জলঢাকার রাজনীতির হালচাল -আওয়াামীলীগে কোন্দল জামায়াতে হতাশা জাপা ও বিএনপির নাজুক অবস্হা।

মর্তুজা ইসলাম ,জলঢাকা প্রতিনিধিঃ

সংসদের বাইরে থাকা জামায়াতের অবস্থান জলঢাকা কিশোরগঞ্জ সংসদীয় আসনে আর আগের মতো নেই। একসময় ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ আসনে দলটি দীর্ঘদিন ক্ষমতায় না থাকায় কর্মীদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে । এ ছাড়া নাশকতা, বিষ্ফোরক সহ বিভিন্ন মামলার কারনে সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে না পারায় নেতাকর্মীরা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। এই কারনে দলটির কার্যক্রমও সীমিত হয়ে পড়েছে এই আসনে।
অন্যদিকে দীর্ঘদিন পর এই আসনে আওয়ামী লীগের এমপি নির্বাচিত হলে রাস্তাঘাট ,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ এই সংসদীয় আসনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে চোখে পড়ার মত উন্নয়ন হলেও এর সুফল ঘরে তুলতে পারছেনা দলীয় কোন্দলের কারনে। অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন কারনে উপজেলা আঃলীগের সাধারন সম্পাদক শহীদ হোসেন রুবেলের সাথে দুরত্ব তৈরী হয় । এর ফলে উপজেলা আওয়াামীলীগে কোন্দল সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে উপজেলা আওয়াামীলীগের একটি বড় অংশ এমপি অধ্যাপক গোলাম মোস্তফাকে সমর্থন দিলে এই উপজেলায় আঃলীগ দুই ভাগে দ্বীখন্ডিত হয়ে পরে। একসময় উপজেলা আঃলীগের সভাপতি আনছার আলী মিন্টু ও সাধারন সম্পাদক শহীদ হোসেন রুবেল মিলিত হয়ে দলীয় এমপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে আলাদা কর্মসুচী পালন করলে আঃলীগে কোন্দল স্পষ্ট হয়ে উঠে এবং নেতাকর্মীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পরে।
 
