পীরগঞ্জে ইউপি নির্বাচন নৌকা পাচ্ছেন কোন চৌধুরী!
https://www.obolokon24.com/2017/07/rangpur_11.html
অনুপ্রবেশকারীকে নিয়ে বেকায়দায় আ’লীগ
আসন্ন ইউপি নির্বাচনে কোন চৌধুরী নৌকা প্রতীক পাচ্ছেন এ নিয়ে পীরগঞ্জে জল্পনা কল্পনা চলছে। তাদের একজন আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতা, অপরজন বিএনপির সাবেক নেতা। তারা দু’জনই চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক পেতে মাঠে গণসংযোগ থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত মনোনয়নের জন্য দৌঁড়ঝাপ করছেন। বিএনপির সাবেক নেতা দুলাল চৌধুরীকে নিয়ে আ’লীগে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, ১৫ ইউনিয়ন বিশিষ্ট পীরগঞ্জ উপজেলায় একটি পৌরসভা ঘোষণার পর পীরগঞ্জ সদর, রামনাথপুর ও রায়পুর এই ৩ ইউনিয়নের সীমানা নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে উল্লেখিত ইউনিয়নগুলোর সীমানা নিয়ে আদালতে মামলা হওয়ায় যথাসময়ে ইউপি নির্বাচন বাঁধাগ্রস্থ হয়। ফলে অন্যান্য ১২টি ইউপিতে নির্বাচন হয়েছে। সম্প্রতি ওই ৩টি ইউপি’র মামলা নিষ্পত্তি হলে আগামী ২০ আগষ্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামী ২৩ জুলাই আ’লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন প্রদান করা হবে। উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী নিয়ে তুমুল লবিং গ্র“পিং চলছে। চলছে গনসংযোগ। পাশাপাশি কেন্দ্রেও দৌঁড়ঝাপ। ৫৬ বছর বয়সী আ’লীগ নেতা রেজাউল করিম নান্নু চৌধুরী ১৯৮০ সালের পর থেকে দলের বিভিন্ন পদে আন্দোলন সংগ্রাম করে সক্রিয় রাজনীতি করে আসছেন। তিনি দলটির উপজেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক, কৃষি সম্পাদক এবং ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক থেকে রংপুর জেলা কমিটিতেও সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টি কর্তৃক সংসদ নির্বাচনে রায়পুরে ভোট ডাকাতিতে বাঁধা প্রদান এবং ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্র“য়ারীর বিএনপির নীল নকসার নির্বাচন প্রতিহত করতে গিয়ে নান্নু চৌধুরী মামলার আসামী হলে তার নামে হুলিয়া হয়। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে আরও রাজনৈতিক মামলাও হয়। নান্নু চৌধুরী আসন্ন ইউপি নির্বাচনে রায়পুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকের জন্য মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি বিগত ইউপি নির্বাচনে সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন। অপরদিকে রায়পুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক বিএনপি নেতা সাইদুর রহমান দুলাল চৌধুরী দলত্যাগ করে জাতীয় পার্টি থেকে বর্তমানে আ’লীগে এসে উপজেলা কমিটির সহসভাপতির পদ পেয়েছেন। স্থানীয় আ’লীগ নেতাদের বদৌলতে তার এই ভাগ্যের পরিবর্তন বলে আ’লীগের ত্যাগী ও বঞ্চিত নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন। তিনিও নৌকা প্রতীকে রায়পুর ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীতার জন্য গ্র“পিং লবিং করছেন।
২০০১ সালে রায়পুর ইউপির চান্দের বাজার উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপির এক জনসভায় দুলাল চৌধুরী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অশালীন ও আপত্তিকর বক্তব্য প্রদান করেছিলেন বলে একাধিক সুত্র দাবী করেছে। এখন তিনিই আ’লীগের স্থানীয় রাজনীতির কর্নধার বলে জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। নান্নু চৌধুরী এবং দুলাল চৌধুরী দু’জনই চেয়ারম্যান পদে আ’লীগের নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন প্রত্যাশী। দুলাল চৌধুরীর ব্যাপারে স্থানীয় কয়েকজন আ’লীগ নেতা নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, যিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিরুপ জনমত গড়ে তুলতে মাঠপর্যায়ে বিরুদ্ধাচরন করলেন। তিনিই এখন আমাদের নেতা। ভাবতে অবাক লাগে। আ’লীগে এ রকম অনেক অনুপ্রবেশ হওয়ায় আমরা কোনঠাসা হয়ে পড়েছি। নান্নু চৌধুরী বলেন, দলের গঠনতন্ত্রের পরিপহ্নী হলেও একজন দলত্যাগী বিএনপি নেতাকে আ’লীগের সহসভাপতির পদ দেয়া হয়েছে। বিষয়টি দলের নেতাকর্মীদের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সভা সমাবেশে আপত্তিকর ও অশালীন বক্তব্য দিয়েছিলেন। এখন দেখার বিষয় রায়পুর ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে নৌকা পাচ্ছেন কোন চৌধুরী!