যথেষ্ট!! আর নয়!!নারী নির্যাতন বন্ধ হোক এক্ষুনি!

আশরাফুল হক কাজল- যদিও নারী নির্যাতনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে দীর্ঘদিনব্যাপী শক্তিশালী নারীবাদী আন্দোলন গড়ে উঠেছে, তথাপি জাতিসংঘের হিউম্যান ডেভেলপমেন্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে বাংলাদেশে ধর্ষণের হার সবচেয়ে বেশি। এখানে প্রতি হাজারে ধর্ষিত হয় একজন নারী। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ পুলিশের তথ্যানুযায়ী, ২০০১ থেকে ২০১২ এর জুন পর্যন্ত সর্বমোট ১,৭৪,৬৯১ জন নারী সহিংসতার শিকার হয়েছে, যার মধ্যে এসিড নিক্ষেপ, অপহরণ, ধর্ষণ, ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা, পাচার, খুন, যৌতুকের জন্য নির্যাতন অন্যতম।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১২ সালে ৭৭১ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। গণধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়েছে ২৩৬ জন নারী। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১০৬ জনকে আর ধর্ষণের অপমান মাথায় নিয়ে আত্মহত্যা করেছে ২৩০ জন। এ বছরের শুরু থেকে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। জানুয়ারি মাসের প্রথম থেকেই আমরা লক্ষ্য করছি, নারী ও কন্যা শিশুর উপর ধর্ষণ ও গণধর্ষণের মত পাশবিক নির্যাতন উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সম্প্রতি টাঙ্গাইলের স্কুল ছাত্রী গণধর্ষণ, সাভারে কলেজ ছাত্রী গণধর্ষণ, ফরিদপুরে কিশোরী ধর্ষণ, মিরপুরে ১০ বছরের শিশুকে ধর্ষণ, ইডেন কলেজ ছাত্রীকে এসিড নিক্ষেপ, মানিকগঞ্জে বাসে পোশাক শ্রমিককে ধর্ষণ এবং গাজীপুরে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নারীকে পিটিয়ে হত্যাসহ অনেকগুলো ন্যাক্কারজনক ঘটনা জাতিরবিবেককে ক্ষতবিক্ষত করেছে। উল্লেখ্য যে, গত ১৪ জানুয়ারী ২০১৩ তারিখে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় একদিনে ৭টি ধর্ষণের খবর প্রচারিত হয়। যেহেতু বাংলাদেশের বেশীরভাগ নারী নির্যাতনের ঘটনা নথিভুক্ত হয়না, সেহেতু প্রকৃত সংখ্যাটি আরও বেশী বলে মনে করা হয়।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী সারা পৃথিবীর প্রতি ৩ জন নারীর মধ্যে ১ জন নারী তার জীবনকালে ধর্ষণ বা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকে। বাংলাদেশে প্রতিদিন প্রায় ৪০ জন নারী কোন না কোনভাবে সহিংসতার শিকার হচ্ছে। (বাংলাদেশ পুলিশের প্রধান কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী)

নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে উদ্যমে উত্তরণে শতকোটি একটি সম্মিলিত প্রয়াস। নারী ও মেয়েশিশু নির্যাতন বন্ধে বিশ্ব প্রচারণার সাথে সংহতি জানাতে দক্ষিণ এশিয়াসহ আরও ১৯৬টি দেশ উদ্যমে উত্তরণে শতকোটি-র সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে এবং নারীবাদী আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করতে বাংলাদেশের নারী ও পুরুষের প্রতিনিধিত্বে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানসমূহ এগিয়ে এসেছে। এই উদ্যোগকে আরও জোরদার করার জন্য আমাদের আঘাত হানতে হবে নির্যাতনের মূলে, সচেতন হতে হবে সবাইকে। সমাজের পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের বিরুদ্ধে আলোড়ন তুলতে হবে। রুখে উঠতে হবে সহিংসতার বিরুদ্ধে, বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং সবরকম শক্তির বিরুদ্ধে যা নারীর মানবাধিকার অস্বীকার করে।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে আজ, ১০ই ফেব্রুয়ারী ২০১৫, পৃথিবীব্যাপী একশো কোটি নারী এবং যারা তাদেরকে ভালবাসে, তারা আজ বাইরে বেড়িয়ে, নেচে, গেয়ে, এই সহিংসতা বন্ধের দাবি জানাচ্ছে। দেশে দেশে সভা সমাবেশ, র‌্যালী ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে উদ্যমে উত্তরণে শতকোটি-র সম্মিলিত শক্তি, সামর্থ ও সংখ্যা প্রকাশের মধ্য দিয়ে এই সংহতি বিশ্বকে নাড়া দিবে।

উদ্যমে উত্তরণে শতকোটি একটি প্রতিশ্রুতি যে আমরা উঠে দাঁড়াবো পৃথিবীর লক্ষ লক্ষ নারী ও পুরুষের সাথে আওয়াজ তুলবো : আর মেনে নিব না  এই নারী নির্যাতন !

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item