নির্বাচন শেষ তবু চলছে নির্বাচনী সহিংসতা

আশরাফুল হক কাজল ঃ
নির্বাচন শেষ তবু সহিসংতা চলছেই। প্রতিদন্দ্বী প্রার্থীকে নানা দিক থেকে ঘাঁয়েল করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন অনেক চেয়ারম্যান ও মেম্বার পদে হেরে যাওয়া প্রার্থীরা । এমনই ঘটনা ঘটেছে ডোমার উপজেলার চিলাহাটিতে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, চতুর্থ দফা নির্বাচনে উপজেলার ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে মেম্বার পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন ৪ জন প্রার্থী। এরমধ্যে দুজন প্রার্থীর বাড়ী একই গ্রামে। নির্বাচনে দুজনেই হেরে গিয়ে সহিংসতায় লিপ্ত হয় তারা। একপ্রার্থী অপর প্রার্থীর যাতায়াতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এতে প্রার্থী মিলন পারভেজ বানিয়া অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনে প্রার্থীতা করেছি জন্য হাচানুল ইসলাম মেম্বার (প্রধান মেম্বার) আমার চলাচলের রাস্তা কেটে যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছে। আমারসহ আশপাশের কয়েকটি পরিবারের শিশুরা রাস্তা না থাকায় বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না। চিলাহাটি সানমুন কিন্ডার গার্টেন-র তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র ইমন বলেন,রাস্তা কেটে দেওয়ায় আমি ১০/১৫দিন থেকে বিদ্যালয়ে যেতে পারি নি। এতে আমার পড়ার খুবই অসুবিধা হচ্ছে। মিলন বানিয়ার পিতা আবু হানিফ অভিযোগ করে বলেন, এই রাস্তা দিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে মসজিদে যাই। কিন্তু পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ তো দুরের কথা রোজার তারাবিহ-র নামাজও পড়তে যাইতে পারছি না। এমন দূঃখ কার আছে বলুন? পূর্ব ভোগডাবুরী গিড়িয়ার ডাঙ্গা এলাকার ইসমাইল হোসেন বলেন, হাসিবুল মেম্বার ভোটোত হারি মোক অর টিবলের(টিউবওয়েল) পানি খাওয়া বন্ধ করি দিছে। অর মাটিত মোর পোয়ালের পুজ (খড়ের গাঁদা)আছে জইন্ন্যে ভাঙ্গি দিছে। কেন এরকম করেছে প্রধান মেম্বার জবাবে ইসমাইল বলেন, মুই নাকি অক ভোট দেও নাই। একই এলাকার আব্দুর রহমান বলেন, প্রধান মেম্বার গতবার মেম্বার ছিলেন। এবার ভোটে হেরেই এই সহিংসতা করছেন। ওর ছোট ছেলে দুলু পুলিশের সিপাহী হওয়ায় আইন কানুন কোন কিছুই মানছে না তারা। এদিকে অভিযুক্ত হাচানুল ইসলাম প্রধান ওরফে প্রধান মেম্বার ঘটনাটি অস্বীকার করে বলেন,এধরণের কোন ঘটনাই ঘটে নি। তবে আমার মেয়ে জামাইর জমির উপর দিয়ে একটা মোটা আল-রাস্তা ছিল। ওটা কেটে চিকন করে দিয়েছে। এতে মিলন বানিয়া বলেন, ৪০দিনের কর্মসূচিতে রাস্তাটির কাজও করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, রাস্তা না হলে কি সরকারি কাজ করার কোন নিয়ম আছে? তাছাড়া আমরা ঐরাস্তা দিয়ে আজ প্রায় ১৫/২০ বছর ধরে চলাচল করছি। প্রধান মেম্বারের বড় ছেলে রশিদুল ইসলাম এই প্রবিদেকের সাথে আক্রমণাত্বক আচড়ন করে বলেন, পূর্বে ওকে যাতায়াতের রাস্তা দিয়েছি। ওর এতো সাহস যে আমার বাবার প্রতিদন্দ্বী হয়ে নির্বাচন করে। তিনি আরও বলেন, আজ রাস্তা কেটেছি, কাল...ইত্যাদি ইত্যাদি। রশিদুল ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিককে দেখে বলেন, কত বড় সাংবাদিক আছে, আর কত বড় পত্রিকা আছে, কি লিখে লিখুক আমি দেখব। মিলন বানিয়ার ভাই সাবু বলেন, মেম্বারের ভয়ে আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। মিলন বানিয়া বলেন, আমি আমার ব্যবসার কাজে বাজার থেকে রাত ১২/১টায় বাসায় আসি। ওর বাসার সামনে দিয়ে আসতে হয়। প্রধান মেম্বার আমাকে যে কোন সময় আক্রমণ করতে পারে। আমি সংশয়ে পথ চলাচল করছি। উক্ত ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার রাজু এব্যাপারে বলেন,এটা প্রধান মেম্বার ঠিক করেনি। এটার আইনানুগ ব্যবস্থা হওয়া দরকার। ভোগডাবুরী ইউপি চেয়ারম্যান একরামুল হক বলেন, আমি মীমাংসা করে দিতে চেয়েছি। কিন্তু প্রধান মেম্বার এটি মানেনি। এলাকাবাসি জানায়, প্রধান মেম্বার এই এলাকাটাকে ক্রোক করার মতো করে রেখেছে। চতুর্থ দফা নির্বাচনে অর্থাৎ ৭মে নির্বাচনে হেরে পরের দিন থেকেই এই সহিংসতা এলাকায় চালাচ্ছে। তারা বলেন, প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তার বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে পারছে না। তারা অভিযোগ করে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে এমনকি আছে যে, টাকা খরচ করে, সহিংসতা করে নির্বাচনে জিততে হবে??
সরেজমিন তদন্ত করে দেখা যায়, যাতায়াতের প্রায় ৫’শ মিটার রাস্তা খনন করে একটি ৬ফিট চওড়া রাস্তা ১ফিট করেছে। এতে ঐ এলাকার আশপাশের কয়েকটি পরিবারের লোকজনসহ বিদ্যালয় পড়ূয়া শিশুরা যাতায়াত করতে পারছে না। এলাকাবাসি ও ভুক্তভোগী পরিবারগুলো এই সহিংসতা তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণে কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ জানিয়েছেন।       

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 390275328729089368

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item