পিতার আতংঙ্কে বাড়ি ছেড়েছে দুই শিশু!

আবু ফাত্তাহ্ কামাল পাখি,স্টাফ রিপোর্টারঃ

জন্মদাতা পিতার নির্যাতনের আতংঙ্কে  বাড়ি ছেড়েছে আট বছরের  আখিমনি ও পাঁচ বছরের  রিভামনি নামের দুই বোন। পিতার  কথা শুনলেই এই দুই বোন ভয়ানক ভাবে আঁতকে উঠে। তিন দিন ধরে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা হাসপাতালে আশ্রয় নেয়া এই দুই শিশু কে শনিবার রাতে পুলিশ উদ্ধার করে। শিশু দুই বোন ডিমলা উপজেলা সদর ইউনিয়নের উত্তর তিতপাড়া গ্রামের গরুর দালাল আনোয়ার হোসেন মেয়ে।
আঁখি ও রিভা  দুই বোন অভিযোগে জানা যায়,গত বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে বাড়িতে তাদের পিতা দুই শত টাকা খুঁজে পাচ্ছিলনা। এই টাকার চুরির করেছে এমন ধারনায়  শারিরিক নির্যাতন চালায় পিতা। প্রতিবাদে তাদের মা রাশেদা বেগম এগিয়ে এলে তাকেও পিটাতে থাকে তাদের পিতা। হারিয়ে যাওয়া টাকা ঘরের ভেতর পড়ে থাকা অবস্থায় ফিরে পাওয়া গেলেও  তাদের পিতা  ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাড়া করলে প্রচন্ড ভয়ে ও আতংঙ্কে এই দুই বোন বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। সেদিন সন্ধ্যার পর থেকে এই শিশু দুইজন আশ্রয় নেয় ডিমলা উপজেলা হাসপাতালে।সেখানে তারা তাদের নাম বললতে পারলেও  বাড়ির ঠিকানা বলতে পারেনি। ফলে  হাসপাতালের মহিলা ওয়াডে রাত্রী যাপন করতো এবং হাসপাতাল থেকে দেয়া খাবার খেতো। কিন্তু শিশু দুইটির কেউ খোঁজ করেনি। শনিবার সন্ধ্যায় বিষয়টি হাসপাতাল থেকেই  প্রচার পায়। সেখানে সাংবাদিকরা ছুটে গেলে শিশু দুটি ঘটনার কথা জানিয়ে পিতার বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে কান্নাকাটি করতে থাকে। এ সময় তাদের শরীরে নির্যাতনের চিহৃ দেখতে পাওয়া যায়।
মহিলা ওয়াডের রোগী কহিনুর বেগম বলেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে বাচ্চা মেয়ে দুইটি হাসপাতালে আসে। খিদায় বাচ্চা দুটি কান্না কাটি করায় তিনি সেদিন রাতে তাদের খাওয়া ব্যবস্থা করে দেয়। মহিলা ওয়াডের সেবিকা হাসিনা আক্তার জানান বাড়ি ঘরের ঠিকানা বলতে না পারায় তারা হাসপাতালের মহিলা ওয়াডেই থাকতো। পাশাপাশি তাদের শরীরের আঘাতের কারনে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
এদিকে খবর পেয়ে ডিমলা থানা পুলিশ শনিবার রাত ১০টার দিকে এই  দুইবোনকে হাসপাতাল থেকে থানায় নিয়ে আসে। এরপর বেরিয়ে আসে শিশুটির বাড়ির ঠিকানা ও পরিচয়। পুলিশের পক্ষে খবর দেয়া হলে রাতেই  ইউপি সদস্য আবুল হোসেন সহ এই দুই শিশুর পিতা ও মাতা থানায় হাজির হয়।
এদিকে পুলিশের কাছে ক্ষমা  চেয়ে মেয়ে দুটিকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারেননি গরুর দালাল পিতা আনোয়ার হোসেন । পথে  মেয়ে দুটি পিতাকে দেখে পুনরায় ভয়ে কান্নাকাটি করতে থাকে। ফলে এখন তাদের রাখা হয়েছে একই ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের সম্পর্কে খালু ফরিদুল আলমের বাড়িতে।
রবিবার সকালে সাংবাদিকরা ওই গ্রামে গেলে বাড়িতে পাওয়া যায়নি শিশু দুইটির পিতাকে। তাদের মা রাশেদা খাতুন বলেন বাচ্চা দুইটা তাদের খালুর বাড়িতে আছে। তারা তাদের বাপকে বাঘের মতো ভয় করায় তাদের বাড়িতে নিয়ে আসা যাচ্ছেনা।
এলাকাবাসী জানায় গরুর দালাল আনোয়ার হোসেন খুব বদরাগী। সে জন্য গ্রামের মানুষজন তার সাথে কেই কথা বলতে চায়না। নাই কথাতে সে বিবাদ সৃষ্টি করে।
ডিমলা থানার ওসি রুহুল আমিন খান জানান মুছলেকা নিয়ে শিশু দুইটিকে তাদের পিতার হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। এরপর যদি কোন ঘটনা ঘটে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 132677280506457134

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item