স্থায়ী হবে।’
অনুষ্ঠানের সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালেদ রহীম জানান, ৮ ডিসেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেলাটি চলবে। জাতীয় পর্যায়ের ৫৫টি প্রকাশানা প্রতিষ্ঠানসহ মোট ৬৯টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহন করেছে মেলায়। এছাড়া মেলায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক নাটক লাল জমিন। এখানে খ্যাতিনাম প্রকাশক, লেখকদের মিলন মেলা ঘটবে। মেলার শ্লোগান হবে আলো ছড়াতে, আধার তাড়াতে বই পড়ি, পাঠাগার গড়ি।
এর আগে সংস্কৃতিমন্ত্রী সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা পরিষদের রাজস্ব খাত থেকে ২২৮ জন শিক্ষার্থীর মাঝে তিন লাখ ১০ হাজার টাকার অনুদান বিতরণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান আবুজার রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আরিফা সুলতানা লাভলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মামুন ভুইয়া।