রংপুর কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষক এমপিও জালিয়াতি করেও চাকুরিতে বহাল
https://www.obolokon24.com/2016/08/rangpur53.html
রংপুর অবোলকন অফিস :
এমপিও জালিয়াতি করে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে চাকরিতে বহালসহ সরকারি বিধিমোতাবেক বেতনভাতার সুবিধা নিচ্ছেন রংপুর কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের একজন শিক্ষক। শুধু তাই নয়, স্কাউটিং কার্যক্রমসহ বিভিন্ন খাতেও রয়েছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতি করে অর্থ আতœসাতের অভিযোগ। এদিকে এমপিও জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা বোর্ড অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করার জন্য নির্দেশ দিলেও অজ্ঞাত কারণে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
জানা গেছে, রংপুর কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ফারুকুজ্জামান ইলাহি ফারুক ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক হলেও অর্থনীতি ও ভূগোল বিষয়ে নিয়োগের কাগজপত্র, গভর্নিংবডির রেজুলেশন, নিয়োগ বোর্ডের নম্বরপত্র ও শিক্ষকতা যোগ্যতার সনদপত্র জাল করে তা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দেখিয়ে নিজের এমপিও (মান্থলি পেমেন্ড অর্ডার) বা সরকারি বেতনভাতার অংশপ্রাপ্তির তালিকাভুক্ত হন। এরপর থেকে তিনি দীর্ঘ ১৬ বছর কালেক্টরেট স্কুলে চাকরি করে আসছেন। ভোগ করছেন এমপিও সুবিধা।
এমপিও জালিয়াতির বিষয়টি ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক নাহিদ ফরিদ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে জানালে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্ততরের তদন্তে তার অভিযোগ প্রমাণিত হয়। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব নুসরত জাবীন বানু স্বাক্ষরিত চিঠি গত ৭ জুন ২০১৬ দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠানো হয়।
চিঠিতে শিক্ষক ফারুকুজ্জামান ইলাহিকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে তার বিরুদ্ধে এমপিও জালিয়াতির মামলা করতে বলা হয়। এ পর্যন্ত তিনি বেতন বিলের বিপরীতে এতদিন যে সরকারি বেতনভাতার অংশপ্রাপ্তির অর্থ নিয়েছেন তাও সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে বলা হয়। কিন্তু নির্দেশের দু’মাস অতিবাহিত হলেও ওই অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
এদিকে গত ৪ আগষ্ট ২০১৬ তারিখে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড এর কলেজ পরিদর্শক স্বাক্ষরিত ৫৫১ নং স্মারকে অভিযুক্ত শিক্ষক ফারুকুজ্জামান ইলাহি ফারুককে চাকুরি হতে অপসারন এবং তার বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা করাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের গভর্ণিং বডির সভাপতিসহ সংশ্লিষ্টদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন বলেন, শিক্ষক ইলাহি ফারুক এর এমপিও জালিয়াতির বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত রয়েছি। চিঠির অনুলিপি পাওয়ার পর গত মাস থেকে তার বেতন উত্তোলন প্রক্রিয়া বন্ধ রেখেছি। দ্রুত আইনি পরামর্শসহ কলেজের গভর্ণিং বডির সভাপতির অনুমতিক্রমে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে রুপসী রংপুর ওপেন স্কাউট গ্র“পের ব্যাংক এ্যকাউন্ট খুলতে শিক্ষক ইলাহি ফারুক গ্র“প সভাপতি মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান এর অনুমতি ছাড়া অন্যজনকে দিয়ে স্বাক্ষর জালিয়াতি করেন। গ্র“প সভাপতিকে অবগত না করে স্বাক্ষর জালিয়াতি করার বিষয়টিকে অনৈতিক কাজ উল্লেখ করে গত ০৮ মে ২০১৬ তারিখে চাকুরি থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন কলেজের গভর্ণিং বডির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার।
এদিকে এমপিও জালিয়াতি এবং স্কাউটিং কার্যক্রমে গ্র“প স্বাক্ষর জালিয়াতির পরও রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে অভিযুক্ত শিক্ষক ফারুকুজ্জামান এলাহি ফারুক সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা গ্রহণের পাশাপাশি স্কাউটিং কার্যক্রমের দায়িত্ব বহাল তবিয়তেই পালন করছেন বলে জানা গেছে।