জলঢাকা গণহত্যা দিবসে নেই কোন কর্মসূচী
https://www.obolokon24.com/2017/04/jaldhaka_70.html
মর্তুজা ইসলাম, জলঢাকা, (নীলফামারী) প্রতিনিধি ঃ
২৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার জলঢাকা উপজেলা গনহত্যা দিবস। দিবসটি পালনে রাজনৈতিক, সামাজিক ও প্রশাসনের পক্ষে ছিলনা কোন কর্মসূচী। ১৯৭১ সালে ২৭ এপ্রিল স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন এদেশে বর্বরোচিত নৃশংস গণহত্যা চালায় দেশজুড়ে তারই ধারাবাহিকতা রক্ষায় সেদিন এদেশীয় পাকিস্তানি দোসরদের সহযোগীতায় নীলফামারীর জলঢাকায় ইতিহাসের বর্বরোচিত হত্যাকান্ড সংঘটিত হয় গোলনা ইউনিয়নে কালীগঞ্জ নামক স্থানে। সেদিন প্রাণ ভয়ে স্বরনার্থী হয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে পারি জমাতে চেয়েছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় ৩ শত পরিবার। ২৭ এপ্রিল ১৯৭১ সাল দুপুরে স্বরনার্থীরা কালীগঞ্জ বর্তমানে বঙ্গবন্ধু হাট এসে পৌছলে পার্শ্ববর্তী ডোমার থেকে ৩টি কনভয় করে পাক সেনারা এসে ৩ শত স্বরনার্থীদের সারিবদ্ধ করে দ্বার করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে নৃশংস হত্যা করে।
সেই ভয়াল দিনটিকে স্মৃতিময় করতে স্বাধীনতার পরবর্তী সময় সেখানে নির্মিত হয়েছে বদ্ধভূমি। সেই বদ্ধভূমি আজ অনেকটা অবহেলা অযতেœ পড়ে থাকতে দেখা যায়। বৃহস্পতিবার ছিল জলঢাকা বাসীর জন্য সেই ভয়াল দিন। উপজেলাটিতে কোন প্রকার স্মৃতিচারণ ছাড়াই নিরবে নিভৃতে চলে গেল দিনটি। কোন সংগঠন থেকে এই দিবসটি পালনে কোন প্রকার কর্মসূচি গ্রহন করতে দেখা যায়নি দিনভর। এদিকে এদিনটিকে স্বরন করতে প্রশাসন এর পক্ষ থেকে নেই কোন উদ্যোগ। সেদিন হত্যা যোগ্য থেকে বেচে থাকা পল¬ব, দোমাশু, ভূবেন শীলের সাথে কথা হলে তারা জানায়, আজ আমাদের খোজ কেউ করে না। শুধুমাত্র জাতীয় দিবসগুলো আসলে বদ্ধভূমিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে চলে যায়। সেই দিনের হত্যাযোগ্যের বর্ণনা দিতে গিয়ে আবেগে আপ¬ুত হয়ে উরুতে গুলি খেয়ে বেচে যাওয়া অমরকৃষ্ণ অধিকারী অনেকটা অভিমান করে বলেন কি হবে আর লিখে। স্বাধীনতা ৪৮ বছরের আমরা পাইনি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। সেদিনের সেই বর্ণনা সাংবাদিকদের তিনি এভাবেই দেন, সেদিন ছিল ২৭ এপ্রিল আমরা বালাগ্রাম হতে ৩ শত পরিবারের একটি দল ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা হই। পথিমধ্যে দুপুর বেলা আমাদের গতিরোধ করে ডোমার থেকে আসা পাক সেনারা। আমাদেরকে ধরে নিয়ে যায় বর্তমান পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যানেলের উপর। ৩টি লাইনে বিভক্ত করে নির্বিচারে করতে থাকে গুলিবর্ষন। সে সময় একটি গুলি আমার বুকে না লেগে উরুর মধ্যে লাগলে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি এবং পরবর্তীতে ভগবানের কৃপায় প্রানে বেচে যাই। দিবসটি পালন নিয়ে কথা হয় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের সাথে তিনি জানান, দিবসটি নিয়ে রাজনৈতিক সংগঠন গুলো কর্মসুচি পালন করতে পারত। না করাটা দুঃখজনক। উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগে ব্যর্থ হয়ে কথা হয় পৌর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদের সাথে তিনি জানান, সেদিন গণহত্যায় নিহতদের আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্বরন করি। দিনটি কেন পালন হলো না জানতে চাইলে তিনি বলেন বিষয়টি দুঃখ জনক। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহঃ রাশেদুল হক প্রধান বলেন, যেহেতু আমি নতুন এসেছি বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তাছাড়া কোন রাজনৈতিক সংগঠন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে আমাকে আগে থেকে বিষয়টি অবগত করা হয়নি।