কমছে না জ্বালানি তেলের দাম
https://www.obolokon24.com/2017/05/oil.html
ডেস্ক-
এখনই দাম কমালে ঋণ করে জ্বালানি তেল আমদানি করতে হবে বলে জানিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম আপাতত কমছে না। দাম কমালে বাংলাদেশ প্রেটোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) আবারও লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। ঋণ করে জ্বালানি তেল আমদানি করতে হবে।’ আজ রবিবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে রবিবার বৈঠকের শুরুতে প্রশ্ন-উত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
পিরোজপুর-৩ আসনের রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে জ্বালানি তেলের মূল্যহ্রাসের সুফল সাধারণ জনগণ সরাসরি উপভোগ করতে পারে না মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বিপিসি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এ অবস্থায় জ্বালানি তেলের দাম কমানো হলে একদিকে বিপিসির সক্ষমতা অর্জন ব্যাহত হবে। অন্যদিকে এর গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাধাগ্রস্ত হবে। ফলে সামগ্রিক বিবেচনায় আপাতত জ্বালানি তেলের দাম কমানো উচিত হবে না।’
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ক্রমান্বয়ে বাড়ার কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে জ্বালানি তেলের মুল্যের উর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি ডলারের সঙ্গে টাকার বিনিময় হার প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী অর্থ-বছর থেকে বিপিসি পুনরায় লোকসানের মুখে পড়তে পারে।’
সবার জন্য বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করতে বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, সবার জন্য বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিতকল্পে সরকার যুগোপযোগী বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং যথাসময়ে বাস্তবায়নের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। আজ সংসদে সরকারি দলের সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদারের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, বর্তমানে মোট ১১ হাজার ৩৬৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ২০২১ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে চালু হবে।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে মোট ৪ হাজার ৯১৭ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের দরপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ২০১৮ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে চালু হবে। এ ছাড়া ৬ হাজার ৪১৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ পরিকল্পনাধীন রয়েছে।
তিনি বলেন, এছাড়া পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নতুন নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পাশাপাশি পরমাণু শক্তি নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রাথমিক কার্যক্রম এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ আমদানি কার্যক্রম স¤প্রসারণের উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। এ পরিকল্পনাসমূহ পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে।
নসরুল হামিদ বলেন, বর্তমানে দেশে দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা গড়ে প্রায় ৮ হাজার ৫শ’ থেকে ৯ হাজার ২শ’ মেগাওয়াট এবং বিদ্যুতের মোট স্থাপিত উৎপাদন ক্ষমতা ১৫ হাজার ৩৭৯ মেগাওয়াট (ক্যাপটিভসহ)।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের চাহিদার তুলনায় উৎপাদন ক্ষমতা বেশি থাকায় বিদ্যুৎ ঘাটতি পরিলক্ষিত হয় না, তবে ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ চাহিদা বিবেচনা করে ও ‘সবার জন্য বিদ্যুৎ’ সুবিধা নিশ্চিতকল্পে সরকার যুগোপযোগী বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং যথাসময়ে সেগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।’
নিয়ম-কানুন মেনেই রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে
জাতীয় পার্টির সদস্য ফখরুল ইমামের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, সকল ধরনের নিয়ম-কানুন মেনে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিবেশের উপর কোন বিরূপ প্রভাব ফেলবে না এবং এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে কোন ধরনের ক্ষতির আশংকা নেই।
নসরুল হামিদ বলেন, ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে পরিবেশের বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে। এতে কার্বণ নিঃসরণের পরিমান ওয়ার্ল্ড রেটিংয়ের নিচে থাকবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাপানের জনবহুল ওকাহামা এলাকায় এ ধরনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে, কিন্তু সেখানে পরিবেশগত কোন সমস্যা হচ্ছে না। আমাদের দেশে আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল পদ্ধতিতে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে। এই এলাকা জনবহুল এলাকা নয়। তবুও আমরা পরিবেশ অধিদফতরের দেয়া ৬০টি সুপারিশ বিবেচনায় নিয়েছি।
তিনি বলেন, এই প্রকল্পের জন্য ভারতের এক্সিম ব্যাংক আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। এক্সিম ব্যাংকের সাথে নরওয়ে সরকারের আর্থিক ব্যাপারে কোন সম্পর্ক নেই।