ছেড়ে দেয়ার কৌশলে- জুয়ারীরা হলো মাদকাসক্ত!
https://www.obolokon24.com/2017/04/blog-post_22.html
ওই তিন জুয়ারী ধনীর ঘরের সন্তান। তারা লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা। ওদের নামে মামলা করা যাবে না। তাই সু-কৌশলে নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ থানার ওসি বজলুর রশীদ তিন জুয়ারীকে মাদকাসক্ত বানিয়ে গতকাল শুক্রবার সকালে তাদের রংপুরের মাদক নিরাময় কেন্দ্রে প্রেরনের নামে ছেড়ে দেন? বাস্তবতায় ওই তিন জুয়ারীকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময় ছেড়ে দেয়া হয়, ঠিক এ ভাবেই কাহিনী তৈরী করে। জুয়ারী তিনজন হলো রংপুরের পাগলাপীর এলাকার আলমগীর হোসেন(৪৮) একই এলাকার যোবায়ের উদ্দিন (৫০) ও নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন(৫০)।
এলাকাবাসী জানায় কিশোরীগঞ্জ উপজেলার ৯টি ইউনিয়নকে শতভাগ মাদকমুক্ত ঘোষনার পরিকল্পনা নেয় থানার ওসি বজলুর রশীদ। এ জন্য তিনি বেশ প্রচার প্রচারনায় সভাসমাবেশ করছেন বিভিন্ন স্থানে। এর মধ্যে বেশ কিছু মাদকাসক্ত যুবককে আটক করে উক্ত নিরাময় কেন্দ্রে প্রেরন করেন। কিন্তু মাদক যারা বিক্রি করছে তারা থাকছে একেবারে ধরা ছোয়ার বাহিরে। ্এলাকাবাসীর অভিযোগ মাদক বিক্রিতারা যে রাজার হালেই রয়েছে। তাদের সঙ্গে ওসির গোপন চুক্তিও চলছে!
অনেক মাদকাসক্ত যুবকের পরিবার জানায় এলাকা মাদকমুক্ত হোক এটা আমরাও চাই। আমাদের সন্তানরা বিপদগামী হচ্ছে। কিন্তু মাদকমুক্তর নামে ওসি যেন ব্যবসা ফেঁদে বসেছে।
তারা অভিযোগ করে জানায় তাদের মাদকাসক্ত সন্তানদের মাদকাসক্ত কেন্দ্রে প্রেরনে ওসির সঙ্গে রংপুরের মাদক নিরাময় কেন্দ্রের গোপন চুক্তি রয়েছে। এই চুক্তিতে ওসি প্রতি মাদকাসক্ত যুবকের জন্য বখরা পান ১৫ হাজার টাকা করে। মাদকাসক্ত কেন্দ্রে গিয়ে ২৯ দিনের চিকিৎসার জন্য প্রথমে ৫ হাজার টাকায় ভর্তি করতে হয়। নাম মাত্র চিকিৎসা শেষে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে ৪০ হাজার টাকা দিয়ে সন্তানকে বের করে আনতে হচ্ছে। এ্ই ৪০ হাজার টাকার মধ্যে ১৫ হাজার কমিশন পান ওসি!
এদিকে উক্ত তিন জুয়ারী সর্ম্পকে এলাকাবাসী জানায় উপজেলার গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের পূর্ব দলিরাম গ্রামে প্রতি রাতে বড় ধরনের জুয়ার আসর বসে। এলাকাটি নীলফামারী জেলার ও রংপুর জেলার গঙ্গ্চড়া সীমানারেখা। সেখানে বিভিন্ন এলাকার ধনী পরিবারের লোকজন লাখ লাখ টাকা নিয়ে এই আসরে অংশ নেয়। এক কার্ড,তিন কার্ড, কাটাকাটি তাস সব চলে এখানে। প্রতি রাতে এলাকার প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এই জুয়ার আসর চলছে। সেখানেও রয়েছে ওসির সঙ্গে আঁতাত। নিয়মিত বখরা না পাওয়ার কারনে সেদিন ঘটনাটি ঘটে। এলাকাবাসী ওই জুয়ার আসর চিরকালের জন্য বন্ধের দাবি তুলেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরনে জানা যায় গত বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) রাত ১২টায় ওই জুয়ার আসরে কিশোরীগঞ্জ থানার এসআই খাদেমুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালালে শতাধিক জুয়ারী পালিয়ে যায়। এ সময় উক্ত তিন জুয়ারী আটক হয়। তাদের পুলিশ থানায় নিয়ে যায়।
সুত মতে ওই তিন জুয়ারীকে প্রথমে ভ্রাম্যমান আদালতে প্রেরনে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু বিভিন্ন স্থান হতে তদবির আসতে থাকলে জুয়ারী তিনজনকে মাদকাসক্ত বানিয়ে নিরাময় কেন্দ্রে প্রেরনের নামে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠে ওসির বিরুদ্ধে।
তবে কিশোরীগঞ্জ থানার ওসি বজলুর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন মাদকমুক্ত করতে এলাকায় যা যা করতে হয় আমি তাই করছি। এখানে মাদক থাকবে, না হয় আমি থাকবো। ওসি তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ও সেখানে জুয়ার আসরের বিষয়টি অস্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান ওই তিনজনকে আটকের সময় তাদের কাছে একটি ফেন্সিডিলের বোতল পাওয়া গিয়েছিল। ওরা সেখানে মাদক সেবন করছিল। তাই তাদের রংপুর মাদক নিরাময় কেন্দ্রে প্রেরন করা হয়েছে। তিনি সাংবাদিকদের আরো বলেন ভ্রাম্যমান আদালতে তাদের দিলে লঘু (কম) সাজা হয়। মাদক নিরাময় কেন্দ্রে পাঠালে কম করে এক মাস থাকতে হয়। তাই সেখানে পাঠানো হয়েছে।