দিনাজপুর বোর্ডে পাসের হার ৭০.৬৪। পাশের তালিকায় নেই ৮ কলেজ
https://www.obolokon24.com/2016/08/hsc_18.html
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডমাহবুবুল হক খান, দিনাজপুর: দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত ২০১৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। গড় পাশের হার ৭০ দশমিক ৬৪ শতাংশ। বৃহস্পতিবার (১৮ আগষ্ট) দুপুর ১টায় দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. তোফাজ্জুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন।
দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শক্ষাবোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত ২০১৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ১ লাখ ৪ হাজার ৬৭৪ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় উপস্থিত ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ৯৬ জন। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৭২ হাজার ৮২৯ জন পরীক্ষার্থী। গড় পাশের হার ৭০ দশমিক ৬৪ শতাংশ। তবে এবারের এই বোর্ডের অধীনে ৮টি কলেজ থেকে কেউই পাশ করতে পারেনি।
ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের গড় পাশের হার বেশী। ছাত্রীদের পাশের হার ৭৩.২৩ শতাংশ এবং ছাত্রদের পাশের হার ৬৮.৩৩ শতাংশ। তবে এবার পাশের হার ও জিপিএ আগের বারের চেয়ে সামান্য বেড়েছে।
এবারে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ হাজার ৮৯৯ জন। যা গতবার পেয়েছিল ২ হাজার ৩৯৫ জন শিক্ষার্থী। তবে এবারে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ছাত্রদের সংখ্যা বেশী। ছাত্রদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৩৩৪ জন ও ছাত্রীদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৫৬৫জন।
বিজ্ঞান বিভাগে ২৫ হাজার ৩৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ন হয়েছে ১৯ হাজার ৪০৩ জন। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ হাজার ৫৬২ জন। বিজ্ঞান বিভাগের গড় পাশের হার ৭৭.৪৯ শতাংশ।
মানবিক বিভাগে ৬১ হাজার ৫৭৮ জনের মধ্যে ৪২ হাজার ১০৯ জন পরীক্ষার্থী উত্তীর্ন হয়েছে। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ২৭২ জন। মানবিক বিভাগে গড় পাশের হার ৬৮.৩৮ শতাংশ।
ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১৬ হাজার ৪৮০ জনের মধ্যে উত্তীর্ন হয়েছে ১১ হাজার ৩১৭ জন। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৫ জন। এ বিভাগে গড় পাশের হার ৬৮.৬৭ শতাংশ। বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে গড় পাশের হার ৭০.৬৪ শতাংশ।
এদিকে কয়েক বছরে ফলাফল ছিল নিম্নরুপ- ২০০৯ সালে ৫৯ হাজার ৩৯৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩২ হাজার ৭২২ জন উত্তীর্ন হয়। গড় পাশের হার ছিল ৫৫.৯০ ভাগ। ২০১০ সালে ৭৩ হাজার ৮৯৮ জন পরীক্ষার্থী মধ্যে ৪৯ হাজার ২০২ জন উত্তীর্ন হয়। পাশের হার ছিল ৬৭.৫৪ ভাগ। ২০১১ সালে ৭৫ হাজার ৪৫৭ জনের মধ্যে উত্তীর্ণ হয় ৪৮ হাজার ৬৮৫ জন। পাশের হার ছিল ৬৬.১৮ ভাগ, ২০১২ সালে ৮৭ হাজার ৫০৪ পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয় ৬৪ হাজার ৬৭৯ জন। পাশের হার ছিল ৭৫.৪১ ভাগ, ২০১৩ সালে ৮৮ হাজার হাজার ৪৪৪ মধ্যে ৬৩ হাজার ৬২৪ জন পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়। পাশের হার ছিল ৭১.৯৪ ভাগ, ২০১৪ সালে ৯৭ হাজার ৩৩ পরীক্ষার্থীর উত্তীর্ণ হয় ৭১ হাজার ৯৪০ জন ও গড় পাশের হার ছিল ৭০.৪৩ শতাংশ, ২০১৫ সালে ৮৮ হাজার ৯৮৮ জনের মধ্যে উত্তীর্ণ হয় ৬২ হাজার ৬৭১ জন পরীক্ষার্থী এবং পাশের হার ছিল ৭০.৪৩ শতাংশ।
২০০৯ সালে শতভাগ পাশকৃত কলেজের সংখ্যা ছিল ৪টি, ২০১০ সালে ৫টি, ২০১১ সালে ৬টি, ২০১২ সালে ১২টি, ২০১৩ সালে ৮টি, ২০১৪ সালে শতভাগ পাসকৃত কলেজের সংখ্যা ১৭টি এবং ২০১৫ সালে শতভাগ পাসকৃত কলেজের সংখ্যা ২২টি। আর ২০০৯ সালে শতভাগ অকৃতকার্য কলেজেল সংখ্যা ছিল ৮টি, ২০১০ সালে ৫টি, ২০১১ সালে ৭টি, ২০১২ সালে ৫টি, ২০১৩ সালে ৭টি, ২০১৪ সালে ৭টি, ২০১৫ সালে ২২টি এবং ২০১৬ সালে ১১টি।
অপর দিকে শূন্য ফলাফল কলেজের সংখ্যা ছিল ২০১০ সালে ৫টি, ২০১১ সালে ৭টি, ২০১২ সালে ৫টি, ২০১৩ সালে ৭টি, ২০১৪ সালে ৭টি, ২০১৫ সালে ৫টি এবং ২০১৬ সালে ৮টি। এবারে দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ১৮৪টি কেন্দ্রের মাধ্যমে ৮টি জেলার ৬০৯টি কলেজ পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে।
ফলাফল প্রকাশ করে দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. তোফাজ্জুর রহমান বলেন, বিগত বছরের তুলনায় এবার ফলাফল তুলনামূলকভাবে ভাল হয়েছে। আগামীতে আরো ভাল ফলাফল উপহার দিবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। ফলাফল ঘোষনা করার সময় দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, দিনাজপুরে শিক্ষাবোর্ড প্রতিষ্ঠার পর এটি এ বোর্ডের অধীনে অষ্টম বারের মত এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৮টি কলেজের কেউই পাশ করেনি
বৃহস্পতিবার দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত ২০১৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। ফলাফলে এই বোর্ডের অধীনে ৮টি কলেজ থেকে একজন শিক্ষার্থীও পাশ করতে পারেনি।
শূন্য ফলাফলপ্রাপ্ত কলেজগুলো হলো- রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার সাতডুগরা কলেজ, ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলার রামপুর কলেজ, নীলফামারী জেলা সদর উপজেলার নগর দারোয়ানী স্কুল এন্ড কলেজ, লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার দুহুলি এসসি হাই স্কুল এন্ড কলেজ, গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বুড়াবুড়ি আজিতুল্লাহ হাই স্কুল এন্ড কলেজ, নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার বগলাগাড়ী স্কুল এন্ড কলেজ, কুড়িগ্রাম জেলার ভুরঙ্গামারী উপজেলার দুলডাঙ্গা স্কুল এন্ড কলেজ এবং দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার উত্তর লক্ষীপুর হাই স্কুল এন্ড কলেজ। এসব কলেজের মধ্যে একজন থেকে সর্বোচ্চ ৬ জন শিক্ষার্থী ছিল। এদের কেউই পাশ করতে পারেনি।
শূন্য ফলাফল প্রাপ্ত এসব কলেজের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. তোফাজ্জুর রহমান।