ধনী-গরিবের প্রেম, অত:পর প্রেমিক জেল হাজতে
https://www.obolokon24.com/2017/07/thakurgaon_78.html
আব্দুল আউয়াল,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
প্রেম করার ‘অপরাধে’ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা মথুরাপুর এলাকার আরিফ আসলাম প্রিন্স নামের এক ছেলে জেল হাজতে। মেয়ে ধনী পরিবারের। ছেলে গরিব পরিবারের। কিন্তু প্রেম তো কখন বুঝে না ধনী-গবির। প্রেমের কারণে পৃথিবী আজ এতই সুন্দর। এই প্রেম ভালবাসার জন্য অনেকেই অনেক নিদর্শন, উপন্যাস, গল্প-কাহিনীতে বিখ্যাত হয়ে আছেন।
প্রেম করার ‘অপরাধে’ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা মথুরাপুর এলাকার আরিফ আসলাম প্রিন্স নামের এক ছেলে জেল হাজতে। মেয়ে ধনী পরিবারের। ছেলে গরিব পরিবারের। কিন্তু প্রেম তো কখন বুঝে না ধনী-গবির। প্রেমের কারণে পৃথিবী আজ এতই সুন্দর। এই প্রেম ভালবাসার জন্য অনেকেই অনেক নিদর্শন, উপন্যাস, গল্প-কাহিনীতে বিখ্যাত হয়ে আছেন।
কিন্তু
আমাদের বর্তমান সমাজের ধনী-গরিবের ভেদাভেদ তৈরি হয়ে সেই পুরোনো দিনের
প্রেম-ভালবাসা হারিয়ে গেছে। তাই প্রেম করার অপরাধে আমার বিশ্ববিদ্যালয়
পড়–য়া ছেলেটি আজ ঠাকুরগাঁও জেল হাজতে।
ঠাকুরগাঁও জর্জ কোর্টের বারান্দায় এই কথা গুলো দু:খ নিয়ে বলছিলেন রোড মথুরাপুর এলাকার আরিফ আসলাম প্রিন্স এর বাবা আব্দুর রহমান।
জানা
গেছে, আরিফ আসলাম প্রিন্স ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তো আর
মেয়েটি সুগার মিল উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তো। একই এলাকার হওয়ায় তাদের মধ্যে একটা
ভাল বন্ধুত্ব তৈরি হয়। পরে একই কলেজে পড়ার সুবাদে দুজনের মাঝে প্রেমের
সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
কলেজ
জীবন শেষ করে প্রিন্স ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হয় আর মেয়েটি
সৈয়দরপুর আর্মি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়ে অধ্যয়ন শুরু করেন। এর
মাঝেই দু’জনের সম্পর্ক আরো গভীর হতে শুরু করে। নিয়মিত ফোনে কথা, সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আলোচনা ও বাড়িতে আসলেই দেখা সাক্ষাৎ হতো তাদের।
প্রেমের
বিষয়টি মেয়েটির বিশিষ্ট ব্যবসায়ি বাবা আবু ছালাম ও বড় ভাই জেনে গেলে
ছেলেটির উপর চলে মানসিক নির্যাতন। এর পূর্বেও মেয়েটিকে ছেলেটির সাথে
যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ার কথা বললেও মেয়েটি প্রেমের টানে পরিবারের কথায়
সাড়া দেয়নি।
এবার ঈদে
আরিফ আসলাম প্রিন্স ও মেয়েটি বিশ্ববিদ্যালয় ছুটির সুবাদে পরিবারের সাথে ঈদ
উদযাপন করতে আসেন ঠাকুরগাঁওয়ে। পরে মোবাইলে দুজনের যোগাযোগ শুরু হয়। হঠাৎ
একদিন মেয়েটি প্রিন্সের সাথে কথা বলার সময় তার বড় ভাই দেখে ফেলে। আবারো কথা
বলার কারণে বকাবুকি করে বড় ভাই।
পরবর্তীতে মেয়ের
ভাই ছেলেটিকে শাস্থি দেওয়ার নামে বাবার ক্ষমতা ব্যবহার করে ঠাকুরগাঁও থানায়
একটি অপহরনের চেষ্টা ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দায়ের করেন আরিফ আসলাম
প্রিন্সের বিরুদ্ধে।
গত ২
জুলাই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আরিফ আসলাম প্রিন্সকে
পুলিশ মথুরাপুর নিজ বাড়ি থেকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
আদালত পরে আরিফ আসলাম প্রিন্সকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
আরিফ
আসলাম প্রিন্সের বাবা আব্দুর রহমান জানান, আমরা গরিব। আমার ছেলে ধনীর
পরিবারের মেয়ের সাথে প্রেম করতে গেছে। তাই মেয়ের বাবার ক্ষমতার দাপটে তাকে
জেল হাজতে যেতে হয়েছে। আসলে ‘প্রেম তো ধনী গরিব বুঝে না’।
মামলার
বাদী মেয়ের বড় ভাই আকিদ জাহিদ জানান, আরিফ আসলাম প্রিন্সের সাথে আমার
বোনের কলেজ জীবন থেকে একটা ভাল বন্ধুত্ব ছিল। কিন্তু সে প্রায় সময় আমার
বোনকে ফোনে বিরক্ত করতো। ঈদের ছুটিতে আসলে সে আমার বোনকে অপহরণের চেষ্টা
করে। তাই থানায় মামলা দায়ের করেছি।
ঠাকুরগাঁও
থানার এসআই কফিল উদ্দিন জানান, মামলার প্রেক্ষিতে আসামী গ্রেফতার করা
হয়েছে। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে মামলার প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
ঠাকুরগাঁও
থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) এটিএম শিফাতুল জানান,
আসামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করায় তাকে আটক করে
আদালয়ে প্রেরন করা হয়েছে।