জলঢাকা পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন
https://www.obolokon24.com/2016/09/jaldhaka_3.html
বিশেষ প্রতিনিধি, ০৩ সেপ্টেম্বর॥
নীলফামারীা জলঢাকা পৌরসভার মেয়র ফাহমিদ ফয়সাল কমেট ও পৌর সচিরের বিরুদ্ধে নিয়োগ বানিজ্য ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই পৌরসভার ছয় জন কাউন্সিলর। আজ শনিবার দুপুরে নীলফামারী প্রেসক্লাবে ওই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ৭ নম্বর ওয়াডের কাউন্সিলার রহমত আলী।সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলা হয়, চলতি বছরের গত ১২ জুলাই জলঢাকা পৌরসভা মেয়র ও পৌর সচিব প্রহসনের পরীক্ষা নিয়ে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে জলঢাকা পৌরসভায় সাত জন কর্মচারী নিয়োগ দেন। যার মধ্যে ছয় জনের বাড়ি মেয়র ফাহমিদ ফয়সালের গ্রামের বাড়ি বগুলাগাড়ি এবং একজনের বাড়ি পৌরসভার সচিব আশরাফুজ্জামানের বাড়ি লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার কালীগঞ্জে। তিনি সচিবের স্বজন বলে দাবি করেন তারা।
কাউন্সিলররা বলেন, ১২ জুলাইয়ের প্রহসনের ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধের জন্য আমরা গত ১১ জুলাই জেলা প্রশাসককের কাছে আবেদন করলে জেলা প্রশাসক সুষ্ঠু ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্নের আস্বাস দেন। কিন্তু বাস্তবে পরীক্ষা নেয়া হয় প্রহসনের। পরে আমরা ২৩ জুলাই ওই নিয়োগ বাতিল ও মেয়রের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে জেলা প্রশাসকের কাছে আবারও লিখিত অভিযোগ করি। যার অনুলিপি দুর্নীতি দমন কমিশন দিনাজপুরে দেই। কিন্তু আমরা কোথাও কোনো বিচার না পেয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করি।
লিখিত বক্তব্যে কাউন্সিলরদের পক্ষে সাত নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রহমত আলী বলেন, শুধু নিয়োগ বানিজ্যই নয়, পৌরসভার সচিব আশরাফুজ্জামানের সহযোগিতায় পৌর মেয়র জলঢাকা পৌরসভার হাটবাজার ইজারা, হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের টাকা উত্তোলন করে ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এর প্রতিবাদ করলে আমাদের রক্ত চক্ষু দেখানো হয়।
রহমত আলী ছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, দুই নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিশ্বনাথ রায়, ছয় নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফজলুর রহমান, আট নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রনজিৎ কুমার রায়, নয় নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মহসীন আলী ও এক, দুই, তিন নম্বর সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর আফরোজা বেগমের পক্ষে তার স্বামী হাফিজুর রহমান।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে কথা বললে অভিযোগের সত্যতা অস্বীকার করে জলঢাকা পৌর মেয়র ফাহমিদ ফয়সাল কমেট বলেন, আমি তাদের অভিযোগের বিষয়গুলো শুনেছি। তাদের মুল বিষয় নিয়োগ। পৌরসভার কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে নিয়ম মেনে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়ে তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের চারজন প্রতিনিধি ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিরাই প্রশ্ন পত্র তৈরী করে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা গ্রহন এবং ফলাফল ঘোষনা করেন। এতে স্বচ্ছতা নিয়ে দ্বিমত করার কোনো সুযোগ নেই।
পৌরসভার রাজস্ব খাতের টাকা ভুয়া ভাউচারে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করে মেয়র বলেন, আগে পৌরসভার হাট ইজারা হতো সর্বচ্চ ৪৫ লাখ টাকায়। এবার ৭৫ লাখ ৫৫ হাজার পাঁচ শত টাকা ইজারা হয়েছে। অন্যান্য রাজস্ব আয়ও বেড়েছে। সকলের সম্মতিক্রমে রেজুলেশনের মাধ্যমে পৌরসভার উন্নয়ন কাজ চলছে। আমি কোথাও দুনীতি করলে তারা প্রমান করুক।
ফাহমিদ ফয়সাল পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, আমার বাবার সময়ে যারা বাবার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিলেন, তাদের কয়েকজন এবারও কাউন্সিলার নির্বাচিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। তারা চাচ্ছেন না, আমি জলঢাকা পৌরসভায় মেয়র থাকি।
উল্লেখ্য পৌর মেয়র ফাহমিদ ফয়সালের বাবা মরহুম আনোয়ারুল কবির চৌধুরী এর আগে জলঢাকা পৌর সভায় একাধিক সময়কালে মেয়র ছিলেন।