রাত ১২টা বাজ‌লেই ঘু‌মি‌য়ে প‌ড়ে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতা‌লের নার্সরা

আব্দুল আউয়াল ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
মুখের মধ্যে ক্লান্তির ছাপ লোকটির। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে এদিক ওদিক ছুটাছুটি করছে। ছুটাছুটির কারন জানতে চাইলে নির্বাক দৃষ্টি তাকিয়ে থেকে বলেন, আমার বাচ্চা কেমন জানি করছে। তাই নার্সদের খুজাখুজি করছি। কিন্তু কেউও নেই। কি করবো বু্ঝতে পারছি না। অনেক রাত হয়েছে তাই মনে হয় নার্সরা ঘুমিয়ে পড়েছে। এভাবে কথা গুলো বলছিলেন ঠাকুরগাঁও রাণীংকৈল উপজেলার গোগড় এলাকা থেকে আসার অসুস্থ শিশু অভিভাবক ওহাব হোসেন।
পরে এই প্রতিবেদক শিশু ওর্যাডের বিভিন্ন কক্ষে নার্সদের খুজতে শুরু করেন শিশুটির জরুরি সেবা দেওয়ার জন্য। কিন্তু  কর্তব্যরত নার্সরা ঘুমিয়ে থাকার কারণে পাওয়া যায়নি। অন্য ওর্যাড থেকে মধুসূধন নামে এক মেডিকেল ইন্টানি স্টুডেন্টকে ডেকে নিয়ে এসে শিশুর সমস্যার কথা জানানো হয়।
শুধু ওহাব নয় নার্সদের বিরুদ্ধে খারাপ ব্যবহারসহ নানা অভিযোগ করেছেন রোগী ও স্বজনরা।
ঠাকুরগাঁওয়ে আধুনিক সদর হাসপাতাল বিভিন্ন ওর্যাড ঘুরে দেখা গেছে, অনেক রোগী যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে, অনেকে ঘুমিয়ে। সারাদিন রোগীর সেবা করায় ক্লান্ত হয়ে অনেক স্বজনরা মেঝেতেই ঘুমিয়ে পড়েছে। আবার  হাসপাতলে পর্যাপ্ত ফ্যান না থাকায় পাখা দিয়ে গরম নিবারণ করছেন।
কিন্তু হাসপাতালে রাতের বেলায় কর্তব্যরত বেশির ভাগ নার্স ঘুমিয়ে ডিউটি পালন করছেন।
অনেক রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, আজকে শুধু নার্সরা ঘুমাচ্ছেন না। তারা প্রতিদিনই ১টা বাজার পর ঘুমিয়ে পড়েন। ডাকতে গেলে ক্ষেপে যায়। তাই বাধ্য হয়ে অপ্রশিক্ষন প্রাপ্ত ওয়ার্ড বয়দের দ্বারা সমস্যা সমাধান করা হয়। 
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ওর্যাড বয় জানান, নার্স আপা যখন ঘুমিয়ে পড়েন।  অনেক সময় রোগীর স্যালাইন বা ইনজেশন দেওয়া লাগে অসহায় রোগীদের দেখে বাধ্য হয়ে ইনজেশন পুস করি। যে আমার কাজের মধ্যে পড়ে না।
ঠাকুরগাঁও শহরের সাথী আক্তার জানান, এই হাসপাতালের নার্সদের সেবা পাওয়া খুব কঠিন। সমস্যার কারনে ডাকলে সহজে আসে না। রাতে বেলায় তো তারা ঘুমাই চেয়ার টেবিল ফাকা থাকে।
সদর উপজেলা বালিয়া এলাকার মোাস্তাকিন জানান, বাবার অপারেশ করা হয়েছে।  পেটের মধ্যে চাপ পড়ে রক্ত পড়ছে। কিন্তু সমস্যা সমাধানের জন্য কাউকেই পাচ্ছি না। বাধ্য হয়ে জরুরি বিভাগের একজনকে ডেকে সমাধান করা হলো।
হাসপাতালের চিকিৎকাধীন রোগী ও স্বজনদের দাবি, নার্সরা যেন রোগী ও স্বজনদের সাথে ভাল ব্যবহার করে। এছাড়া রাতের বেলায় ডাকলে যেন পাওয়া যায়।
সাবিনা আক্তার নামে এক নার্স জানান, আমরা সবাই ঘুমিয়ে থাকি কথাটা সত্য নয়। ক্লান্ত হলে একটু বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করি। আমরাও তো মানু্ষ।
ঠাকুরগাঁওয়ে আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক অফিসার ডা: সুব্রত রায় জানান, রাতের বেলায় কর্তব্যরত অবস্থায়  কোন নার্স ঘুমিয়ে ডিউটি পালন করতে পারে না। এ রকম অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
তিনি আরো জানান, আমাদের এই হাসপাতালে পর্যাপ্ত নার্সের সমস্যা। অনেকেই পর পর কয়েকদিন ডিউটি পালন করতে হয়।

পুরোনো সংবাদ

স্বাস্থ্য-চিকিৎসা 3606191946585489797

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item