নীলফামারীতে জেলা পরিষদ নির্বাচনে শান্তিপূর্ন ভাবে ভোট গ্রহন চলছে
https://www.obolokon24.com/2016/12/election_57.html
ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়,নীলফামারী ২৮ ডিসেম্বর॥
জেলার পরিষদের নির্বাচনের শান্তিপূর্ন ভাবে ভোটগ্রহন চলছে নীলফামারীর ছয় উপজেলার ৬১ ইউনিয়ন ও চারটি পৌরসভা এলাকার ১৫টি ওয়ার্ডে। আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় ভোট গ্রহন। চলবে টানা ৫ ঘন্টা অর্থাৎ দুপুর দুইটা পর্যন্ত।
ভোট কেন্দ্রগুলোর বাহিরে সাধারন মানুষজন ও প্রার্থীদের সমর্থকদের সরগম থাকলেও এই নির্বাচনে শুধু মাত্র হাতে গোনা জনপ্রতিনিধিগন ভোটার হওয়ায় ভোট কেন্দ্রগুলো দেখলে মনেই হবেনা ভেতরে ভোটগ্রহন চলছে। বিক্ষিপ্তভাবে একজন দুই জন করে জনপ্রতিনিধি ভোটারগন এসে তাদের ভোট প্রয়োগ করে চলে যেতে দেখা যায়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় ভোট গ্রহনকেকেন্দ্র করে ভোট কেন্দ্র ও ভোট কেন্দ্রের বাহিরে ব্যাপক নিরাপত্তা বলয় তৈরী করা হয়েছে। ভোট কেন্দ্রে ও আশপাশের নিরাপত্তায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ছাড়া তিন প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ১৩ নম্বর র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর ৫০ সদস্যের ছয়টি করে টিম টহল দিচ্ছে ।
বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলে জানা গেছে সকাল ৯টা হতে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত গড়ে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে গড়ে ২৫ থেকে ৩০জন ভোটার সেই পর্যন্ত তাদের ভোট গ্রয়োগ করে চলে গেছে। আশা করা হচ্ছে ভোট গ্রহনের শেষ সময় দুপুর দুইটা পর্যন্ত শতভাগ ভোট কাষ্ট হতে পারে।
চার নম্বর ওয়াডের ডালিয়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং অফিসার আবু রাহাত সোহেল রানা জানান তার কেন্দ্রের ৫২ জন ভোটারের মধ্যে সকাল পনে ১২টা পর্যন্ত সকল ভোটারই এসে তাদের ভোট গ্রয়োগ করে চলে গেছে।
তিন নম্বর ওয়ার্ডের ডিমলা উপজেলার জনতা ডিগ্রী কলেজ ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আশরাফ-উজ জামান সরকার জানান সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সেখানে ২০জন ভোটার ভোট গ্রয়োগ করেছেন। এখানে মোট ভোটার ৫২ জন।
দুই নম্বর ওয়ার্ডের ডোমার উপজেলার পাঙ্গা মহেশ চন্দ্র লালা উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন ওই কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৬৮ জন। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ৩০ জন ভোটার ভোট গ্রয়োগ করেছেন।
১০ নম্বর ওয়ার্ডের ছমির উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজে ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ধীরেন্দ্র নাথ রায় বলেন এখানে ভোটার সংখ্যা ৫৫ জন। এরমধ্যে ১২ জন পুরুষ ভোটার তাদের ভোট গ্রয়োগ করলেও তখন পর্যন্ত কোন নারী ভোটার এসে ভোট প্রদান করেনি।
জেলা পরিষদ নির্বাচনের নীলফামারীর রির্টানীং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক জাকীর হোসেন ও জেলা পুলিশ সুপার জাকির হোসেন খান সকাল ৯টার পর হতে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দশ নম্বর ওয়ার্ডের ছমির উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজ ভোট কেন্দ্রে জেলা প্রশাসক জাকীর হোসেন জানান ১৫টি ওয়ার্ডের প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ন পরিবেশে ভোট গ্রহন চলছে। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
