নীলফামারীতে আলু চাষীদের সড়ক অবরোধ

বিশেষ প্রতিনিধি ২২ নভেম্বর॥
নীলফামারী জেলা সদরের রামনগর ইউনিয়নের বিশমুড়ি গ্রামে অবস্থিত অংকুর সীড অ্যা- হিমাগারে আলু বীজ সরবরাহের দাবিতে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শণ করেন আলু চাষীরা।
এসময় নীলফামারী জলঢাকা ও কিশোরগঞ্জ  প্রধান সড়কের সকল প্রকার যোগায়োগ বন্ধ থাকে। পরে নীলফামারী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন ও নীলফামারী সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আলু চাষীদের সঙ্গে কথা বলে অবরোধ প্রতাহার করেন।
 বিক্ষুদ্ধ কৃষকদের দাবি তারা ওই হিমাগারে বীজ আলু রাখার পর সম্প্রতি তাদের বীজ সংরক্ষণের ভাড়ার টাকাও পরিশোধ করেছেন। কিন্তু হিমাগার কর্তৃপক্ষ দিনের পর দিন কৃষকদের সময় দিচ্ছেন কিন্তু তাদের সংরক্ষিত আলু বীজ সরবরাহ করছেন না। এতে করে তাদের আগাম আলু রোপনের সময় পেড়িয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাষীরা।
হিমাগার কর্তৃপক্ষ বলছেন, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ একতরফা সিদ্ধান্তে হিমাগারে তালা দেওয়ায় তারা কৃষকদের আলূ বীজ সরবরাহ করতে পারছেন না।
এ সময় কথা বললে, রামনগর গ্রামের আলু চাষী মো. শফিয়ার রহমান (৬৫) বলেন, মুই কাচা ধান বেচে আট বস্তা আলুর ভাড়ার টাকা দিছু, চাইর বস্তা আলু দিছে, আর চাইর বস্তা আলু দেয়ছে না। ১৫দিন থাকি খালি মোক ঘুড়ায়ছে। আইজ দিবার চায়, কাইল দিবার চায় আলু আর দেয় না। আগুর আলু গাড়ির সময় পার হয়ছে।
কুন্দুপুকুর ইউনিয়নের বালাপাড়া গ্রামের আবুল কালাম (৪৫) বলেন, আমি গত ১৩ তারিখ থেকে আলুর জন্য ঘুরছি, কিন্তু পাচ্ছি না। তিনি চার বস্তা আলু রেখেছেন এবং ইতিমধ্যে ভাড়াও পরিশোধ করেছেন বলে জানান। তিনি বলেন, আমরা এখন যে জমিতে আলু চাষ করবো ওই আলু তুলে সেখানে বোরো লাগাবো। কিন্তু দেড়িতে লাগালে ওই জমিতে বোরো আবাদ হবে না। এতে আমরা দারুন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবো। এমনি অভিযোগ করেন, পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের আমিনুল ইসলাম, হাতিবান্ধা গ্রামের আজিজার রহমান, টুপামারী গ্রামের মানিক চাঁদসহ অনেকে।
এ বিষয়ে কথা বললে ওই হিমাগারের প্রতিনিধি মো. খালিদ হোসেন বলেন, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক নীলফামারী শাখা থেকে আলু ক্রয়ের জন্য অংকুর বীজ অ্যা- হিমাগার লিমিটেডের নামে সাত কোটি টাকা প্লেজ ঋণ মঞ্জুর হয়। ওই ঋণের টাকা থেকে হিমাগারের কিস্তি হিসেবে দুই কোটি ৪৭ লাখ ৬২ হাজার টাকা কেটে রেখে বাকী টাকা আলু কেনার জন্য দেন রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক নীলফামারী শাখা। আমরা ওই টাকায় আলু কিনে ২৬ মে ২০১৬ থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত মজুদ আলু বিক্রয় করে পাঁচ কোটি ৮১ লাখ ৫৭ হাজার টাকা ব্যাংকে জমা দিয়েছি। ব্যাংকের ছাড়কৃত সমুদ্বয় অর্থ পরিশোধ করা সত্বেও ব্যাংকের ব্যাবস্থাপক ও জোনাল ব্যবস্থাপক হিমাগারে তালা দেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বললে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের জোনাল ব্যবস্থাপক মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, আমরা কৃষকের আলু যেসব চেম্বারে আছে সেখানে তালা দেইনি। আমরা দুটি চেম্বারে তালা দিয়েছি, সেখানে প্লেজ ঋণের টাকায় কেনা আলু রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বললে নীলফামারী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, কৃষকরা তাদের আলু বীজ না পাওয়ার কারনে নীলফামারী -জলঢাকা- কিশোরগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে রাখেন। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের আস্বস্ত করলে তারা অবরোধ তুলে নেন।
এ বিষয়ে কথা বললে নীলফামারী জেলা প্রশাসক মো. জাকীর হোসেন বলেন, বিষয়টি সমাধানের জন্য  বিকেল চারটার দিকে আমার কার্যালয়ে ব্যাংক ও  হিমাগার কর্তৃপক্ষকে ডেকে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। কৃষকদের এখন উক্ত হিমাগার হতে তাদের সংরক্ষিত আলু উত্তোলনে কোন সমস্যা হবে না।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 100110199122893326

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item