ঠাকুরগাঁওয়ে বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়ার নামে টাকা নিলেন শিক্ষক
https://www.obolokon24.com/2017/05/thakurgaon_21.html
আব্দুল আওয়াল,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জের বৈরচুনা
ইউনিয়নের শিরাইল গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়ার নাম করে
অবসরপ্রাপ্ত এক প্রাথমিক শিক্ষকের বিরুদ্ধে দেড় লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে
নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে গ্রামের ৩২ জন ভুক্তভোগী গতকাল
সোমবার পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ
করেছেন। অভিযুক্ত শিক্ষক শিরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত
শিক্ষক ও শিরাইল গ্রামের বাসিন্দা মোসলেম উদ্দীন।
অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোসলেম
উদ্দীন শিরাইল গ্রামের দেড় শ বিদ্যুৎবিহীন বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া
হবে বলে ২০১৫ সালের জুন-জুলাই মাসে প্রচার করেন। এ নতুন সংযোগ পেতে
ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) পীরগঞ্জ জোনাল কার্যালয়ের ডিজিএমসহ
বৈরচুনা এলাকার লাইনম্যান ও অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীকে টাকা দিতে হবে বলেও
প্রচার করেন তিনি। এ জন্য প্রতিটি বাড়ির মালিকের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা করে
চাওয়া হয়। তবে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়ার আগে কিছু টাকা পরিশোধ করতে হবে। তাই
অগ্রিম ১ হাজার, ২ হাজার, ৫০০ টাকা করে, যে যা পারেন দিলেই চলবে। বাকিটা
বিদুতের সংযোগ দেওয়ার পর পরিশোধ করতে হবে।
প্রত্যন্ত ওই গ্রামের ৯০ থেকে ৯৫ জন মানুষ সরল মনে ওই
শিক্ষকের হাতে ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা, যে যা পেরেছেন, দিয়েছেন। কিন্তু এরপর
প্রায় ২ বছর পার হলেও গ্রামে বিদ্যুৎ তো দূরের কথা, বিদ্যুতের একটি খুঁটিও
বসানো হয়নি।
অভিযোগকারীদের মধ্যে আবদুস সবুর, আতাবদ্দীন, মাসুদ রানা,
নজরুল ইসলামসহ ৭ থেকে ৮ জন বলেন, তারা পরে পবিস পীরগঞ্জ জোনাল কার্যালয়ে
খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তাঁদের গ্রামে বিদ্যুৎ আসার আপাতত কোনো সম্ভাবনা
নেই। বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে আলাপ করে তাঁরা জানতে পারেন, গ্রামে বিদ্যুৎ
দেওয়ার কোনো ক্ষমতা ওই স্কুলশিক্ষকের নেই।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, বিষয়টি বুঝতে পেরে গ্রামবাসী বিভিন্ন
সময়ে ওই শিক্ষকের কাছে টাকা ফেরত চান। কিন্তু ‘ওই টাকা পল্লী বিদ্যুৎ
সমিতির বড় অফিসারকে দেওয়া হয়েছে’ বলে টাকা আর ফেরত দেননি মোসলেম উদ্দীন।
ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পীরগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের
উপমহাব্যবস্থাপক মাসুদুর রহমান গতকাল দুপুরে বলেন, কেউ টাকা নিয়েছে বলে
অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোসলেম উদ্দীন মুঠোফোনে বলেন, ‘শিরাইল
গ্রামের কিছু মানুষ আমাকে কিছু টাকা দিয়েছিল। সে টাকা এক জায়গায় জমা আছে।
প্রয়োজনে ফেরত দেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার মুঠোফোনে গতকাল অভিযোগ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন।
ঠাকুরগাঁও পবিসের মহাব্যবস্থাপক ইনছের আলী মুঠোফোনে বলেন,
‘বিদ্যুতের সংযোগ পেতে কাউকে টাকা না দেওয়ার জন্য আমরা অবিরত মাইকিং করছি।
গত শুক্রবার মসজিদে মসজিদে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। টাকা নেওয়ার অভিযোগের
প্রমাণ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’