একই কেন্দ্রে পরিদর্শনে আসা পুলিশ সুপার জাকির হোসেন খান জানান, ১৫টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ১২টি এবং সাধারন ৩টি। প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য একটি ও প্রতি উপজেলা এলাকার জন্য ৩টি করে মোট টহলরত পুলিশ বাহিনীর মোবাইল টিম ৩৩টি রাখা হয়েছে। এ ছাড়া স্ট্রাইকিং থানা রির্জাভ রাখা হয়েছে ৬টি এবং স্ট্যান্ডবাই একটি। নির্বাহী ম্যাজিস্টেটের সংখ্যা ১২জন ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা একজন জন দায়িত্ব পালন করছে। এ ছাড়া প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে আগ্নে অস্ত্র সহ একজন করে ইন্সপেক্টর/ এসআই, একজন এ,এস আই ও তিনজন কনস্টেবল সহ ৫ জন এবং অস্ত্র সহ আনসার পিসি একজন, আনসার এপিসি একজন ও অঙ্গীভূত আনসার/ভিডিপি সদস্য ১৫ রাখা হয়েছে। এরমধ্যে পুরুষ ৭জন ও নারী ৮জন লাঠিসহ দায়িত্ব পালন করছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সার্বক্ষনিক তদারকির দায়িত্বে রয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু মারুফ হোসেন, সহকারী পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান (সৈয়দপুর সার্কেল) ও সহকারী পুলিশ সুপার ফিরোজ কবীর (সদর সার্কেল)।
নির্বাচনের সহকারী রিটার্নীং কর্মকর্তা জেলা নির্বাচন অফিসার জিলহাজ উদ্দিন জানান নীলফামারীর ৬টি উপজেলা, ৪ টি পৌরসভা ও ৬১টি ইউনিয়নের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ভোটার মোট ৮৫৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৬৫২ এবং নারী ২০৩ জন। এ নির্বাচনে একজন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পাঁচজন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ও ১৫ জন সাধারন সদস্য পদের জন্য এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
প্রথমবারের মত জেলা পরিষদের এই নির্বাচনে নীলফামারীতে দুই জন চেয়ারম্যান প্রাথী, সদস্য পদে ৬৬ এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চেয়ারম্যান পদে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারা হচ্ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট মমতাজুল হক (আনরস) ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন (মটরসাইকেল)।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতেঃ- কেতকীবাড়ি, ভোগডাবুড়ী, জোড়াবাড়ী ও বোড়াগাড়ী ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ১ নম্বর ওয়ার্ডে সাধরণ কাউন্সিলার প্রার্থী ৬ জন। ১ নম্বর ওয়ার্ডের ভোট গ্রহন চলছে মির্জাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৫৩ জন।
ডিমলা, বালাপাড়া, বামুনিয়া, পাঙ্গামটুকপুর ও গোমনাতী ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ২ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রার্থী ৬ জন। এই ওয়ার্ডের ভোট গ্রহন চলছে পাঙ্গা মহেশ লালা উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৬৮ জন।
পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ী ও খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভোট গ্রহন চলছে জনতা ডিগ্রি কলেজে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৫২ জন।
গয়াবাড়ী, নাউতারা, খালিশা চাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ৪ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রার্থী ৫ জন। এই ওয়াডে ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ডালিয়া দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৫২ জন।
কাঁঠালী, গোলমুন্ডা, বালাগ্রাম ও জলঢাকা পৌরসভা নিয়ে গঠিত ৫ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রাথী ৫ জন। ওয়ার্ডের ভোটগ্রহন চলছে জলঢাকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৫২ জন।
গোলনা, ধর্মপাল, শিমুলবাড়ী ও মীরগঞ্জ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রার্থী ৩ জন। এই ওয়ার্ডের ভোট গ্রহন হচ্ছে মীরগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৫২ জন।
ডোমার পৌরসভা, সোনারায়, হরিণচড়া ও ডোমার ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ৭ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রার্থী ৫ জন। এই ওয়ার্ডের ভোট গ্রহন চলছে ডোমার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৫৩ জন।
