গরীবের ঘরে অদম্য মেধাবী লাবণ্য আইনজীবী হতে চায়
https://www.obolokon24.com/2017/05/labonno.html
ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, নীলফামারী ৭ মে॥
নামের অর্থের মতোই দরিদ্র ঘরের অদম্য মেধাবী লাবণ্য। নামের আবেগময় শব্দে মুক্তোর ভেতর মোহময় সুন্দরের অবিষ্ট হৃদয়ে এই মেধাবী মেয়েটি গরীব ঘরের সন্তান হয়ে সে আইনজীবী হতে চেয়েছে। সে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখছেনা,স্বপ্ন দেখছে জেগে। কিন্তু তার এই স্বপ্ন পুরন তার গরীব বাবা মার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই লাবণ্য কোন লাজ লজ্জা না রেখে অকপটে বললেন আমাদের দেশে অনেক স্ব-হৃদয়বান ব্যাক্তি আছেন তারা কি একজন আমার শিক্ষা জীবনের দায়িত্ব নিতে পারেন না? এমন কেউ এগিয়ে এলে হয়তো আমি আমার বাস্তবতার জেগে থাকা স্বপ্নটি পূরন করতে পারতাম। লাবণ্যের পুরো নাম লিমানা খন্দকার। সে এবার এসএসসি পরীক্ষায় দিনাজপুরের বোর্ডে নীলফামারী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে মানবিক বিভাগ হতে। তার রোল নম্বর ৬০০২৪৪।
নীলফামারী শহরের পুরাতন বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় গিয়ে দেখা যায় টিনের ছাপড়ার ঘরে বসবাস একটি বেসরকারি কোম্পানীর ভ্যানগাড়ীতে করে পণ্য সরবরাহকারী কর্মচারী লোটন খন্দকার ও স্ত্রী মঞ্জুয়ারা বেগমের সংসার। একটি টিনের ভাঙ্গা ঘরেই পরিবারের ৪ সদস্যের বসবাস। যেখানে মাথা গোঁজার ঠাঁই মেলাই ভার, সেখানে আবার লেখাপড়াতো আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ারই মতো।তবুও অদম্য মেধা ও ইচ্ছা শক্তিকে পুঁজি করে দারিদ্রতার কড়াল গ্রাসে নিজেকে ভাসিয়ে না দিয়ে অন্যের কাছ থেকে বই সংগ্রহ আর বাড়িতে বসে ছোট ছোট শিশুদের কাপড় জামা সেলাই করে খরচ জুগিয়ে লেখাপড়া চালিয়েছে লাবণ্য। ছোট বোন লুবনা এবার চতুর্থ শ্রেনীতে পড়ছে। সেও মেধাবী। এই দুই বোন যেন গরীবের ঘরে পূর্নিমার চাঁদ হয়ে দেখা দিয়েছে।
বড় হয়ে লাবণ্য হতে চায় একজন আইনজীবী। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে ব্যারিষ্টার পর্যন্ত এগুতে চায়। গরীব অসহায় রোগীদের দিতে চায় আইনী সেবা। দাঁড়াতে চায় নিজের পায়ে। ছোট্ট টিনের ছাপড়া ঘরে পরিবারের ৪ সদস্যের বসবাস হওয়ায় লেখাপড়া করার মতো পর্যাপ্ত জায়গাটুকু মেলেনা । তবুও নিজের অদম্য ইচ্ছা আর বাবা মায়ের ভালোবাসায় লেখাপড়াটা চালিয়ে যাচ্ছে সে। কিন্তু আগামী দিনে পড়ালেখার খরচ বহনের ব্যাপারে শংকিত হয়ে পড়েছে পরিবার।
প্রতিবেশীরা জানায়, ছোটবেলা থেকেই লাবণ্য অতি মেধাবী। পিএসসি পরীক্ষাও সে জিপিএ-৫ অর্জন করেছিলো। সকলের দোয়া ও সহযোগিতা পেলে একদিন নিশ্চয়ই তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে। ঘুচাতে পারবে দারিদ্রতা। মুছিয়ে দিতে পারবে বাবা-মায়ের চোখের পানি।
লাবণ্য জানায় কম বেতনে বাবার কাজটিও কষ্টের। মার সঙ্গে ঘরে বসে সেলাইয়ের কাজ করি। তিন বেলা খাবার জুটলেও লিখাপড়ার খরচ বাবা-মায়ের পক্ষে কঠিন ব্যাপার।
লাবণ্যের বাবা ও মা জানান, তাদের মেয়ের এই সাফল্য দেখে এলাকাবাসী ও মেয়ের শিক্ষকেরা অনেক খুশি হয়েছে। সবার দোয়া থাকলে মেয়েটি আমার লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারবে। স্কুলে শিক্ষকরা যা শিক্ষা দিয়েছে তাই দিয়ে মেয়েটি ভাল ফলাফল করেছে। তাকে প্রাইভেট দিতে পারিনি। যদি কোন স্ব-হৃদয় ব্যাক্তি আমার মেয়ের লেখাপড়ার ব্যাপারে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন তাহলে মেয়েটি তার স্বপ্ন পূরনে অনেক দূর এগিয়ে যাবে। লাবণ্যের শিক্ষা জীবনে কেউ যদি সহযোগীতার হাত বাড়াতে চান তাহলে সরাসরি কথা বলতে পারেন ০১৭২-৪২১৬৪৬৪।