বাংলার ঐতিহ্য খেজুর গাছ বিলুপ্তির পথে

আবু ছাইদ,চিলাহাটী প্রতিনিধি ঃ
নীলফামারী জেলার ১০টি উপজেলায় খেজুর রস সংগ্রহকারীরা এখন বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন। আমাদের দেশের ঐতিহ্যের চিহ্ন এই খেজুর গাছকে জড়িয়ে গ্রামের জনপদে বর্তমানে দেখতে এ যেন আনন্দ মুখর পরিবেশ। শীতের দিন আসলে মনে হয় বাংলার গ্রামে গঞ্জে খেজুর রস ও নলেন গুড়ের সুগন্ধে কথা।মান্ধান্তার সময় থেকে দেখা যায় যে, শীতের আগমন শুরু হয় খেজুর গাছ কেটে রস আহরনে। খেজুর গাছের উপরে একটি অংশে চিরে বিশেষ ব্যবস্থায় ছোট মাটির কলস বাঁধা হয়। একটু একটু করে রসে পূর্ণ হয় সেই মাটির কলস। শীত মৌসুমের শুরুতেই তাই খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহে গাছ তোলা কাটা সহ বিভিন্ন রকমের পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে গেছে রস সংগ্রহকারীরা । ছোট বড় বিভিন্ন রকমের খেজুর গাছে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়েই গাছে  চড়া, কাটা করতে হয় তাদের। কোমরে মোটা রশি বেঁধে গাছে ঝুলে ঝুলে এ কাজ করতে হয়। পেশাদার রস সংগ্রহকারীরা বলেন তেমন কোনো সমস্যা হয় না । আশ্বিনের শুরুতে গাছ তোলা ও পরিচর্যা করার সঠিক সময় । তবে এবার বর্ষার ভাগ বেশী থাকায় খেজুর গাছ তোলা, কাটা দেরিতে শুরু হয়েছে বলে জানালেন রস সংগ্রহকারীরা। খেজুর গাছের চাহিদাটা ইট ভাটায় বেশী হওয়ায় গাছগুলো কেটে ফেলা হচ্ছে দেধারছে। গাছ গুলো বিক্রি করে দিচ্ছে গাছ মালিকরা। তাই বর্তমানে খেজুর গাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। সেই পুরোনো দিনের মত আর মাঠ ও রাস্তা জুড়ে আর দেখা যায় না এই খেজুর গাছ। তার পরও গ্রামের মাঠ আর গ্রামের মেঠো পথে কিছু গাছ দাঁড়িয়ে আছে কালের সাী হয়ে। জীবনের শেষ পর্যায়ে এসেও এমন ব্যক্তি খেজুর গাছ লাগান। তারা বলেন আমাদের গ্রাম বাংলায় অতীতে খেজুর রসের যে নাম ডাক ছিল তা দিনে দিনে কমে যাচ্ছে। খেজুরের রস শীতের সকালে বসে মুড়ি মিশিয়ে, গ্লাসে ভরে খেতে খুবই মজাদার । আমাদের এই বাংলার সংস্কৃতির একটি অংশ খেজুর গুড়। কয়েকদিন পরে প্রতিটি ঘরে ঘরে খেজুরের রস দিয়ে পিঠা, পুলি, পায়েস তৈরীর ধুম পড়বে। আটা বানা মেশিনে ভিড় জমবে। এসব আশা নিয়ে শীত মৌসুমে গাছ কাটার কাজে রস সংগ্রহকারীরা বেশ ব্যবস্ততা সময় পার হয়। উত্তরাঞ্চল সহ নীলফামারী জেলার কয়েকটি উপজেলায় শত শত রস সংগ্রহকারীরা সারা বছরের রুজি রুটির নির্ভর করে এ পেশার উপর । নীলফমারী জেলার উপজেলা গুলোর গ্রামের রস সংগ্রহকারীরা বলে শীত আসার মাত্রই আমরা খেজুর গাছ ছিলানোর জন্য সকাল থেকে সন্ধা অবধি লেগেই আছি। দীর্ঘ ৫ মাস খেজুর গাছ গুড় বনিয়ে আবার শুধু রস বিক্রি করে বেশ আর্থিক স্বচ্ছলতা আসে আমাদের। তাদের মুখে ফুটে ওঠে রসালো মিষ্টি হাসি। নিজেদের প্রয়োজনীয় খাবারের চাহিদা মিটিয়ে বাকিটা বিক্রি করে যে অর্থ পাওয়া যায় তা দিয়ে চলে পুরো বছর। এখনও পুরো শীত না আসলেও রস সংগ্রহকারীরা গাছ কাটার জন্য গ্রামের  বাটাল ,দা, টুঙি  দড়ি ও মাটির কলস কেনার কাজ সেরে নিচ্ছে। রস সংগ্রহকারীরা বলেন আগের মত খেজুর গাছ আর নাই। প্রতিদিন ইট ভাটা সহ জ্বালানী কাজে নিধন করে বিক্রি করে ফেলছে গাছ মালিকগন। ফলে উত্তরাঞ্চলের গ্রামীন অর্থনিতীতে এর অভাব পড়ছে। এর পরও গাছিরা তাদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কেবল গুড় সুস্বাদু খাবার ও শুধু রস তৃপ্তির সুমিষ্ট রসের জন্যই নয় আমাদের ভার সাম্য রায় খেজুর গাছ বাঁচিয়ে রাখতে হবে। গ্রাম বাংলার এতিহ্য দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলেল খেজুর গাছ ও গুড় আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। শীতের সকালে খেজুরের তাজা রস যে কতটা তৃপ্তিদায়ক তা বলা শেষ করা যাবে না। আর খেজুর রসের পিঠা এবং পায়েসতো খুবই মজাদার একারনে শীত মৌসুমে শুরুতেই গ্রামাঞ্চলের রসের রি পায়েস ও পিঠা খাওয়া ধুম পড়ে যায়। প্রতিদিনই কোন না কোন বাড়ীতে খেজুর রসের তৈরী খাদ্যের আয়োজন চলে। সব মিলে খেজুর রসের এ যেন এক অন্য রকম আমেজ।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 48333207801786669

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item