চওড়াবড়গাছা, গোড়গ্রাম, পলাশবাড়ী ও লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ৮ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রার্থী ৬ জন। এইখানে ভোট গ্রহন চলছে পলাশবাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানে ভোটার সংখ্যা ৫২ জন।
টুপামারী, রামনগর, কচুকাটা ও পঞ্চপুকুর ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ৯ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রার্থী ৩ জন। এই ওয়ার্ডে ভোট গ্রহন চলছে চাঁদেরহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৫২ জন।
নীলফামারী পৌরসভা, ইটাখোলা, কুন্দুপুকুর ও খোকশাবাড়ী ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ১০ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রাথী ৩ জন। ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ছমির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৫৫ জন।
সোনারায়, সংগলশী, চড়াইখোলা ও চাপড়া সরমজানী ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ১১ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রার্থী ৪ জন। এখানে ভোট গ্রহন হচ্ছে চড়াইখোলা নগর দারোয়ানী উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৫১ জন।
সৈয়দপুর পৌরসভা, বাঙ্গালীপুর, বোতলাগাড়ী ও কামারপুকুর ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ১২ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রার্থী ৪ জন। ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হচ্ছে সৈয়দপুর লায়ন্স স্কুল এ্যান্ড কলেজে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৬২ জন।
বাহাগিলী, পুটিমারী, নিতাই, কাশিরাম বেলপুকুর ও খাতামধুপুর ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রাথী ৪ জন। ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হচ্ছে নিতাই উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৬৭ জন।
খুটামারা, ডাউয়াবড়ী, শৌলমারী, কৈমারী ও বড়ভিটা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রাথী ৪ জন। ভোট গ্রহন চলছে বিন্নাকুড়ি বিসিএস উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৬৭ জন।
মাগুড়া গাড়াগ্রাম, রনচন্ডি, কিশোরীগঞ্জ ও চাঁদখানা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার ৬জন। ভোট গ্রহন চলছে কিশোরীগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৬৭ জন।
অপর দিকেঃ- কেতকীবাড়ি, ভোগডাবুড়ী, জোড়াবাড়ী, বোড়াগাড়ী, ডিমলা, বালাপাড়া, বামুনিয়া, পাঙ্গামটুকপুর, গোমনাতী, পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ী ও খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত ১ নম্বর ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ৩ জন।
গয়াবাড়ী, নাউতারা, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, কাঁঠালী, গোলমুন্ডা, বালাগ্রাম, জলঢাকা পৌরসভা, গোলনা, ধর্মপাল, শিমুলবাড়ী ও মীরগঞ্জ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত ২ নম্বর ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ৫ জন।
ডোমার পৌরসভা, সোনারায়, হরিণচড়া, ডোমার ইউনিয়ন, চওড়াবড়গাছা, গোড়গ্রাম, পলাশবাড়ী, লক্ষ্মীচাপ, টুপামারী, রামনগর, কচুকাটা ও পঞ্চপুকুর ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত ৩ নম্বর ওয়াডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ৩ জন।
নীলফামারী পৌরসভা, ইটাখোলা, কুন্দুপুকুর, সোনারায়, সংগলশী, চড়াইখোলা, চাপড়া সরমজানী, সৈয়দপুর পৌরসভা, বাঙ্গালীপুর, বোতলাগাড়ী ও কামারপুকুর ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত ৪ নম্বর ওয়াডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ২ জন।
বাহাগিলী, পুটিমারী, নিতাই, কাশিরাম বেলপুকুর, খাতামধুপুর, খুটামারা, ডাউয়াবড়ী, শৌলমারী, কৈমারী ও বড়ভিটা, মাগুড়া, গাড়াগ্রাম, রনচন্ডি, কিশোরীগঞ্জ ও চাঁদখানা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত ৫ নম্বর ওয়াডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ৪ জন।
