ঝুকিঁতে নৌ রুটের যাত্রীরা
https://www.obolokon24.com/2014/12/blog-post_162.html
আরিফ আহমেদ-বরিশাল প্রতিনিধি। সড়ক পথের মত এবার বরিশাল -ঢাকা
নৌ রুটেও দূর্ঘটনার মাত্রা বেড়ে গেছে। গত কয়েক দিনে ঘটে যাওয়া
ছোট খাট দূর্ঘটনা থেকে শঙ্কিত হয়ে পরেছে এ রুটে চলাচল করা যাত্রীরা। তবে ভাগ্য সহায় থাকায় অল্পের জন্য হতাহত কিংবা বড় দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে কয়েক হাজার
যাত্রী। অন্যদিকে, হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও এসব দূর্ঘটনায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে লঞ্চ মালিকরা।
ক্ষতিপুরন চেয়ে কয়েকজন আবার আদালতেরও দারস্থ হয়েছেন। নৌ-পথের একাধিক যাত্রী জানিয়েছে,
সড়ক পথের চেয়ে কিছুটা নিরাপদ মনে করে তারা নৌ-পথে যাতায়াত করে আসছিলো। তবে এখন আর তারা
নৌ-পথকে ততটা নিরাপদও মনে করছেন না। যাত্রীরা আরো জানান,
শুধু ঘন কুয়াশাই দূর্ঘটনার একমাত্র কারন না। অন্য লঞ্চের সঙ্গে আগে যাওয়া নিয়ে প্রতিযোগিতায়ও এর অন্যতম কারন। ধারন ক্ষমতার কয়েকগুন বেশী যাত্রী বহন এর একটি কারন। এছাড়া লঞ্চগুলো বাইরে থেকে ফিটফাট দেখা গেলেও কতটা নকশা অনুযায়ী বানানো ও ইঞ্জিন পুরোপুরি ত্র“টি মুক্ত কিনা তাও খতিয়ে দেখা দরকার বলে জানিয়েছে যাত্রীরা। বরিশাল -ঢাকা
নৌ রুটে চলাচলকারী লঞ্চের এক মাষ্টার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, যাত্রীরা সময়মত গন্তব্যে পৌছতে পারে সে জন্য মাঝে মধ্যে বেশী গতিতে লঞ্চ চালানো হয়।এছাড়া নদী পথে বয়া, বাতি, বিকন পর্যাপ্ত পরিমান না থাকায় মাঝে মাঝে দিক নিয়ে বিভ্রান্তে পরতে হয়। আবার সেগুলো কয়েক জায়গায় সঠিক মত কাজও করে না। এত কিছুর পর ডুবোচরের সমস্যা তো রয়েই গেছে বলে জানান লঞ্চের ওই মাষ্টার। এব্যাপারে বরিশাল নদী বন্দরের নৌ নিরাপত্তা ও
ট্রাফিক বিভাগের উপ পরিচালক আবুল বাশার মজুমদার জানান, বয়া, বাতি,
বিকনের স্বল্পতা থাকতে পারে। তবে সতর্কভাবে চালালে এগুলো খুব বড় ধরনের সমস্যা না। তবে দূর্ঘটনা রোধ করতে তাদের (মাষ্টারদের) আগে যাওয়ার প্রতিযোগীতার প্রবনতা রোধ করতে হবে।নদী বন্দর সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দিবাগত মাঝ রাতে চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে ঢাকা গামী বিআইডবিউটিসির যাত্রীবাহি স্টিমার এমভি বাঙালীর ধাক্কায় বরিশালগামী যাত্রীবাহি লঞ্চ এমভি টিপু-৭ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ছ। দুমরে মুচরে গেছে লঞ্চের মাঝ বরাবর ফ্যান্টার। এতে আহত হয়েছেন লঞ্চের মাষ্টার। অল্পের জন্য বড় দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে প্রায় ২ হাজার যাত্রী । মেঘনা নদীর চাঁদপুরের কাছে এ ঘটনা ঘটে । এর আগে গত শুক্রবার ভোরে বরিশাল নৌবন্দরে কীর্তনখোলা নদীতে ঢাকা-বরিশাল নৌ রুটের যাত্রীবাহি লঞ্চ এমভি সুন্দরবন-৭ লঞ্চকে ধাক্কা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে বিআইডবিউটিসির জাহাজ এমভি বাঙ্গালী। এতে সুন্দরবন লঞ্চের পিছনের অংশ ভেঙ্গে যায়। এ ঘটনায় কোন হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও স্ব-জোরে ধাক্কা লাগায় উভয় নৌযানের প্রায় ৩ হাজার যাত্রীর মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পরে। অন্যদিকে , বরিশাল থেকে শুক্রবার রাত পৌঁনে ৯টায় প্রায় দেড় হাজার যাত্রী নিয়ে ঢাকা যাওয়ার পথে রাত সাড়ে ৯টার দিকে এমভি দ্বিপরাজ লঞ্চটি নগরীর অদুরে চরআবদানী এলাকায় চরে ধান ক্ষেতে উঠিয়ে দেয়। এতে প্রচন্ড ঝাকুনীর সৃস্টি হলে লঞ্চে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। তবে এতে বড় ধরনের কোন হতাহত হয়নি। এতে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হয় লঞ্চ মালিক। দীপরাজ লঞ্চের বরিশাল অফিসের ব্যবস্থাপক নিয়াজ মোর্শেদ এ বিষয়ে জানান, লঞ্চের মাস্টার মো. আক্তারুজ্জামানের অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। মাস্টার প্রায়ই অন্য লঞ্চের সঙ্গে আগে যাওয়া নিয়ে প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠে। এ নিয়ে ঘটনারদিন শুক্রবার সকালে তাকে বকাঝকা করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মাস্টার ইচ্ছে করেই লঞ্চটি তীরে উঠিয়ে দিয়েছেন। এছাড়া, ঘণ কুয়াশার কারনে গত ১৮ ডিসেম্বর ঢাকা-বরিশাল রুটের যাত্রীবাহি লঞ্চ পারাবত-৯ দশঘন্টা ডুবে চড়ে আটকে ছিল। লঞ্চটি প্রায় দেড় হাজার যাত্রীনিয়ে ঢাকা থেকে বরিশালে আসার পথে হিজলা উপজেলা সংলগ্ন মেঘনা নদীর মিয়ারচরে ডুবোচরে আটকা পড়ে। পরদিন বেলা ১টায় লঞ্চটি চরমুক্ত হয়ে বিকাল পৌনে ৪টায় বরিশালে পৌছে। এদিকে প্রায় ১০ ঘন্টা আটকা থাকায় লঞ্চ যাত্রীদের সিমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।