কোন্দলের মধ্যও এই আসনে বিগত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ১টি পৌরসভাসহ ১৫ টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে ১১টি ইউনিয়নে বিজয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগ। স্বাধীনতার পর থেকে এ রকম ফল আওয়ামী লীগ কখনো পায়নি বলে জনিয়েছে দলীয় সুত্র।
পরে উপজেলা পরিষদের ভাইসচেয়ারম্যান পদের উপনির্বাচনে উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব মশিউর রহমান বাবুকে মনোনয়ন দিলে দলীয় কোন্দলের কারনে সর্বনিম্ন ভোট পেলে সমালোচনার মুখে পরে ক্ষমতাসীন দলটির নেতারা । এই পরাজয়ে জেলাজুড়ে জলঢাকা উপজেলা আঃলীগকে নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হলে একে অন্যর উপর দোস চাপিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা করে উভয়গ্রুপের নেতৃবৃন্দ।
দলের কোন্দলের বিষয়ে এই আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা এমপি বলেন ২০০৪ সালে কাউন্সিল হয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে উপজেলা আওয়াামীলীগের কাউন্সিল না হওয়ায় এবং বর্তমান সভাপতি ও সম্পাদকের সাথে উপজেলা আঃলীগের বেশী সংখ্যক সদস্য দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ না করায় দলের এই অবস্হা হয়েছে। কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হলে উপজেলা আঃলীগে কোন্দল থাকবেনা। দলও জনমুখী হবে ।
উপজেলা আঃলীগের সাধারন সম্পাদক শহীদ হোসেন রুবেল দলের কোন্দল সম্পর্কে বলেন আওয়াামীলীগে কোনপ্রকার কোন্দল নেই। আমরা সভাপতি সম্পাদক একসাথে দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছি। দলের এমপির বিভিন্ন অনিয়ম , দুর্নীতি ও দলবিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করলে এমপি কিছুসংখ্যক উপজেলা আঃলীগের কর্মীকে সুযোগ সুবিধা দিয়ে আলাদা কর্মসূচি পালন করে। সেটা কোনভাবেই কোন্দল নয়। আমাদের নেতৃত্বে আওয়াামীলীগ সুসংগঠিত । এমাসেই আমরা নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু করব।
অন্যদিকে একাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন যুদ্ধে জোড়েসোরে মাঠে নেমেছে আঃলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা। অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা এমপির পাশাপাশি মনোনয়নের ব্যাপারে আশাবাদী আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, উপজেলা আঃলীগের সভাপতি আনছার আলী মিন্টু, সাধারন সম্পাদক শহীদ হোসেন রুবেল, জেলা আঃলীগের সহ সভাপতি বাবু দীপেন্দ্র নাথ সরকার। এছাড়াও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা না থাকলে এই আসনে মনোনয়ন পাবেন দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আহমেদ হোসেন জানিয়েছে একাধিক শিক্ষক ও তার সমর্থকরা।
অন্যদিকে জামায়াত ২০০৮ সালের নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী কাজি ফারুক কাদেরের কাছে বিপুল ভোটে পরাজয় বরন ও  ২০১৪ সালে নির্বাচন বর্জন করায় এ আসনে দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা এবং সাম্প্রতিক সময়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনে কোণঠাসা অবস্থার কারণে নেতাকর্মী ও সমর্থকরা নিষ্প্রভ। এ ছাড়াও জামায়াতের সমর্থন নিয়ে দুইবার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত আলহাজ্ব সৈয়দ আলী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ নির্বাচনের ঘোষনা দিয়ে জোড়েসোরে কাজ শুরু করলে আরো বেকায়দায় পরে দলটি। এবিষয়ে উপজেলা জামায়াতের আমির প্রভাষক সাদের হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমাদের নিয়মিত সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড এই আসনে চলছে। মিছিল মিটিংয়ের ক্ষেত্রে সরকারের কঠোর মনোভাবের কারনে আমরা প্রকাশ্য হতে পারছিনা। জামায়াতের সমর্থনে দুইবার নির্বাচিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সৈয়দ আলীর সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া সম্পর্কে তিনি বলেন এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর অধ্যক্ষ আজিজুল ইসলাম। তিনি আরো বলেন যদি কেউ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায় সেটা তার গনতান্ত্রিক অধিকার। তবে দলের ব্যাপার নয়।
গ্রুপিংয়ের কারনে এই আসনে জাতীয় পার্টি ভালো অবস্হানে নেই বলে জানিয়েছে তৃনমূলের কর্মীরা। বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নীলফামারী ৩ আসনে ১৪ টি ইউনিয়নে জামানত হারালে দলের নাজুক অবস্হা ফুটে উঠে।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ভরাডুবি সম্পর্কে জানতে চাইলে জাপা নেতা দবির হুদা বলেন আমরা সংসদ নির্বাচন নিয়ে চিন্তা করছি। আগের চাইতেও বর্তমানে নেতাকর্মীরা সুসংগঠিত। এই আসনে জাতীয় পার্টি এবার বিপুল ভোটে এমপি নির্বাচিত হবে। এই আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন চাইছেন সাবেক সাংসদ কাজি ফারুক কাদের, মুহাম্মদ জাফর ইকবাল সিদ্দিকী ও উপজেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক মেজর রানা মোঃ সোহেল।
অন্যদিকে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি এই আসনে সাংগঠনিক অবস্হা পৌরসভা কেন্দ্রীক । উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র ফাহমিদ ফয়সাল কমেট চৌধুরীর নেতৃত্বে এই আসনে বিএনপির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। যদিও এই উপজেলায়  বিএনপি দুই গ্রুুপে বিভক্ত।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 1804111417206103433

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item