জেলার পরিষদের নির্বাচনের শান্তিপূর্ন ভাবে ভোটগ্রহন চলছে নীলফামারীর ছয় উপজেলার ৬১ ইউনিয়ন ও চারটি পৌরসভা এলাকার ১৫টি ওয়ার্ডে। আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় ভোট গ্রহন। চলবে টানা ৫ ঘন্টা অর্থাৎ দুপুর দুইটা পর্যন্ত।
ভোট কেন্দ্রগুলোর বাহিরে সাধারন মানুষজন ও প্রার্থীদের সমর্থকদের সরগম থাকলেও এই নির্বাচনে শুধু মাত্র হাতে গোনা জনপ্রতিনিধিগন ভোটার হওয়ায় ভোট কেন্দ্রগুলো দেখলে মনেই হবেনা ভেতরে ভোটগ্রহন চলছে। বিক্ষিপ্তভাবে একজন দুই জন করে জনপ্রতিনিধি ভোটারগন এসে তাদের ভোট প্রয়োগ করে চলে যেতে দেখা যায়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় ভোট গ্রহনকেকেন্দ্র করে ভোট কেন্দ্র ও ভোট কেন্দ্রের বাহিরে ব্যাপক নিরাপত্তা বলয় তৈরী করা হয়েছে। ভোট কেন্দ্রে ও আশপাশের নিরাপত্তায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ছাড়া তিন প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ১৩ নম্বর র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর ৫০ সদস্যের ছয়টি করে টিম টহল দিচ্ছে ।
বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলে জানা গেছে সকাল ৯টা হতে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত গড়ে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে গড়ে ২৫ থেকে ৩০জন ভোটার সেই পর্যন্ত তাদের ভোট গ্রয়োগ করে চলে গেছে। আশা করা হচ্ছে ভোট গ্রহনের শেষ সময় দুপুর দুইটা পর্যন্ত শতভাগ ভোট কাষ্ট হতে পারে।
চার নম্বর ওয়াডের ডালিয়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং অফিসার আবু রাহাত সোহেল রানা জানান তার কেন্দ্রের ৫২ জন ভোটারের মধ্যে সকাল পনে ১২টা পর্যন্ত সকল ভোটারই এসে তাদের ভোট গ্রয়োগ করে চলে গেছে।
তিন নম্বর ওয়ার্ডের ডিমলা উপজেলার জনতা ডিগ্রী কলেজ ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আশরাফ-উজ জামান সরকার জানান সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সেখানে ২০জন ভোটার ভোট গ্রয়োগ করেছেন। এখানে মোট ভোটার ৫২ জন।
দুই নম্বর ওয়ার্ডের ডোমার উপজেলার পাঙ্গা মহেশ চন্দ্র লালা উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন ওই কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৬৮ জন। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ৩০ জন ভোটার ভোট গ্রয়োগ করেছেন।
১০ নম্বর ওয়ার্ডের ছমির উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজে ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ধীরেন্দ্র নাথ রায় বলেন এখানে ভোটার সংখ্যা ৫৫ জন। এরমধ্যে ১২ জন পুরুষ ভোটার তাদের ভোট গ্রয়োগ করলেও তখন পর্যন্ত কোন নারী ভোটার এসে ভোট প্রদান করেনি।
জেলা পরিষদ নির্বাচনের নীলফামারীর রির্টানীং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক জাকীর হোসেন ও জেলা পুলিশ সুপার জাকির হোসেন খান সকাল ৯টার পর হতে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দশ নম্বর ওয়ার্ডের ছমির উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজ ভোট কেন্দ্রে জেলা প্রশাসক জাকীর হোসেন জানান ১৫টি ওয়ার্ডের প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ন পরিবেশে ভোট গ্রহন চলছে। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
