গ্রাম বাংলায় গরু দিয়ে ধান মাড়াই আর নেই

আবু ছাইদঃ নানা  রঙ্গে রাঙ্গিয়ে ছয় ঋতুর দেশ বাংলাদেশ ।
সুজলা সুফলা শষ্যে শ্যমলা নদী মাতৃক এই বাংলাদেশ, রাখাল বালকের সুরলয় বাঁশির সুর, ভাওয়াইয়া সুরের গান, কৃষকের সরল ও উদার মন মানষিকতা সব মিলিয়ে ছয়টি ঋতুর। আর দেখলে মনে হয় একটি রঙ্গিন দেশ। এদেশের মানুষগুলোর ঘুম ভাঙ্গে নানা রকম প্রজাতীর পাখির নানা রকম সুরে। প্রাকৃতির বিভিন্নতায় পরিবর্তন হয় ঋতুর। প্রাকৃতির বিভিন্নতায় এখন এসেছে হেমন্তকাল। মাঠের ধানের ক্ষেতে সোনা রং ধরেছে। মাঠে এবং ঘরে কৃষকরা ধান কাটার উৎসবে মেতে উঠেছে। কৃষকরা দিনে হাজার ব্যস্ততা সেরে রাত ভর ধান মাড়াইয়ের কাজ করে। হাজারো ব্যস্ততা, অনেক কষ্টের পরেও কৃষাণ কৃষাণীরা মনের আনন্দে আর খুশিতে কাজ করে। নতুন চালের নতুন নতুন খাবারের মৌ মৌ গন্ধে ভেসে আসে প্রায় প্রতিটি কৃষক সহ সবার ঘর থেকে। তবে আধুনিক থেকে অত্যাধুনিক কালে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে কৃষি ক্ষেত্রেও। ধান রোপন, ধান কাটা, ধান বানা, ধান মাড়াই প্রতিটি ক্ষেত্রে ছোঁয়া লেগেছে বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিস্কারের। গরু দিয়ে লাঙ্গল টানা, মই দেয়া. কুশ্যি দিয়ে মাটি ভাঙ্গায় কৃষকদের কাদা মাখা জরাজীর্ণ অবস্থায় আর দেখা যায় না। সেচ দিয়ে পানি আর ট্রাক্টর দিয়ে হাল চাষ করে প্রয়োজন মিটাচ্ছে কৃষকরা। ফসল ফলানোর জন্য অল্প সময়ে জমি প্র¯তুত করে ফেলছে কৃষকরা। রোদে শরীরের ঘাম ঝরিয়ে, বৃষ্টিতে ভিজে জমিতে বীজ, সার ছিটাতে আর হয় না তার জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি তৈরী হয়েছে যার দ্বারা জমিতে বীজ সার ছিটাচ্ছে। প্রতিনিয়ত বাজারে নতুন নতুন কীটনাশক আসছে। যখন যেটা প্রয়োজন পরীক্ষা করে তা তখন প্রয়োগ করছে। ধানের আগাছা পরীস্কার করার জন্য ব্যবহার হচ্ছে যন্ত্র, ধান মাঠ থেকে কাটার ক্ষেত্রেও ব্যবহার হচ্ছে যন্ত্র। পান্থা খেয়ে দিন ভর কৃষকদের শরীরের ঘাম ঝরিয়ে আর ধান কাটতে হয় না। নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের কয়েক বছর আগেও সব কৃষকই গরু দিয়ে ধান মাড়াই করত। এখন সারা উপজেলা ঘুরে এমনটি আর দেখা যায় না। যদিও বা যায় তা খুব গরীব কৃষকদের বেলায়। সবাই এখন মেশিন দিয়েই ধান মাড়াই করে। এতে করে ব্যায় বেশী হয় কিন্তু সময় খুবই কম লাগে। এ বিষয়ে কৃষকদের সাথে কথা বললে তারা বলে গরু দিয়ে ধান মাড়াই কেন এই আধুনিকতায় দেশের অনেক ঐতিহ্যইতো হারিয়ে গেছে।