নীলফামারীতে লটারীর নামে প্রতারণা॥উত্তেজিত জনতা
https://www.obolokon24.com/2017/05/nilphamari_86.html
ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, নীলফামারী ৯ মে॥
নীলফামারীতে লটারীর ড্রকে কেন্দ্র করে হাট ইজারাদারের কার্যালয় ও ড্র অনুষ্ঠানের জন্য স্থাপিত মঞ্চ ভাঙচুর করেছে উত্তেজিত জনতা। গতকাল সোমবার (৮ মে) রাত ১১টার দিকে সদর উপজেলার টুপামারী ইউনিয়নের রামগঞ্জ হাটে ওই ঘটনা ঘটে।এলাকাবাসী জানায়, আকর্ষণীয় পুরস্কারের ঘোষণায় প্রায় ২০ দিন ধরে ওই হাটের ইজারাদার জহুরুল ইসলাম লটারীর কূপন বিক্রী করে আসছে। ২০ টাকা মূল্যের ওই কূপনে টিভি, বাইসাইকেল, থ্রিজি মোবাইলফোন সেটসহ ৫১টি পুরস্কারের কখা উল্লেখ রয়েছে। হাট চত্ত্বরে ৮ মে সন্ধ্যা ৭টা ১ মিনিটে ড্র অনুষ্ঠানের ঘোষণা ছিল।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন,‘কূপন হাতে নিয়ে লোকজন সন্ধ্যা থেকে ওই ড্র অনুষ্ঠানের অপেক্ষায় ছিলেন। সন্ধ্যা গড়িয়ে গেলে ঘোষণা আসে রাত ১০টা ১ মিনিটে ড্র অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু রাত ১১ পর্যন্ত লটারীর ড্র অনুষ্ঠিত হয়নি। এসময় উত্তেজিত লোকজন লটারী আয়োজকদের কাউকে খুঁজে না পেয়ে ড্র অনুষ্ঠানের জন্য সাজানো মঞ্চ ও হাট ইজারাদারের অফিস ভাঙচুর করেন।’
নাম প্রকাশে অচ্ছিুক এলাকার এক শিক্ষক বলেন,‘মাইকযোগে প্রচারাণা চালিয়ে অবৈধ ওই লটারীর টিকেট গত ২০ দিন ধরে বিক্রী হলেও দেখার কেউ ছিলেন না। এরপর লটারীর ড্র না করে এরসাথে সংশ্লিষ্টরা আরেক ধাপে প্রতারণা করেছেন। জনস্বার্থে এটির প্রতিকার হওয়া প্রয়োজন।’
ওই ইউনিয়নের দোগাছী গ্রামের সাদ্দাম হোসেন বলেন,‘আমি ওই হাটে একটি গরু কিনেছিলাম। এসময় গরুর চালানেরসাথে লটারীর কূপন ঞাতে ধরিয়ে দিয়ে সেটির টাকা আদায় করে নিয়েছেন। আমার ধারণামতে গত ২০ দিনে এলাকায় ২০ হাজারে উর্দ্ধে কূপন বিক্রী করেছেন।’
এব্যাপারে টুপামারী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. সামসুদোহা বলেন,‘কোন ধরণের অনুমতি ছাড়াই অবৈধ ওই লটারীর ব্যবসা খুলে বসেছেন হাটের ইজারাদার জহুরুল ইসলাম। এরপর সেটির ড্র না দিয়ে জনগণেরসাথে প্রতারণা করেছেন। আইন অনুযায়ী এর প্রতিকার হওয়া প্রয়োজন।’
টুপাামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মছিরত আলী শাহ ফকির বলেন,‘তারা মাইকিং করে এলাকায় অবৈধ লটারীর টিকেট বিক্রী করছিল। এক সপ্তাহ আগে আমার নজরে পড়লে দুইশ টিকেট জব্দ করে নিয়ে প্রচারণা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। এরপরও তারা গায়ের জোরে প্রচারণা চালিয়ে টিকেট বিক্রী করেছেন।’
তিনি বলেন,‘গত সোমবার কি ঘটেছিল তা আমার জানা নেই। আর জহুরুল হাট ইজারা নিয়েছেন সেটি বৈধ, কিন্তু অবৈধ ওই লটারীর ব্যবসা কেন করবে ? আমি ঘটনা জেনে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ জানাবো।’
এব্যাপারে হাট ইজারাদার জহুরুল ইসলাম বলেন,‘আমি এবারে জেলা সদরের রামগঞ্জ, রামনগর এবং পলাশবাড়ি হাট ইজারা নিয়েছি। ক্রয় বিক্রয়ের নির্ধারিত মাশুলের মধ্যে ওই তিন হাটের গরু ছাগল ক্রেতা, বিক্রেতাদের উৎসাহিত করার জন্য র্যাফেল ড্রয়ের আয়োজন করেছি। এর বাইরে কোন কূপন বিক্রী করিনি। সোমবার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমি ড্র অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু রাতে ড্র অনুষ্ঠানে থানা পুলিশের আপত্তির কারণে তা স্থগিত করা হয়েছিল। আমার সুনাম নষ্ট করতে একটি চক্র এটি নিয়ে একটি মহল বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি আমার সুনাম ক্ষুন্ন করতে চাই না, দ্রুত দিনের বেলায় ওই ড্রয়ের আয়োজন করা হবে।
নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাবুল আকতার বলেন,‘সেখানে ভাঙচুরের কোন ঘটনা আমার জানা নেই। তবে অবৈধ লটারী অনুষ্ঠানের খবরে পুলিশ গিয়ে সোটি বন্ধ ও উপস্থিত লোকজনকে চত্রভঙ্গ করেছে।#