একই কেন্দ্রে পরিদর্শনে আসা পুলিশ সুপার জাকির হোসেন খান জানান, ১৫টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ১২টি এবং সাধারন ৩টি। প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য একটি ও প্রতি উপজেলা এলাকার জন্য ৩টি করে মোট টহলরত পুলিশ বাহিনীর মোবাইল টিম ৩৩টি রাখা হয়েছে। এ ছাড়া স্ট্রাইকিং থানা রির্জাভ রাখা হয়েছে ৬টি এবং স্ট্যান্ডবাই একটি। নির্বাহী ম্যাজিস্টেটের সংখ্যা ১২জন ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা একজন জন দায়িত্ব পালন করছে। এ ছাড়া প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে আগ্নে অস্ত্র সহ একজন করে ইন্সপেক্টর/ এসআই, একজন এ,এস আই ও তিনজন কনস্টেবল সহ ৫ জন এবং অস্ত্র সহ আনসার পিসি একজন, আনসার এপিসি একজন ও অঙ্গীভূত আনসার/ভিডিপি সদস্য ১৫ রাখা হয়েছে। এরমধ্যে পুরুষ ৭জন ও নারী ৮জন লাঠিসহ দায়িত্ব পালন করছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সার্বক্ষনিক তদারকির দায়িত্বে রয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু মারুফ হোসেন, সহকারী পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান (সৈয়দপুর সার্কেল) ও সহকারী পুলিশ সুপার ফিরোজ কবীর (সদর সার্কেল)।
নির্বাচনের সহকারী রিটার্নীং কর্মকর্তা জেলা নির্বাচন অফিসার জিলহাজ উদ্দিন জানান নীলফামারীর ৬টি উপজেলা, ৪ টি পৌরসভা ও ৬১টি ইউনিয়নের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ভোটার মোট ৮৫৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৬৫২ এবং নারী ২০৩ জন। এ নির্বাচনে একজন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পাঁচজন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ও ১৫ জন সাধারন সদস্য পদের জন্য এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
প্রথমবারের মত জেলা পরিষদের এই নির্বাচনে নীলফামারীতে দুই জন চেয়ারম্যান প্রাথী, সদস্য পদে ৬৬ এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চেয়ারম্যান পদে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারা হচ্ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট মমতাজুল হক (আনরস) ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন (মটরসাইকেল)।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতেঃ- কেতকীবাড়ি, ভোগডাবুড়ী, জোড়াবাড়ী ও বোড়াগাড়ী ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ১ নম্বর ওয়ার্ডে সাধরণ কাউন্সিলার প্রার্থী ৬ জন। ১ নম্বর ওয়ার্ডের ভোট গ্রহন চলছে মির্জাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৫৩ জন।
ডিমলা, বালাপাড়া, বামুনিয়া, পাঙ্গামটুকপুর ও গোমনাতী ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ২ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রার্থী ৬ জন। এই ওয়ার্ডের ভোট গ্রহন চলছে পাঙ্গা মহেশ লালা উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৬৮ জন।
পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ী ও খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভোট গ্রহন চলছে জনতা ডিগ্রি কলেজে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৫২ জন।
গয়াবাড়ী, নাউতারা, খালিশা চাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ৪ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রার্থী ৫ জন। এই ওয়াডে ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ডালিয়া দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৫২ জন।
কাঁঠালী, গোলমুন্ডা, বালাগ্রাম ও জলঢাকা পৌরসভা নিয়ে গঠিত ৫ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রাথী ৫ জন। ওয়ার্ডের ভোটগ্রহন চলছে জলঢাকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৫২ জন।
গোলনা, ধর্মপাল, শিমুলবাড়ী ও মীরগঞ্জ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রার্থী ৩ জন। এই ওয়ার্ডের ভোট গ্রহন হচ্ছে মীরগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৫২ জন।
ডোমার পৌরসভা, সোনারায়, হরিণচড়া ও ডোমার ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ৭ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রার্থী ৫ জন। এই ওয়ার্ডের ভোট গ্রহন চলছে ডোমার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৫৩ জন।
