৬২ জনের ভারতে এক রাত অতিবাহিত
https://www.obolokon24.com/2015/11/sit-mohol_20.html
বিশেষ প্রতিনিধি॥
বাংলাদেশের থেকে যাওয়া নিজ দেশের ভূখন্ডের মানুষদের জন্য তৈরি করা ভারতের মেখলিগঞ্জ থানার ভোটবাড়ি অস্থায়ী ক্যাম্পে প্রথম দলটির ৬২ জনের একটি রাত পার হলো ওই ক্যাম্পে। এভাবেই তাদের আগামী দুই বছর থাকতে হবে। এরপর স্থায়ীভাবে পাকা ঘর নির্মান করে দেবে ভারত সরকার।
প্রথম দলের যারা গেলে যে সবের পরিবার গুলোর মধ্যে দুই থেকে ৯ করে সদস্য রয়েছে। চারশত বর্গফুটের লম্বা একটি ঢেউ টিনের ঘর। ভেতরে দুটি থাকার রুম। সাথে নিয়ে যাওয়া সংসারের জিনিষপত্র। মাথা পিছু নারী পুরুষদের জন্য পৃথক ২০ জন করে একটি শৌচাগার।
শুক্রবার সকালে মুঠোফোনে কথা হয় ভারতের ছিটমহল বিনিময়ের সম্বন্ময় নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্তর সাথে, তিনি বলেন অস্থায়ী ক্যাম্পে কিছু সমস্যা রয়েছে। কুচবিহার প্রশাসনের কাছে বিষয়গুলি তুলে ধরব। তবে তিনি জানান যারা এসেছে এবং আসছে তাদের জন্য ভারত সরকার পুরো একমাস তৈরী খাবার সরবরাহ করবে। এরপর বিনামূল্যে রেশন দেয়া হবে। আর স্থায়ীভাবে পাকা বাড়ি নির্মান করে দেয়া হবে। ভারত সরকার এ জন্য অতিরিক্ত দুই বছর সময় নিয়েছে। কিন্তু স্থায়ী বসবাসের ঘর এক বছরের মধ্যে তৈরী করতে আমরা প্রশাসনকে বলেছি। পাশাপাশি স্থায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ নবেম্বর) দুপুর দুইটায় বুড়িমারী - চ্যারাবান্ধা অভিবাসন সীমান্ত পথ দিয়ে বাংলাদেশের মধ্যে থাকা গতামারি ও লতামারি সাবেক ছিটমহল থেকে প্রথম দফায় ৬২ জন বাসিন্দা স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য ভারত গমন করেন। এই দলে ২৯ দিনের শিশু কন্যা দশমীকে নিয়ে গেছের মা স্বপ্না বর্মন। এই শিশুটি সদ্য জন্ম নেয়ায় তাঁর নাম জনগণনায় ছিল না। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়, এ দিন ৬৭ জন ভারত যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ছয়জন যায়নি।
যে ৬২ জন গেছে এদের বরন করতে ভারত সরকার ঘটা করে খাওয়া দাওয়া, গান-বাজনা, নাচেরও ব্যবস্থা রেখেছিল। ফুল নিয়ে স্বাগত জানানোয় আন্তরিকতা কমতি ছিল না। ভারতীয় পুলিশ ও বিএএফের ব্যান্ড পার্টির সুরে মুখরিত হয়ে উঠেছিল চারদিক। তাদের সাথে ছিলে বাংলাদেশস্থ্য রাজশাহী ডিভিশনের ভারতীয় সহকারি হাইকমিশনার সন্দীপ মিত্র। সেখানে তাঁদের হাতে অস্থায়ী ভাবে বসবাসের কাগজপত্র দেওয়া হয়। সেখান থেকে তাদের একটি বাসে করে নিয়ে যায় মেখলিগঞ্জ থানার ভোটবাড়ি অস্থায়ী ক্যাম্পে। বিকাল সাড়ে ৪টায় এই ৬২ জন কে দুপুরের খাওয়া হিসাবে বিতরন করা হয় ভাত, ডিমের কারি, মুগ ডাল, আলু ফুলকপির সব্জি। রাতেও দেয়া হয় ভাত তরকারি। শুক্রবার সকালে ভাত সব্জী দেয়া হয়।
এদিকে দ্বিতীয় দলটির একটি অংশ ২২ নবেম্বর চিলাহাটি-হলদিবাড়ি অভিবাসন সীমান্ত পথ দিয়ে ভারত যাবে। এই দলে ১৫ পরিবারের ৫৫ জন সদস্য রয়েছে।
উল্লেখ যে” ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে স্থল সীমান্ত চুক্তির পর গত ৩১ জুলাই মধ্যরাত থেকে দুই দেশের ভিতরে থাকা ১৬২টি ছিটমহল বিলুপ্ত হয়। ভারতের ছিটমহল বাংলাদেশ ভূখন্ডে মিশে গিয়েছে, বাংলাদেশের ছিটমহল ভারত ভূখন্ডের সঙ্গে মিশে গিয়েছে। সে সময় বাংলাদেশে থাকা উক্ত তিন জেলার ২০টি ভারতীয় ছিটমহলের ২০১টি পরিবারের ৯৮৫জন সদস্য যৌথ সমীক্ষায় ভারতের নাগরিকত্ব বজায় রেখেছিল। তারাই স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য ভারত গমন করছে।