সৈয়দপুরে শত শত গাড়ীর লাইন দিয়ে সড়ক অবরোধ ॥ দূর্ভোগ চরমে
https://www.obolokon24.com/2016/10/saidpur_6.html
ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা ও মটর শ্রমিকদের দ্বন্দ্ব
তোফাজ্জল হোসেন লুতু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি
সৈয়দপুর- নীলফামারী সড়কে ব্যাটারিচালিত অটো রিক্সা চলাচলকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট দ্বন্দ্বে আজ (বুধবার) প্রায় চার ঘন্টা রংপুর- দিনাজপুর মহাসড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। নীলফামারী জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন সৈয়দপুর শহর, ওয়াপদা মোড়, কেন্দ্রীয় টার্মিনাল এলাকায় বাস-মিনিবাস, পিকআপ যত্রতত্র দাঁড় করিয়ে এ অবরোধ সৃষ্টি করে। এতে করে সৈয়দপুরে ওয়াপদা মোড় ও টার্মিনাল এলাকায় রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে শত শত বিভিন্ন ধরনের যানবাহন আটকা পড়ে। আর এ সব যানবাহনে থাকা যাত্রী সাধারণ চরম দূর্ভোগের মধ্যে পড়েন। এ রিপোর্ট পাঠানো পর্যন্ত অবরোধ চলছিল। তবে দ্ব›ন্দ্ব নিরসনে প্রশাসনের উদ্যোগে নীলফামারী জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতি, নীলফামারী জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন ও ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা শ্রমিক নেতৃবৃন্দের নিয়ে সৈয়দপুর থানায় বৈঠক চলছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সৈয়দপুর শহরের দুই নম্বর রেল ঘুমটি এলাকায় গত ১ অক্টোবর যাত্রী উঠানোকে কেন্দ্র করে নীলফামারী জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের ও ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা চালককে মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই দিন সৈয়দপুর শহরে প্রায় এক ঘন্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। পরবর্তীতে পুলিশ প্রশাসনের মধ্যস্থতায় বৈঠকে বসে বিষয়টি সমঝোতা হয়। ওই সমঝোতা বৈঠকে সৈয়দপুর শহর থেকে সৈয়দপুর -নীলফামারী সড়কে উপকন্ঠ ঢেলাপীরহাট পর্যন্ত ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা চলাচলের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। এরপর থেকে সৈয়দপুর শহর থেকে ঢেলাপীর হাট পর্যন্ত ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা চলাচল করছিল। আর বিষয়টি মনিটরিংয়ের জন্য নীলফামারী জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের নিয়ে একটি মনিটরিং টীম করা হয়। মনিটরিং টিমের সদস্যরা সৈয়দপুর-নীলফামারী সড়কের ঢেলাপীর মোড়ে বসে বিষয়টি মনিটরিং করছিলেন। কিন্তু গত ১ অক্টোবরের সমঝোতা বৈঠকের সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করে গতকাল বুধবার দুপুরে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সার চালক যাত্রী নিয়ে সৈয়দপুর থেকে সরাসরি নীলফামারী যাওয়া চেষ্টা করে।
এতে মনিটরিংয়ে থাকা নীলফামারী জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ বাঁধা দেয়। এ সময় অটোরিক্সার চালকরা মটর মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করে। তখন তাদের মধ্যে তুমুল বচসার এক পর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। পরবর্তীতে খবরটি সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের শ্রমিক এবং পিকআপ ও মাইক্রোবাস শ্রমিকদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় মটর শ্রমিক ও অটোরিক্সা চালকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। এ সময় উভয় সংগঠনের শ্রমিকরা একে অপরের ওপর চড়াও হয় । এ সময় শহরের গোলাহাট এলাকায় একটি পিকআপের সামনে গ্লাসসহ কয়েকটি ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা ভাঙ্গচুর করে। এ সময় নীলফামারী জেলা বাস-মিনিবাস, মাইক্রোবাস,পিকআপ শ্রমিকরা সৈয়দপুর শহরের ভেতরে বিভিন্ন স্থানে ও রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের ওয়াপদা মোড়, টার্মিনালে যত্রতত্র বাস-মিনিবাস, পিকআপ রেখে অবরোধ সৃষ্টি করে। এতে করে গোটা সৈয়দপুর শহর একেবারে অচল হয়ে পড়ে। এছাড়াও মহাসড়কে অবরোধের কারণে শত শত বিভিন্ন যানবাহন আটকা পড়ে। আর এ সব যানবাহনে থাকা যাত্রী সাধারণ চরম দূর্ভোগের মধ্যে পড়েন। খবর পেয়ে উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ওয়াপদা মোড়ে পৌঁছে। এ সময় অনেক চেষ্টা করেও তারা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের মহাসড়ক অবরোধ তুলতে ব্যর্থ হয়।
পরে উপজেলা প্রশাসন মটর মালিক শ্রমিক ও অটোরিক্সা চালক সমিতির নেতৃবৃন্দকে নিয়ে সৈয়দপুর থানায় যৌথ বৈঠকে বসেন। এ রিপোর্ট পাঠানো( বিকেল সাড়ে ৫টা) পর্যন্ত সমঝোতা বৈঠক চলছিল। আর রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়ক ও সৈয়দপুর শহরের বিভিন্ন জায়গায় যানবাহন দিয়ে অবরোধও অব্যাহত ছিল।