চওড়াবড়গাছা, গোড়গ্রাম, পলাশবাড়ী ও লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ৮ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রার্থী ৬ জন। এইখানে ভোট গ্রহন চলছে পলাশবাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানে ভোটার সংখ্যা ৫২ জন।
টুপামারী, রামনগর, কচুকাটা ও পঞ্চপুকুর ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ৯ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রার্থী ৩ জন। এই ওয়ার্ডে ভোট গ্রহন চলছে চাঁদেরহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৫২ জন।
নীলফামারী পৌরসভা, ইটাখোলা, কুন্দুপুকুর ও খোকশাবাড়ী ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ১০ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রাথী ৩ জন। ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ছমির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৫৫ জন।
সোনারায়, সংগলশী, চড়াইখোলা ও চাপড়া সরমজানী ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ১১ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রার্থী ৪ জন। এখানে ভোট গ্রহন হচ্ছে চড়াইখোলা নগর দারোয়ানী উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৫১ জন।
সৈয়দপুর পৌরসভা, বাঙ্গালীপুর, বোতলাগাড়ী ও কামারপুকুর ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ১২ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রার্থী ৪ জন। ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হচ্ছে সৈয়দপুর লায়ন্স স্কুল এ্যান্ড কলেজে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৬২ জন।
বাহাগিলী, পুটিমারী, নিতাই, কাশিরাম বেলপুকুর ও খাতামধুপুর ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রাথী ৪ জন। ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হচ্ছে নিতাই উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৬৭ জন।
খুটামারা, ডাউয়াবড়ী, শৌলমারী, কৈমারী ও বড়ভিটা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার প্রাথী ৪ জন। ভোট গ্রহন চলছে বিন্নাকুড়ি বিসিএস উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৬৭ জন।
মাগুড়া গাড়াগ্রাম, রনচন্ডি, কিশোরীগঞ্জ ও চাঁদখানা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার ৬জন। ভোট গ্রহন চলছে কিশোরীগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৬৭ জন।
অপর দিকেঃ- কেতকীবাড়ি, ভোগডাবুড়ী, জোড়াবাড়ী, বোড়াগাড়ী, ডিমলা, বালাপাড়া, বামুনিয়া, পাঙ্গামটুকপুর, গোমনাতী, পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ী ও খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত ১ নম্বর ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ৩ জন।
গয়াবাড়ী, নাউতারা, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, কাঁঠালী, গোলমুন্ডা, বালাগ্রাম, জলঢাকা পৌরসভা, গোলনা, ধর্মপাল, শিমুলবাড়ী ও মীরগঞ্জ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত ২ নম্বর ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ৫ জন।
ডোমার পৌরসভা, সোনারায়, হরিণচড়া, ডোমার ইউনিয়ন, চওড়াবড়গাছা, গোড়গ্রাম, পলাশবাড়ী, লক্ষ্মীচাপ, টুপামারী, রামনগর, কচুকাটা ও পঞ্চপুকুর ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত ৩ নম্বর ওয়াডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ৩ জন।
নীলফামারী পৌরসভা, ইটাখোলা, কুন্দুপুকুর, সোনারায়, সংগলশী, চড়াইখোলা, চাপড়া সরমজানী, সৈয়দপুর পৌরসভা, বাঙ্গালীপুর, বোতলাগাড়ী ও কামারপুকুর ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত ৪ নম্বর ওয়াডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ২ জন।
বাহাগিলী, পুটিমারী, নিতাই, কাশিরাম বেলপুকুর, খাতামধুপুর, খুটামারা, ডাউয়াবড়ী, শৌলমারী, কৈমারী ও বড়ভিটা, মাগুড়া, গাড়াগ্রাম, রনচন্ডি, কিশোরীগঞ্জ ও চাঁদখানা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত ৫ নম্বর ওয়াডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ৪ জন।